শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৭ আশ্বিন ১৪৩০
                
                
☗ হোম ➤ ইসলামী জাহান
রমজানের রোজা রাখবেন কারা?
কাগজ ডেস্ক :
প্রকাশ: শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩, ১২:৪৩ পিএম |
সুস্থ, প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। কিন্তু মুসলিম হলেই কি রমজানের রোজা রাখা বাধ্যতামূলক? নাকি এরমধ্যেও বিধি নিষেধ আছে? ইসলামি শরিয়তে রমজানের রোজা রাখার ব্যাপারে দিকনির্দেশনাই বা কী?
রমজানের রোজা ফরজ ইবাদত ও আল্লাহর নির্দেশ। ঈমানদারদের জন্য রোজা রাখা যে ফরজ তা জানিয়ে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন-
‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে তোমাদের আগের লোকদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)
রোজা রাখা যাদের জন্য বাধ্যতামূলক
হ্যাঁ, সবার জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়, বরং রোজা পালনের জন্যও রয়েছে শর্ত। যেসব শর্ত সাপেক্ষে রোজা ফরজ তাহলো-
১. রোজা রাখার জন্য প্রথমত মুসলমান হতে হবে। অমুসলিমদের জন্য ইসলামে রোজা রাখার কোনো হুকুম নেই।
২. রোজাদারকে বালেগ বা প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। মুসলিম ছেলে-মেয়ের বয়স ৭ বছর হলেই রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া। যদি তারা রোজা পালনে সক্ষম হয়। তবে আলেমদের মধ্যে কেউ কেউ নামাজের সঙ্গে তুলনা করে ১০ বছর বয়সে রোজা না রাখলে দৈহিক শাস্তির কথা বলেছেন।
তবে ৭ বছর বয়স থেকে ছেলে-মেয়ে রোজা রাখলে তারা সাওয়াব পাবে। আর ভালো কাজে উৎসাহিত করার কারণে উৎসাহ দাতা বা বাবা-মাও সাওয়াব পাবেন। হাদিসে এসেছে-
‘যখন আশুরার রোজা ফরজ ছিল তখন আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে রোজা রাখাতাম। আর খাবারের জন্য কান্না করলে তাদেরকে তুলা দিয়ে তৈরি আকর্ষণীয় খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আমরা এটা করতাম ইফতারের সময় পর্যন্ত।’ (বুখারি)
৩. রোজা রাখার জন্য মুকিম বা স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। কোনো ব্যক্তি যদি সফরে বের না হয়, তবে তার জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। যদি কেউ দীর্ঘ সফরে বের হয় তবে তার জন্য রোজা রাখার বিধানকে সহজ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন-
‘যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় গণনা পূরণ (পালন) করবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৪)
৪. যে ব্যক্তি রোজা রাখবে তাকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও রোজা রাখতে সক্ষম হতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয় কিংবা রোজা রাখলে জীবননাশের আশংকা থাকে তবে এ পরিস্থিতিতে রোজার বিধান সহজ। আল্লাহ বলেন-
‘যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় গণনা পূরণ (পালন) করবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৪)
৫. রোজা রাখার জন্য নারীদের হায়েজ (মাসিক ঋতুস্রাব) ও নেফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তস্রাব) থেকে মুক্ত থাকতে হবে। ইসলামে নারীদের মাসিক ঋতুস্রাবকে কে হায়েজ বলা হয়। হায়েজ অবস্থায় নারীরা অপবিত্র থাকে। এ সময় তাদের জন্য রোজা রাখার হুকুম নেই। আর সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর নারীদের প্রথম ৪০ দিন হলো নেফাসের সময়। এ দুই সময়ে নারীদের রোজা বিধান থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে তাদের জন্য এ সময়ের নামাজের বিধান মাফ করা হলেও পরবর্তীতে তাদের রমজানের ভাংতি রোজাগুলো পূর্ণ করতে হবে।
৬. রমজানের মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয় তবে সে সময় থেকে তাকে রোজা রাখতে হবে। কেননা মুসলমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর রোজার বিধানও ফরজ হয়ে যায়।
৭. রমজান মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো ছেলে-মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হয় তবে তাদের জন্যও রোজা রাখা ফরজ।
৮. রমজানের রোজা শুরু হওয়ার আগে পাগল ছিল কিন্তু রমজান শুরু হওয়ার পর পাগল ভালো হয়ে যায় তবে তার ওপর রোজা রাখা ফরজ। পাগল ভালো হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোজা হুকুমের আওতায় এসে যাবে। রোজা চলাকালীন অবস্থায় ভালো হলে সেক্ষেত্রে তাদের ইফতারের সময় পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, ইসলাম গ্রহণকারী, বালেগ হওয়া ছেলে-মেয়ে কিংবা ভালো হওয়া পাগল ব্যক্তির আগের রোজা আদায় তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কেননা আগের রোজাগুলো অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের ওপর আবশ্যক ছিল না।
৯. যারা মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যায় আবার মাঝে মাঝে ভালো হয়ে যায় তবে তাদের ভালো থাকার সময় রোজা রাখা আবশ্যক। রোজা অবস্থায় যদি কেউ পাগল হয়ে যায় কিংবা অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তাদের জন্য রোজা হুকুম বাতিল হবে না।
১০. রমজান মাসে কোনো মানুষ মারা গেলে অবশিষ্ট রোজা রাখায় তাদের জন্য কোনো হুকুম নেই। আত্মীয়দের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির রোজা রাখায়ও বাধ্যবাধকতা নেই।
১১. যদি কেউ রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে অজ্ঞতায় থেকে রোজা না রাখে, তবে কোনো কোনো আলেমের মতে সে ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হবে না। রোজা ফরজ হওয়ার বিষয়টি জানার পরপর তার ওপর রোজা রাখা বধ্যতামূলক।
১২. আবার কেউ যদি রমজান মাসের দিনের বেলায় না জানার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসে মিলিত হয় তবে অধিকাংশ আলেমের মতে সে দোষী সাব্যস্ত হবে না। তবে মুসলিম এলাকায় বসবাস করে রোজা ফরজ কিনা কিংবা সহবাস হারাম কিনা এ বিষয়ে জানা নেই বললে এ ওজর গ্রহণযোগ্য হবে না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের ফরজ রোজা পালনে এসব হুকুম-আহকাম জেনে নেওয়ার তাওফিক দান করুন। রমজানের ফরজ রোজা যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।



গ্রামের কাগজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


সর্বশেষ সংবাদ
এক বালি খেইকোর প্যাটেই ৬৬৮ কোটি সেপটি!
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ওআইসিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান
কবরস্থান থেকে ৪ কঙ্কাল চুরি
রাজধানীতে ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনতাই ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৫
শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে এবার দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ
চালপড়া খাওয়ানোর কথা বলে পরিবহন চালককে হত্যার চেষ্টা
যুবককে পিলারে বেঁধে মারপিট বাবা-ছেলে আটক
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
যশোরেই চালু হলো পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র
বেশি শসা খাওয়া বিপজ্জনক!
দুদকের মামলায় খোলাডাঙ্গার লুৎফর কারাগারে
রাজকে ৪ কারণে ডির্ভোস দিলেন পরীমণি
অবৈধ দখলদারের কারণে শুরু করা যাচ্ছে না নতুন ভবন নির্মাণের কাজ
যশোরে একটি রাস্তার অপমৃত্যু
রাজধানীতে ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনতাই ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৫
আমাদের পথচলা | কাগজ পরিবার | প্রতিনিধিদের তথ্য | অন-লাইন প্রতিনিধিদের তথ্য | স্মৃতির এ্যালবাম
সম্পাদক ও প্রকাশক : মবিনুল ইসলাম মবিন | সহযোগী সম্পাদক : আঞ্জুমানারা
পোস্ট অফিসপাড়া, যশোর, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ০২৪৭৭৭৬২১৮০, ০২৪৭৭৭৬২১৮১, ০২৪৭৭৭৬২১৮৩ বিজ্ঞাপন : ০২৪৭৭৭৬২১৮৪, ই-মেইল : [email protected], [email protected]
কপিরাইট © গ্রামের কাগজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft