প্রকাশ: শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩, ৪:১২ পিএম |

সংস্কৃতি সমৃদ্ধ শহর রাজশাহীতে নব্বই দশকের শেষ পর্যন্ত সব মানুষের বিনোদনের প্রধান উৎসই ছিলো হলে গিয়ে সিনেমা দেখা। তবে কালের বিবর্তন ও চলচ্চিত্রের বেহাল দশার কারণে ২০১০ সাল থেকে একে একে বন্ধ হতে শুরু করে এখানকার সিনেমা হলগুলো। এর আগে ২০১২ সালে ‘কমন জেন্ডার’ সিনেমা চলাকালে শহরের অদূরে পবার কাটাখালী বাজারের পুরনো রাজ তিলক হলটি বন্ধ হয়ে যায়।
তবে সেই বিনোদনের প্রধান উৎসকেই ফিরিয়ে আনতে প্রায় এক যুগ পর রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী বাজারে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের উপস্থিতিতেই অনুষ্ঠনিকভাবে উদ্বোধন করা হলো ‘রাজ তিলক’ সিনেমা হলের। শুক্রবার জমকালো আয়োজনে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত বিখ্যাত ‘হাওয়া’ সিনেমার প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে বন্ধ থাকার দীর্ঘ ১৩ বছর পর রাজশাহীর কাটাখালী বাজারে অবস্থিত রাজ তিলক সিনেমা হলটি পুনরায় চালু করা হয়েছে। উদ্বোধনীর দিনে ‘হাওয়া’ সিনেমা প্রদর্শন করা হয়। দেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র হাওয়া মুভি দিয়ে হলটির প্রথম শো শুরু হয়। দীর্ঘদিন সিনেমা হল না থাকার শূন্যতা ঘোঁচায় উচ্ছ্বসিত রাজশাহীবাসী।
মহানগরীর অলুপট্টি এলাকার থেকে সিনেমা দেখতে এসেছেন রকিবুল ও তার বন্ধুরা। তারা বলেন, হাওয়া দেখার জন্য রাজশাহীতে মানববন্ধন হয়েছে। সেই হাওয়া আজকে রাজশাহীতে দেখার সুযোগ মিললো। এর আগে সিনেপ্লেক্স এসেছে। তবে সেখানে আমাদের মত ছাত্রদের দেখার সুযোগ ছিলো না। কারণ টিকিটের দাম অনেক বেশি। তাই আজকে এখানে এসে সিনেমা দেখলাম।
রাজ তিলক সিনেমা হলের মালিক রুম্মান আলীর কাছ থেকে পাঁচ বছরের চুক্তিতে সিনেমা হল চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন ঢাকার ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন সাগর। সংস্কৃতি সমৃদ্ধ রাজশাহীকে পুনরায় বিনোদনমুখর করে তোলার জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
রাজ তিলক সিনেমা হলের প্রডাকশন ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন সাগর বলেন, হলটি বন্ধের পর মো. রুম্মান নামের একজন কিনে নেন। কিন্তু তিনিও হলটি চালু রাখতে পারেননি। দীর্ঘ দিন এমন অবস্থায় পড়ে ছিল। এবার তার কাছ থেকে আমি হলটি নিয়ে চালুর উদ্যোগ নেয়।
তিনি আরও বলেন, হলটি নতুন করে চালু করা হয়েছে। আজ হাওয়া সিনেমা প্রদর্শন হয়েছে। বিকেলের শো দিয়ে হলটি চালু হলো। প্রায় ১২ বছর পর এই হলের পর্দা উন্মোচন হলো। প্রথম দিনে ভালো দর্শক হয়েছে। আশা করছি আগামীতে ভালো চলবে। প্রথম শোতে ৫০৮টি সিটের প্রায় সবগুলোই ফুল ছিলো।
দর্শকদের সক্ষমতার কথা বিবেচনা করে টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছে ৭০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। আর ১৮ মার্চ থেকে প্রতিদিন চারটি শো’তে একসাথে ৫১০ জন দর্শক সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন এই হলটিতে।
এদিকে, দীর্ঘদিন পর হল পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত রাজশাহীবাসী। একটু দূরে হলেও হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছেন তারা।