প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২, ৩:১০ পিএম |

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। এর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে মহাসমাবেশ করার যে ধারাবাহিক কর্মসূচি, সেই কর্মসূচি শেষ হতে যাচ্ছে। এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর ঢাকার মহাসমাবেশে বিএনপি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন। একাধিক বিএনপি নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে যে, ১০ ডিসেম্বর নিয়ে নানারকম মতপার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু ১০ ডিসেম্বর কোনো রকম বড় ধরনের ঘটনা ঘটবে না। তারা স্রেফ একটি মহাসমাবেশ করবে এবং সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়ে তারা কিছু দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করবেন এবং এই দাবি-দাওয়ার ভিত্তিতে তারা দ্বিতীয় ধাপের আন্দোলন শুরু করবে। ১০ ডিসেম্বরে একদফা আন্দোলনের কথা বলা হলেও আসলে একদফা নয়, বরং বিএনপি'র পক্ষ থেকে পাঁচ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। লন্ডন থেকে এরকম বার্তাই এসেছে বলে বিএনপির একাধিক নেতা বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন। তবে পাঁচ দফা কর্মসূচিতে কি কি বিষয় গুলো থাকবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। তবে বিএনপির বিভিন্ন নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে পাঁচ দফা আন্দোলনের একটি খসড়া রূপরেখা উপস্থাপন করেছেন। বিএনপির পাঁচ দফা দাবির মধ্যে থাকবে-
১. অনতিবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানার ঘোষণা দিতে হবে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। যদি উদ্যোগ নিতে সরকার অস্বীকৃতি জানায় তাহলে জাতীয় সংসদ থেকে বিএনপির দলীয় সকল সংসদ সদস্য পদত্যাগ করবেন।
২. নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের পর নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
৩. বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে এবং মিথ্যা মামলা, হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এখানে শুধু বিএনপি থাকবে নাকি সকল বিরোধী দল থাকবে তা নিয়ে আরও আলাপ-আলোচনা হবে বলে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে।
৪. বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে সে সমস্ত মামলা হয়েছে সে সমস্ত মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। একই সাথে এই দফায় তারেক জিয়ার বিরুদ্ধেও তাদের ভাষায় হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং তারেককে বিনা বাধায় দেশে আসার অনুমতি দিতে হবে।
৫. দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি হ্রাস করতে হবে, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে হবে।
তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, এই পাঁচ দফার সঙ্গে আরও কিছু দফা যুক্ত করতে হবে এবং যুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করা এবং তাদেরকে চিহ্নিত করা, সকল ধর্মের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করাসহ বেশকিছু দাবিদাওয়া। এগুলো এখন তাদের দাবি-দাওয়ার মধ্যে থাকবে কি থাকবে না, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আরও পরে। বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের মূল দাবী হলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সংক্রান্ত ঘোষণা। এই ঘোষণা দেয়ার পর তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনাও যেতে পারে এবং কিভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে, কিভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে ইত্যাদি নিয়ে তারা রাজনৈতিক সংলাপে যেতে পারে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং এ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনীর আগে সরকারের সাথে নতুন কোনো আলোচনায় বিএনপি যাবে না বলেই ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।