বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২ আশ্বিন ১৪৩০
                
                
☗ হোম ➤ ইসলামী জাহান
হজ-ওমরা সফরে দোয়া কবুলের প্রসিদ্ধ কিছু স্থান
কাগজ ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩, ১:৫৫ পিএম |
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘হজ মানুষকে নিষ্পাপে পরিণত করে, যেভাবে লোহার ওপর থেকে মরিচা দূর করা হয়।’ (তিরমিজি)।
রাসূলে করিম (সা.) আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি যথাযথভাবে হজ পালন করে, সে পূর্বেকার পাপ থেকে এরূপ নিষ্পাপ হয়ে যায়, যেরূপ সে মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন নিষ্পাপ ছিল’। (বুখারি ও মুসলিম)
হজ ও ওমরা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর একটি। ইসলামের যে মূল পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে, যার কোনো একটি অস্বীকার করলে একজন মানুষ মুসলমান থাকে না, তার একটি হজ। অপরদিকে ওমরা হলো সুন্নত ইবাদতের অন্তভূর্ক্ত। এ বিষয়ে হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস এসেছে, ওমরা করা ওয়াজিব কি-না রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘না; তবে যদি ওমরা করো তা হবে উত্তম’। (আহমদ, তিরমিজি, ৯৩১)
পবিত্র হজ বা ওমরাহ সফরে এমন কিছু প্রসিদ্ধ স্থান রয়েছে, যেসব স্থানে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যেমন-
হারাম শরিফ: হারাম শরিফের সীমা বায়তুল্লাহর পশ্চিমে জেদ্দার পথে শুআইদিয়া পর্যন্ত ১০ মাইল, পূর্বে জেরুসালেমের পথে ৯ মাইল, দক্ষিণে তায়েফের পথে ৭ মাইল এবং উত্তরে মদিনা শরিফের পথে ৫ মাইল। এটি ইবাদতের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান এবং দোয়া কবুলের সর্বোত্তম জায়গা।
মসজিদুল হারাম: মসজিদুল হারাম হলো- কাবা শরিফের চারদিকের বৃত্তাকার মসজিদ। এটি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মসজিদ। এখানে দোয়া কবুল হয়।
কাবা শরিফ: মসজিদুল হারামের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কৃষ্ণ বর্ণের চতুষ্কোণ আয়তাকার গৃহটিই হলো কাবা শরিফ। কাবা হলো আল্লাহর ঘর। কাবা মুসলিম জাতির কেবলা বা ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু। ইবাদত ও দোয়া কবুলের জন্য এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কোনো স্থান হতেই পারে না। কাবাঘরের ওপর যখন নজর পড়ে, তখন দোয়া কবুল হয়।
মিজাবে রহমত: কাবাঘরের ছাদের পানি পড়ার জন্য উত্তর পাশে হাতিমের ভেতরে মাঝখান বরাবর একটি সোনার পরনালা রয়েছে। একে মিজাবে রহমত বলে। এটি দোয়া কবুলের স্থান।
হাতিম: কাবাঘর- সংলগ্ন উত্তর দিকে অর্ধবৃত্তাকার দেয়ালঘেরা স্থানকে ‘হাতিম’ বা হুজ্জাতু ইসমাইল বলা হয়। এই স্থানটুকু আগে কাবাঘরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাই এখানে নামাজ পড়া মানে কাবার ভেতরে নামাজ পড়া। এটা দোয়া কবুলের সর্বোত্তম স্থান।
হাজরে আসওয়াদ: কাবাঘরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে দেয়ালে লাগানো জান্নাতি পাথর। এখান থেকে তাওয়াফ শুরু করতে হয় এবং এখানেই শেষ করতে হয়। হাজরে আসওয়াদ চুম্বনে গুনাহ মাফ হয়। ইশারায়ও চুম্বন করা যায়। এটি দোয়া কবুলের স্থান।
কাবা শরিফের রোকনসমূহ: কাবাঘরের প্রতিটি কোণকে রোকন বলা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব কোণে হাজরে আসওয়াদ অবস্থিত। কাবাঘরের উত্তর-পূর্ব কোণকে বলা হয় রোকনে ইরাকি, উত্তর-পশ্চিম কোণকে বলা হয় রোকনে শামি এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কোণকে বলা হয় রোকনে ইয়ামানি। এর প্রতিটি কোণ দোয়া কবুলের স্থান।
রোকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যস্থল: কাবার পশ্চিম-দক্ষিণ কোণ হলো রোকনে ইয়ামানি এবং পূর্ব-দক্ষিণ কোণ হলো রোকনে হাজরে আসওয়াদ। তাওয়াফের প্রতি চক্করে এই স্থানে পড়তে হয়- ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ দুনিয়া হাসানা, ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানা; ওয়া কি না আযাবান নার’। অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দিন, আখেরাতে কল্যাণ দিন এবং দোজখের আগুন থেকে রক্ষা করুন’। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ২০১)
মাতাফ: মাতাফ, অর্থাৎ তাওয়াফ করার স্থান। কাবা শরিফের চতুর্দিকে তাওয়াফের জন্য খোলা স্থানটিই হলো মাতাফ। এখানে দোয়া কবুল হয়।
মাকামে ইব্রাহিম: কাবা শরিফের পূর্ব দিকে মাতাফ বা তাওয়াফ ভূমিসংলগ্ন মাকামে ইব্রাহিমে যে প্রস্তরখ- সংরক্ষিত আছে, তার ওপর দাঁড়িয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) কাবাঘরের প্রাচীর গাঁথতেন। এই পবিত্র স্থানের পেছনে দাঁড়িয়ে প্রতি প্রকার তাওয়াফের পর দুই রাকাত ‘ওয়াজিবুত তাওয়াফ’ নামাজ আদায় করতে হয়। এখানে দোয়া কবুল হয়।
সাফা পাহাড়: কাবা শরিফের পূর্ব পাশের নিকটতম পাহাড়। সাফা পাহাড়ে উঠে কাবাঘরের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ত করে সায়ি শুরু করতে হয়। এটাও দোয়া কবুলের জায়গা।
মারওয়া পাহাড়: মসজিদুল হারাম শরিফ থেকে ৪৫০ মিটার পশ্চিম-উত্তর দিকে মারওয়া পাহাড় অবস্থিত। এটাও দোয়া কবুলের জায়গা। সায়ির সময় প্রতিবার মারওয়া পর্বতে দোয়া করতে হয়।
জমজম: পবিত্র কাবাঘরের পূর্ব দিকে মসজিদুল হারাম শরিফ চত্বরেই জমজম কূপ অবস্থিত। এটি জগতের সবচেয়ে সুপেয় পানির উৎস। এটা দোয়া কবুলের অন্যতম একটি স্থান।
মাসআ: সাফা ও মারওয়া এই দুই পাহাড়ের মধ্যস্থলে বিবি হাজেরা (আ.) তার শিশুপুত্র ইসমাইল (আ.) এর পানীয়ের সন্ধানে ছোটাছুটি করেছিলেন। সেই স্মৃতি রক্ষার্থে হজরত মোহাম্মাদ (সা.) এর অনুকরণে হাজিদের এই দুই পাহাড়ের মধ্যে সাতবার যাওয়া-আসা করতে হয়, একে সায়ি বলা হয়। এটিও দোয়া কবুলের জায়গা।
আরাফাত: আরাফাত ময়দানে হজরত আদম (আ.) এর সঙ্গে হজরত হাওয়া (আ.) এর পুনর্মিলন হয় এবং তারা স্বীয় ভুলের জন্য তথায় আল্লাহ তাআলার দরবারে মোনাজাত করেন এবং ওই মোনাজাত কবুল হয়। সে জন্য হাজিরা এই স্থানে সমবেত হয়ে এই প্রার্থনা করেন- ‘কা-লা রাব্বানা-জালামনাআনফুসানা-ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা-ওয়া তারহামনা-লানাকূনান্না মিনাল খা-সিরীন’। বাংলা অর্থ: ‘তারা উভয়ে বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব’। (সূরা: আরাফ, আয়াত: ২৩)
জাবালে রহমত: দয়ার পাহাড়, এই পাহাড় আরাফাত ময়দানে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৩০০ ফুট। এর উপরিভাগে একটি শুভ্র বর্ণ স্তম্ভ আছে, যেখান থেকে হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এই পাহাড় দৃষ্টিগোচর হওয়ামাত্র লাব্বাইক ও দরুদ শরিফ পড়তে হয়। এখানে বাবা আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.) এর দোয়া কবুল হয়।
মুজদালিফা: মুজদালিফার ময়দানে বা প্রান্তরে বাবা আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.) এর প্রথম একত্রে রাত্রিবাস হয়েছিল। আরাফাতের দিবস শেষে সূর্যাস্তের পর এখানে এসে হাজিদের রাতযাপন করতে হয়। এখান থেকে শয়তানকে মারার জন্য ৭০টি কঙ্কর নিতে হয়। এখানে দোয়া কবুল হয়।
মিনা: আল্লাহ তাআলার আদেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বীয় তরুণ পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) যে স্থানে কোরবানির জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই স্থানের নাম মিনা। মক্কা শরিফ থেকে মিনা পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে অবিস্থত। মিনা প্রান্তরে হজের আগের দিন এবং হজের পর তিন দিন, অর্থাৎ চার দিন তাঁবুতে অবস্থান করতে হয়। এখানে দোয়া কবুল হয়।
মসজিদে নামিরা: আরাফাতের দিনে এখান থেকে হজের ভাষণ দেওয়া হয়। এই দিন এখানে জোহর ও আসরের নামাজ একত্রে জোহরের ওয়াক্তে পড়তে হয়। এখানে দোয়া কবুল হয়।


গ্রামের কাগজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


সর্বশেষ সংবাদ
যশোর থেকে দেশকে মেধাবী মুখ উপহার দিতে হবে : ডিসি
মাদক মামলায় একজনের যাবজ্জীবন ও দু’জনের ১০ বছর করে কারাদন্ড
দারোগা আশীষ সাহার বিরুদ্ধে ৮০ লাখ টাকা অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
যশোরে সাঁতার প্রতিযোগিতা সম্পন্ন
অর্ধকোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের ভয়েসকল ফাঁস
কেশবপুরে স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত করায় কারাদন্ড
তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
দাফনের ৫ দিন পর গৃহবধূকে জীবিত উদ্ধার
ভাতুড়িয়ায় দু’ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা
যশোরে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার শঙ্কা
যশোরের চার জনসহ ৫০ বিচারক প্রশিক্ষণে ভারতে যাচ্ছেন
মাসুদ হত্যা মামলার তিন আসামি রিমান্ডে
আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে স্বামীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড
বাবা নয়, সন্তান বুদ্ধিমান হয় মায়ের কারণেই!
আমাদের পথচলা | কাগজ পরিবার | প্রতিনিধিদের তথ্য | অন-লাইন প্রতিনিধিদের তথ্য | স্মৃতির এ্যালবাম
সম্পাদক ও প্রকাশক : মবিনুল ইসলাম মবিন | সহযোগী সম্পাদক : আঞ্জুমানারা
পোস্ট অফিসপাড়া, যশোর, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ০২৪৭৭৭৬২১৮০, ০২৪৭৭৭৬২১৮১, ০২৪৭৭৭৬২১৮৩ বিজ্ঞাপন : ০২৪৭৭৭৬২১৮৪, ই-মেইল : [email protected], [email protected]
কপিরাইট © গ্রামের কাগজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft