
নির্বাচনের আগেই বিএনপিকে আওয়ামী লীগ মাঠ থেকে বের করে দিতে চায় বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গত (২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন) নির্বাচনের আগে বিএনপির ২১ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবারও আমরা সেই আশঙ্কা করছি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সব কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান অনির্বাচিত, অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার, ক্ষমতাকুক্ষিগত করে রাখার জন্য এবং বিএনপিকে নেতৃত্বহীন করতে আবারও পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে। মিথ্যা, গায়েবি মামলা, গ্রেফতার, ঘরে ঘরে তল্লাশি ও হয়রানি করে নির্যাতন নিপীড়নের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে রুহুল কবির রিজভীসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে এবং কারাগারে অমানবিক নির্যাতন শুরু করেছে। ’
‘মিথ্যা ও হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় এবং সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে কারান্তরীণ রুহুল কবির রিজভী ভীষণ অসুস্থ। তাকে সুচিকিৎসা প্রদানে সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বুকে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ রুহুল কবির রিজভী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ফুসফুসে জটিলতা ও হার্টের অসুখে ভুগছেন। তাকে সবসময় লাঠির ওপর ভর করে চলতে হয়। ’
‘এমন পরিস্থিতিতে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে পুরান ঢাকার আদালতে আসার দীর্ঘ পথ তাকে প্রিজন ভ্যানে আনা-নেওয়া হচ্ছে। এই প্রিজন ভ্যানগুলোতে বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি কোনো কিছু ধরে দাঁড়িয়ে থাকারও ব্যবস্থা নেই। যার জন্য অসুস্থ রুহুল কবির রিজভীকে চরম ঝুঁকি নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই আদালতে আনা নেওয়া করানো হয়। যেকোনো বন্দিকে আদালতে আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে আরামদায়ক পদ্ধতিতে বিধান থাকার পরও কারা কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বরত পুলিশ আইন অমান্য করে যাচ্ছেন। এটি চরম অমানবিকতা ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পঞ্চগড়ে সংঘর্ষের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এ ঘটনা ঘটিয়ে একইভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করতে বাড়ি-বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল। তারা নির্বাচন আগে বিএনপি শূন্য, বিএনপিকে মাঠ থেকে বের করে দিতে চায়। কিন্তু এবার আর সেটা পারবে না। কারণ জনগণ রাস্তায় নেমে গেছে। বিএনপি মাঠে নেমে গেছে। আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাবে। জনগণের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ইউসুফ বিন জলিল কালু, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আলী ভাটারা থানা, মো. শাহজাহান ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক গুলশান থানাসহ অসংখ্য নেতাকর্মী বর্তমান সরকারের রোষানলে কারাবন্দি আছেন।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্মূল ও পর্যুদস্ত করতে নিষ্ঠুর আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে সারাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে।