
কোনো নির্বাচন সরকারকে ক্ষমতায় রেখে হতে দেওয়া হবে না- এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির নেতারা বলেন, ‘আগামীতে হরতাল, অবরোধ, আপনার কার্যালয় ঘেরাও করে ক্ষমতা থেকে নামানো হবে। একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করা হবে।’
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে ডাকা সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতারা।
শনিবার (১৩ মে) দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে এই সমাবেশ শুরু হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের যৌথভাবে এই সমাবেশ করছে।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই অনেকে মিছিল নিয়ে আসেন নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। তবে তীব্র গরমের কারণে অনেকে আশপাশের ভবনের ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে স্বস্তি খুঁজছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর ঢল নামে নয়াপল্টনে।
একদিকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় অন্যদিকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। গরমের মধ্যেও নেতাকর্মীরা সড়কের ওপর বসে নেতাদের বক্তব্য শোনেন।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কর্মসূচির দুই মাথায় প্রিজন ভ্যান, রায়টকার ও এপিসি কারও রাখা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘গত কয়েক দিনে বিএনপির ঢাকায় কোনো কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু এখন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দিচ্ছে। আগে পুলিশ বাদী হলেও এখন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের লোকদের দিয়ে মামলা করাচ্ছে। পুলিশকে বলব, আপনারা কোনো অভিযোগ দায়ের হলে তদন্ত করে দেখবেন। তার আগে মামলা নিতে পারেন না।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতা এমন একটা জিনিস যার জন্য মানুষ বাবা-মাকে ভুলে যায়। মা-বাবা যা বলে তাও ভুলে যায়। গত পরশু দেখলাম সাবেক রাষ্ট্রপতি, খ্যাতনামা মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অথচ তার মা ‘কর্নেল হুদা ও আমার দুঃখ’ নামে একটি বই লিখেছেন। তিনি কিন্তু জিয়াউর রহমানের কথা লিখেননি। অর্থাৎ এই এমপি তার মায়ের বই পড়েননি।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে নির্যাতন করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘যাতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে না ওঠে সেজন্য নির্যাতন করা হচ্ছে।’
বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভুঁইয়া বলেন, ‘আজকে আন্দোলন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে। শেখ হাসিনা বিশাল বহর নিয়ে বিদেশে গেছেন। কিন্তু এবার কোনো তদবিরে কাজ হবে না। যাদের নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন তারা বুঝতে পেরে অনেকে ফিরে আসেননি। শেখ হাসিনাকেও একদিন এদেশ ছেড়ে যেতে হবে।’
বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন বলেন, ‘অনেকে বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মরে ভূত হয়ে গেছে। তাদের বলতে চাই- এই সমাবেশে এসে দেখুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। এবার আর দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরবে না। তাই হুঁশিয়ার করে দিতে চাই- এবার বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চাইলে সে স্বপ্ন পূরণ হবে না।’
ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান। আর সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনু।