প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৭ এএম |

কেন্দ্র ঘোষিত ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ের পদযাত্রা সফলের লক্ষ্যে বুধবার বিকেলে যশোরের মণিরামপুরে পৌর ও থানা বিএনপির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ রয়েছে যৌথসভা সমাপ্তের পর পরই সন্ধ্যার দিকে পুলিশ বিএনপির অন্তত ১০ জন নেতাকর্মীকে আটক করে। এরমধ্যে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ৩জনকে ছেড়ে দেয়।
থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন পুলিশের ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ করেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে মৌখিক পূর্বানুমতি নিয়ে বাড়ির উঠানে যৌথসভা করা হয়। অথচ সভা শেষে পুলিশ বিনা উষ্কানিতে সেখান থেকে ১০ জন নেতাকর্মীকে আটক করে। তবে, পুলিশের দাবি নাশকতার উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাড়ির উঠানে বৈঠক করছিলেন। সেখান থেকে ৬জন নেতাকর্মীকে আটক এবং তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়।
দলিয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা পালনের কর্মসূচি রয়েছে। এই কর্মসূচি সফলের লক্ষ্যে বুধবার বিকেলে মণিরামপুরে পৌর ও থানা বিএনপির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। দলিয় কার্যালয়ের পাশে থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনের প্রাচীরঘেরা বাড়ির উঠানে বিকেল ৪টার দিকে সভা শুরু হয়। অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুস সালাম। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ মুছা এবং যশোর নগর বিএনপির সাত নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন পৌর বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই, থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, অ্যাডভোকেট মকবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, আসাদুজ্জামান মিন্টু, নিস্তার ফারুকসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, যৌথসভা শেষ হওয়ার প্রাক্কালে বিকেল ৫টার দিকে শহীদ ইকবালের বাড়ির গেট, দলীয় কার্যালয়সহ আশপাশ এলাকায় পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ করে শহীদ ইকবালের বাড়ির গেটের বাইরে গেলেই পুলিশ সেখান থেকে বিএনপি নেতা আকতার হোসেন খান, শ্যামকুড় ইউনিয়ন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আনছার আলী, যশোর নগরের সাত নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে আটক করে। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আটক করা হয় কুলটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাস্টার নুরুল ইসলাম, সদর ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের, চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন, মাহাবুবুর রহমান, পৌরসভার বিজয়রামপুর-জুড়ানপুর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান, ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন কমিটির নেতা রোস্তম আলীকে।
রাত ৮টার দিকে আটকদের মধ্যে থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আকতার হোসেন খান, মাস্টার নুরুল ইসলাম এবং মাস্টার আব্দুল কাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সার্বিক) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, নাশকতার জন্য বিএনপির নেতা শহীদ ইকবাল হোসেনের বাড়িতে বিএনপির নেতাকর্মীরা বৈঠক করছিলেন। সেখান থেকে ছয়জন নেতাকর্মীকে আটক করে তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়।
শহীদ ইকবালের দাবি করা পূর্বানুমতি নিয়ে বৈঠকের সত্যতা অস্বীকার করে ওসি মনিরুজ্জামান প্রশ্ন করেন, ‘আমি কি মৌখিকভাবে কোন সভা সমাবেশের অনুমতি দিতে পারি?’
এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।