প্রকাশ: রোববার, ৭ মে, ২০২৩, ৮:১৮ পিএম |

ধর্মীয় আচার এবং ব্রিটিশ নিয়ম মেনে শনিবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে অভ্যাগত ও রাজপারিষদদের সামনে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের মাথায় উঠেছে রাজমুকুট। এক হাজার বছর ধরে ব্রিটেনে রাজ্যাভিষেকের জাঁকজমকপূর্ণ এই অনুষ্ঠান আয়োজন হয়ে যাচ্ছে এবং গত সাত দশকের মধ্যে একজন ব্রিটিশের জীবনে এটাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্রিটেনের রাজমুকুটের উত্তরাধিকারী হিসেবে কাটিয়ে দিয়েছেন চার্লস। রাজমুকুটের জন্য তিনি দীর্ঘ ৭০ বছর অপেক্ষা করেছেন। এতটা দীর্ঘসময় আর কোনো যুবরাজকে অপেক্ষা করতে হয়নি। ৭৪ বছর বয়সের চার্লসই ব্রিটিশ সিংহাসনে বসা সবচেয়ে বয়স্ক রাজা।
রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার জমকালো এই অনুষ্ঠানে রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা পার্কারকে মুকুট পরানো হয়। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে ব্রিটিশ রাজার রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন বলে বাসস জানিয়েছে। তিনি এই নতুন রাজাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন, বেলজিয়াম, জাপান, হাঙ্গেরি ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা এর আগে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং বিদেশি প্রতিনিধিদের জন্য রাজা তৃতীয় চার্লসের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার বিকেলে কমনওয়েলথ দেশগুলোর নেতাদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের যোগদানের পাশাপাশি কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকেও যোগ দেন। লন্ডনের কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের মার্লবোরো হাউসে এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় কমনওয়েলথ প্রধান রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এবার ব্রিটেনের নতুন কোনো রাজার অভিষেক অনুষ্ঠানে নতুন ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটেনের সংবিধানে এই রাজা-রানীর শাসনের অবসান চেয়েছেন সেদেশের নাগরিকরা। রাজা চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানের মধ্যে রাজতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে লন্ডনে। শনিবার সকালে ব্রিটেনে প্রজাতন্ত্রের পক্ষে বিক্ষোভ থেকে কয়েকডজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। রাজতন্ত্রবিরোধী এসব ব্যক্তিরা ‘নট মাই কিং’ প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নামেন, সেগুলোও জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশ। ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে ‘রিপাবলিক’ ক্যাম্পেইনের প্রধান নির্বাহী গ্রাহাম স্মিথও রয়েছেন। ট্রাফালগার স্কয়ারে বিক্ষোভের মূল জায়গায় অন্য বিক্ষোভকারীদের জন্য পানীয় ও প্ল্যাকার্ড সংগ্রহ করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভ থেকে ডজনখানেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আগামীতে ব্রিটেনের রাজনীতি কেমন হবে তা আগামীই বলতে পারবে।