মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩ ৭ চৈত্র ১৪২৯
                
                
☗ হোম ➤ আন্তর্জাতিক
কোলতাকার ডায়েরি
অদ্ভূতুড়ে কান্ডের কোনো মানে বুঝলাম না
অনিরুদ্ধ ঘোষ
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩, ১০:০৯ পিএম |
এ এক অদ্ভুত রকমের অনুভূতি আমাদের জীবনের প্রথম অভিযানের। যার জন্যে আমরা দু’জনের কেউ প্রস্তুত ছিলাম না। ভুত বলে অনেকেই বলেন কিছু নেই। তাহলে?
এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। ঝাড়গ্রামে ডিসেম্বর মাসের বিকেল গড়িয়ে কনকনে ঠাণ্ডা। ঠিক বুঝতে পারলাম না আমাদের সঙ্গে কি হলো। আর কেনো হলো। পণ্ডিতের দল হয়তো ঠাট্টা ইয়ার্কি মারতে পারেন। কিন্তু এই ঘটনা দু’টির ব্যাখ্যা দিতে পারবেন কি, যা সত্য ঘটনা অবলম্বে আমরা বললাম। আমি প্রশ্ন করছি এই আশায় যে আপনারা উত্তর দেবেন।
রোসন আর আমি আবার আরো একটা স্লিপার রেক দেখে ভাবলাম রাত অনেক হলো। এবার ফিরি মানিক পাড়ায়। কিন্তু ফিরবো কিভাবে?
স্বাপনবাবু তার টোটো আর নাতিকে সঙ্গে করে বহু সময় আগে ফিরে গেছেন। আর এবার আমাদের দুইজনের ফেরার পালা। চারদিক অন্ধকার। এক হাত দূরে কাউকে দেখা যায় না। ভরসা সঙ্গে আনা দুইজনের দুটো টর্চ। রওনা দিলাম আমরা সরডিহা রেল স্টেশনের উদ্দেশ্যে। লাইনের ওপর দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। কখনো রোসন আগে আমি পেছনে, আবার কখনো আমি আগে ও পেছনে। আবার কখনো পাশাপাশি। হটাৎ বহু দূরে ট্রেনের আলো দেখতে পেয়ে লাইনের পাশের মাঠের ওপর দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। ট্রেন কাছে আসার পর বুঝলাম যে ওটা কয়লা বোঝাই মালগাড়ি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিহার যাচ্ছে। সঙ্গের টর্চলাইট জ্বালিয়ে গার্ড বাবুকে মাঠ থেকে সিগনাল দিলে তিনিও আমাদের সঙ্গে সঙ্গে সিগনাল দিলেন। মালগাড়ি চলে যাবার পর দেখলাম মাঠের মধ্যে আমাদের সামনে শালবন। অন্ধকারে ঠিক বুঝতে পারিনি। সেই শালবনের ভেতর দিয়ে এগোতে লাগলাম আমরা। তারপর আবার কি মনে হলো, বনের ভেতর দিয়ে উঠে পড়লাম রেললাইনের উপরে। রাস্তা যেনো আর ফুরোতে চায় না। খুব ক্লান্ত লাগছিল। লাইনের উপরেই বসে পড়লাম আমরা পাশাপাশি। চারিদিকে শেয়াল আর ঝিঝি পোকার ডাক। একটা-দুটো পেঁচা খুব কাছেই নতুন অতিথি দেখে তারস্বরে ক্রমাগত ডেকে চলছিল।
উঠে পড়লাম আমরা সঙ্গে আনা জল খেয়ে। লাইনের উপর দিয়ে অল্প খানিকটা এগোতেই পাশের লাইন দিয়ে আর একটা ট্রেন বিকট শব্দ করে চলে গেলো। দূরে দেখতে পেলাম আমরা সরডিহা রেল স্টেশনের আলো। মনটা খুশিতে নেচে উঠল। চলার গতি বাড়ালাম আমরা। স্টেশনে পৌঁছে দেখলাম সেটা একদম শুনশান। ২ থেকে ৩ জন রেল কর্মচারী ছাড়া প্লাটফর্মে আর কোনো লোকজন নেই। তারা বেশ অবাক চোখে আমাদের দেখলো গল্পো থামিয়ে। স্টেশন থেকে বেরিয়ে একটা দোকানে চা বিস্কুট খেয়ে মানিক পাড়ার দিকে রওনা দিলাম। বড়ো রাস্তা থেকে দেখলাম স্বাপনবাবুর বাড়িতে  আলো জ্বলছে আর রাস্তার মোড়ে স্বপনবাবু দাঁড়িয়ে আছেন তার নাতিকে নিয়ে। আমাদের দেখে বললেন কি খবর? সব কিছু ভালো আছে তো? রোসন উত্তর দিতেই তিনি তার নাতিকে নিয়ে কোথায় যেনো রওনা দিলেন বড়ো রাস্তা ধরে। বুঝলাম কাউকে আমাদের পৌঁছানোর খবর দিতে গেলেন। বাড়িতে দেখলাম উনার পরিবারের সবাই রয়েছেন। আমাদের ঘরে ঢুকে হাত মুখ ধুয়ে সোজা আমরা চললাম বাজারে সেই হোটেলে খেতে। বেশি রাত হলে খাবার আবার পাওয়া যাবে না।
হোটেলে খেতে গিয়ে বেশ খানিকটা অবাক হলাম। হাত ধুয়ে সবে ভাত খেতে বসেছি, হোটেল মালিক জিজ্ঞাসা করলেন-আপনারা যে ওখানে গেলেন তা আপনাদের কিছু হয়নি তো? ইঙ্গিত বুঝে গেলাম মুহূর্তের মধ্যে। রোসন জিজ্ঞাসা করলো, খবরটা দিল কে? হোটেল কর্মচারী ভাত দিতে এসে বলে গেলো খবর পেয়েছি। এদিকে হোটেল থেকে বাইরে চোখ পড়তেই দেখি বেশ কয়েকজন লোক বাইরে দাঁড়িয়ে আমাদের দেখছেন এবং নিজেদের মধ্যে কি যেনো কথাবার্তা বলে চলেছেন। খেয়ে বেশ রাত হলো ফিরতে।
স্বপনবাবু বাড়িতে ফিরে এসেছেন দেখলাম। উনার পরিবারের লোকেরা বেশ অবাক চোখে আমাদের দেখছিলেন। বুঝলাম ওই রাতে উনাদের বেশ কিছু প্রতিবেশী বোধহয় আমাদের কথা শুনে আমাদের দেখতে এসেছেন বাড়িতে। স্বপনবাবুকে বললাম কাল দুপুরে খেয়ে দেয়ে আবার আমরা ওখানে যাবো। জবাবে উনি কিছুই বললেন না। যাইহোক, নিজেদের ঘরে গিয়ে রোসন আর আমি শুয়ে পড়লাম। শরীর বেজায় ক্লান্ত। দু’জনেই ভাবছিলাম শুয়ে শুয়ে কেনো আমাদের সঙ্গে এই অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো? আমরা কি দুজনেই দিবাস্বপ্ন দেখছিলাম?
পরদিন বেশ বেলায় উঠলাম আমরা ঘুম থেকে। (চলবে)
লেখক: ইউটিউবার



গ্রামের কাগজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


সর্বশেষ সংবাদ
সড়ক উন্নয়ন কাজে নয়-ছয়
যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের মিলনমেলা ও পুরস্কার বিতরণ
রোজার আগেই যশোরের ৩৩৩ পরিবারে ঈদের আনন্দ!
প্রাচ্য ক্রীড়া সংঘের দাবা প্রতিযোগিতা
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ
মৌমাছির কামড়ে বাবা-মেয়ে হাসপাতালে
ঝুমঝুমপুরে কিশোর ছুরিকাহত
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
চতুর্থবার ফাইনালে কালেক্টরেট স্কুল
আর্জেন্টিনাকে ১৩-৫ গোলে হারিয়ে কোপা জিতল ব্রাজিল
রোজার আগেই যশোরের ৩৩৩ পরিবারে ঈদের আনন্দ!
দোলাচল কাটিয়ে কনসার্টে মাতলেন যশোরবাসী
ঘোপের বিদ্যুতের নামে মামলা
সাড়ে ১৩ লাখ টাকা প্রতারণা মামলার আসামি মুরাদ আটক
বড় বাজারে যৌথ অভিযান
আমাদের পথচলা | কাগজ পরিবার | প্রতিনিধিদের তথ্য | অন-লাইন প্রতিনিধিদের তথ্য | স্মৃতির এ্যালবাম
সম্পাদক ও প্রকাশক : মবিনুল ইসলাম মবিন | সহযোগী সম্পাদক : আঞ্জুমানারা
পোস্ট অফিসপাড়া, যশোর, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ০২৪৭৭৭৬২১৮২, ০২৪৭৭৭৬২১৮০, ০২৪৭৭৭৬২১৮১, ০২৪৭৭৭৬২১৮৩ বিজ্ঞাপন : ০২৪৭৭৭৬২১৮৪, ই-মেইল : [email protected], [email protected]
কপিরাইট © গ্রামের কাগজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft