প্রকাশ: শনিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:২১ পিএম |

বিশ্ব অর্থনীতির জন্য তিন দশকের মধ্যে অন্যতম খারাপ বছর হতে চলেছে ২০২৩ সাল। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের পূর্বাভাসে এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে যে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাবেই এমন দশা হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, সংকটময় সময়েও চীনের অর্থনীতির আকার বাড়তে পারে পাঁচ শতাংশের বেশি। ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ- আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ আগেই দিয়েছে এমন পূর্বাভাস। এটি ২০২২ সালের অনুমিত ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কম তো বটেই, এমনকি ২০০৯ ও ২০২০ সালের সংকটময় সময় বাদ দিলে ১৯৯৩ সালের পর থেকে সর্বনি¤œ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে এবং ২০২৩ সালের শুরুতে ইউরো অঞ্চলে মন্দাভাব শুরু হতে পারে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মুদ্রানীতির ক্ষেত্রেও দেশে দেশে পার্থক্য দেখা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার ওপরে থাকলে, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক পাঁচ শতাংশ সুদের হারের দিকে যাচ্ছে এবং ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত এটি চলবে। ইউরো অঞ্চলে মূল্যস্ফীতির আরও দ্রুত পতনের অর্থ হবে নি¤œ সুদ হার এবং ২০২৩ সালের শেষের দিকে কমত পারে এই সুদের হার। এর বিপরীতে, নতুন বছরে চীনের অর্থনীতির আকার বাড়তে পারে পাঁচ শতাংশের বেশি। শিগগির জিরো কোভিড নীতি প্রত্যাহার এবং সংকটাপন্ন সম্পত্তি বাজারে বাড়তি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ২০২৩ সালেও চীনা অর্থনীতি শক্তিশালী থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা ও মুদ্রার দুর্বলতা নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকা চীনে ‘সীমিত’ সুদহার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। চীনা শেয়ারবাজার এখন নিয়মিতই দিনে পাঁচ শতাংশের বেশি ওঠানামা করছে। অফশোর ইউয়ানে অস্থিরতা রেকর্ড গড়ার পথে এবং খেলাপির বিরুদ্ধে চীন সরকারের ঋণ বীমা খরচ বহু বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
গত বছরের জানুয়ারিতে চীনের সিকিউরিটিজ নিয়ন্ত্রকরা বাজারের অস্থিরতা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে সময় অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০২২ সাল হবে সবচেয়ে অশান্ত। বছরের শেষাংশে সেই প্রবণতা বেড়েছে এবং ২০২৩ সালে আরও অস্থিরতার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। অর্থনৈতিক এই অস্থিরতার বছরে বাংলাদেশ কেমন চলবে তা নির্ধারণে নীতিনির্ধারক মহলের এখনই পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিৎ।