
রাজবাড়ীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুকুর আলী শেখ ওরফে চৈতে (৪০) নামে এক কৃষককে রড ও হাতুরী পেটার অভিযোগ উঠেছে। তিনি সদর উপজেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের সৈয়দ আলী শেখের ছেলে। এ ঘটনায় ৭জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন শুকুর আলী শেখের স্ত্রী খুর্শিদা বেগম।
মামলার আসামীরা হলো, রাজবাড়ী সদর উপজেলার রুপপুর গ্রামের জলিল মোল্লার ছেলে দবির মোল্লা, কবির মোল্লা, জয়পুর গ্রামের আজাদ খানের ছেলে আসিফ খান, রুপপুর গ্রামের মৃত জবেদ আলী শেখের স্ত্রী রোকেয়া বেগম, কবির মোল্লার স্ত্রী মাফিয়া বেগম, রামপুর গ্রামের আজাদ খানের স্ত্রী ছবি বেগম ওরফে জবি, আমজাদ আলী শেখের স্ত্রী রাবেয়া বেগম।
মামলার বাদী খুর্শিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ২০২২ সালে রোকেয়া বেগমের নিকট থেকে ৩৭ শতাংশ জমির মধ্য ১৫ শতাংশ জমি ৩ বছরের চুক্তিতে ৫০ হাজার টাকায় বন্ধুক নিয়ে খেশারি, কলাই ও মশুরী রোপন করি। ওই ফসল ফলবাল হয়ে উঠলে গত ২৮ জানুয়ারী বেলা ৩ টার সময় জমিতে প্রবেশ করে জমি থেকে জোর পূর্বক খেশারি, কলাই ও মশুরী তুলে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।
তিনি বলেন, ওই ঘটনা দেখে কলা বললে আমার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। আমি বাড়ীতে চলে আসি। এর ঘটনার জের ধরে বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় আমি আমার বাড়ীতে ছিলাম। এসময় বাঁশের লাঠি, লোহার রড, হাতুড়ী, ছ্যানদা, কাঠের বাটাম নিয়ে বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, তার স্বামী বসতঘরে থাকা অবস্থায় গালিগালাজ করতে নিষেধ করা মাত্রই বসতঘরে প্রবেশ করে স্বামীকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মেরে স্বামীর সারা শরীরে রক্তজমাট জখম করে। তাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে স্বামীর মাথায় আঘাত করে মাথার বাম পাশে হাড় ফাঁটা গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়। ডান কাঁধে আঘাতটি লেগে গুরুত্বর হাড় ভাঙ্গা জখম হয়। স্বামীকে হাতুরী দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে স্বামীর কপাল, ডান চোখের উপরে ও চাদিতে সহ সারা শরীরে পিটিয়ে জখম করে।
তিনি বলেন, আমার গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, ঘরে থাকা সাব বাক্সে থাকা নগদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। তাদের ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে খুন জখমের হুমকী দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
গৃহবধূ রোকেয়া বেগম ও শুকুর আলীর ছেলে কায়সার বলেন, স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় শুকুর আলী শেখকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি করেন। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এখন অসহায় অবস্থায় বাড়ীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা সঠিক বিচার দাবী করছি।
অভিযুক্ত রোকেয়া বেগম বলেন, ববিতার সাথে ঘাস উঠানো নিয়ে ঝামেলা করে। পরে আমার সাথে কথাকাটাকাটি হয় এবং আমাকে থাপ্পড় দেয়। পরে আমার নাতিরা এসে মারধর করে। তবে টাকা পয়সা নেয়নি।
রাজবাড়ী সদর থানার এসআই কামরুজ্জামান সিকদার বলেন, এ বিষয়ে কৃষক শুকুর আলী শেখের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।