
যশোরে আট দিনব্যাপী বই মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ফিতা কেটে এবং বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে এ মেলার উদ্বোধন করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আনোয়ার হোসেন। টাউনহল মাঠে অনুষ্ঠিত মেলায় ৬২ টি স্টলে হরেক রকম বই কেনার সুযোগ পাচ্ছেন বইপ্রেমীরা।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় যবিপ্রবির উপাচার্য বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হলেই আলোকিত মানুষ হওয়া যায় না,তার জন্য দরকার মানবিক মূল্যবোধ, যা বই পড়ে অর্জন করতে হয়। এ কারণে বই পড়ার বিকল্প নেই বলে জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোখলেছুর রহমান আকন্দ, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর যশোরের বিএলএফ উপপ্রধান অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটু, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতিরি পরিচালক আবুল বাশার ফিরোজ ও জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযম।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার, স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হুসাইন শওকত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতা, পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহযোগিতায় এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজনে খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাস্তবায়নে রয়েছে জেলা প্রশাসন ও যশোর ইনস্টিটিউট। আগামী ১৩ ডিসেম্বর শেষ হবে যশোরের এই বই মেলা। এদিকে, কয়েক বছর পর যশোরে বৃহৎ পরিসরে বই মেলার আয়োজন করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও সচেতন মহল।
দাউদ পাবলিক কলেজের ছাত্র নাফিস জুনাইদকে নিয়ে তার মা শামসুন্নাহার পান্না আসেন বই মেলায়। বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করে বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের একটি বই কেনেন। শামসুন্নাহার পান্না বলেন, করোনার পর এমন আয়োজন করায় তারা বেশ খুশি। প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী যশোরে বইমেলা হোক, এটা তাদের চাওয়া।
রাকিবুল হোসেন, অভি পাল ও মেহেদী হাসান আকাশ নামের তিন বন্ধু স্টলগুলো ঘুরে বিজ্ঞানের বই কেনেন। এ তিন শিক্ষার্থী বলেন, মেলায় ভালো মানের বই পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম দিন তারা ঘুরতে এসেছেন। আগামীতে আরও বন্ধুদের নিয়ে আসবেন। যশোরে এতো বড় বইমেলা তারা আগে দেখেননি বলে জানান। প্রতিবছর আয়োজন হোক বই মেলার, এমনটাই দাবি শিক্ষার্থীদের। আয়োজকরা জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে। বিকেল থেকে সংগীত, নৃত্যসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মেলা থেকে সর্বনি¤œ ৩০০ টাকার বই কিনলে ক্রেতারা একটি কুপন পাবেন। কুপন ড্রয়ের মাধ্যমে সমাপনী দিনে আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।