বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬ আশ্বিন ১৪৩০
                
                
☗ হোম ➤ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল
আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস
বাড়ছে ধূমপায়ীর সংখ্যা
কাগজ সংবাদ:
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩, ১০:৫০ পিএম |
যশোর শহরের একটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মিস্টার রমিজ (ছদ্ম নাম)। দিনে তিনি ১৫ টির বেশি পান খান। সাথে থাকে কয়েকটি ব্র্যান্ডের জর্দা। ক্লাসরুমেও পান খান তিনি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী ও অন্য শিক্ষককে উদ্বুদ্ধ করেন এর স্বাদ নিতে। বেসরকারি একটি উন্নয়ন সংস্থার প্রশাসনিক পদে কর্মরত মিসেস শিরিন (ছদ্ম নাম)। প্রতি তিন-চার ঘণ্টা পর গুল মুখে নেন তিনি। রমিজ ও শিরিন দু’জনই ধুমপানের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থী এবং সন্তানকে সময় পেলে ধূমপানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সচেতনতামূলক দিকনির্দেশনা দেন তারা। অথচ তারা দু’জনই প্রতিদিন প্রত্যক্ষভাবে তামাক সেবন করছেন। 
শহরের জনপ্রিয় শিল্পী এবং গিটারিস্ট সুমন (ছদ্মনাম)। বিভিন্নস্থানে মাদক বিরোধী কনসার্টে তার পরিবেশনা মুগ্ধ করে দর্শকদের। কিন্তু মঞ্চে ওঠার আগে এ চেইন স্মোকার সিগারেটের সাথে আরও অনেক তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করেন। যদিও তার দাবি, এখন তিনি ‘ই সিগারেট খান’। 
ধূমপানে বিশ্বের মধ্যে অষ্টম স্থানে থাকা আমাদের দেশে এমন রমিজ, শিরিন ও সুমনের সংখ্যাই বেশি। যারা ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে বুঝে ধূমপানসহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করেন। নিজের ক্ষতির পাশাপাশি পরোক্ষভাবে তারা অন্যের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছেন। ধূমপানসহ তামাক খাওয়া অনেকটা ‘ফ্যাশানে’ পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন এ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার নেতৃবৃন্দ। যার ফল হিসেবে বাড়ছে ধূমপায়ীর সংখ্যা। 
ধূমপায়ীর সংখ্যা
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের ২০২৩ সালের ডেটা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৫ বছরের ওপরে ধূমপায়ীর সংখ্যা শতকরা ৩৯ দশমিক ১। ২০১৯ সালেও যা ছিল ৩৫ শতাংশ। এখন ছেলেদের মধ্যে ধূমপায়ীর সংখ্যা ৬০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং মেয়েদের মধ্যে এ সংখ্যা ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ। মেয়েদের সংখ্যা ২০১৯ সালে ছিল ৭ শতাংশের মতো। তবে যশোরে এখন ধূমপায়ীর সংখ্যা কত তার আলাদা কোনো পরিসংখ্যান নেই। 
ধূমপানের বিপক্ষে আইন ও নিষেধাজ্ঞা
দেশে প্রকাশ্যে ধূমপানের বিপক্ষে আইন আছে। কেউ এ আইন অমান্য করলে ৩০০ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এ আইনের প্রয়োগ প্রায় নেই বললেই চলে। তবে, প্রকাশ্যে ধূমপানে জন্য জরিমানার এ বিধান নিয়ে একটি কথা প্রচলিত, তাহলো ‘আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যেই তো অনেক ধূমপায়ী আছেন’। এছাড়াও স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং খেলা মাঠের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও যশোরে বাস্তব চিত্র তার উল্টো। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তথ্য অনসারে দেশের ৯০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়াও যেসব দোকানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করা হয় তাদের ৮২ শতাংশ দোকানে শিশুদের দৃষ্টি বরাবর তামাকজাত দ্র্রব্য প্রদর্শন করছে। তামাক আইনে এ বিষয়েগুলো সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় এই সুযোগ নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠের পাশে একটি নির্দিষ্ট দূরেত্বের মধ্যে যাতে কোনো ধরনের সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি বন্ধের বিষয়ে আইনে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন বলে সুপারিশ করছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। 
প্রকাশ্যে ধূমপান এবং যশোরের প্রেক্ষাপট  
যশোরে অপ্রাপ্ত বয়স্করা ধূমপান করতে পারবে না। এছাড়া প্রকাশ্যে ধূমপান করা যাবে না। সেই সাথে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি যশোর জেলা আইন শৃংঙ্খলা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে সভায় জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বিদ্যালয়ের ১০০ গজের মধ্যে যাতে সিগারেটের দোকান না থাকে এজন্য দোকানদারদের প্রথমে জানানো হবে। এরপর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সভাপতির বক্তৃতা বলেন। প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনারও  সিদ্ধান্ত হয় সেদিন। এরপর  ৬ এপ্রিল ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির ত্রৈমাসিক সভায় সিদ্ধান্ত হয় পৌরসভার তত্ত্বাবধায়নে তামাক পণ্য বিপণন নিয়ন্ত্রণের লক্ষে তামাক পণ্য বিক্রয়কারীদের আলাদাভাবে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় নিয়ে আসার। সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন তামাক পণ্য বিক্রয়কারীদের আলাদা লাইসেন্সের আওতায় নিয়ে আসলে তারা ১৮ বছরের কম বয়সী কারো কাছে তামাক পণ্য বিক্রয় করতে বা বিক্রয় কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। তাহলে নতুন করে ধূমপায়ী তৈরি হবে না। তবে সম্প্রতি হওয়া এ দু’টি মিটিংয়ের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে কার্যত কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি শহরবাসীর। প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধেও তেমন কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি। 
প্রসঙ্গত আজ ৩১ মে বুধবার বিশ্ব তামাকমুক্ত বা ধূমপান মুক্ত দিবস। বিকল্প খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনের সুযোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই ও পুষ্টিকর ফসল চাষে তামাক চাষিদের উৎসাহিত করতে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘গ্রো ফুড, নট টোব্যাকো’।



গ্রামের কাগজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


সর্বশেষ সংবাদ
এক বালি খেইকোর প্যাটেই ৬৬৮ কোটি সেপটি!
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ওআইসিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান
কবরস্থান থেকে ৪ কঙ্কাল চুরি
রাজধানীতে ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনতাই ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৫
শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে এবার দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ
চালপড়া খাওয়ানোর কথা বলে পরিবহন চালককে হত্যার চেষ্টা
যুবককে পিলারে বেঁধে মারপিট বাবা-ছেলে আটক
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
যশোরেই চালু হলো পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র
বেশি শসা খাওয়া বিপজ্জনক!
দুদকের মামলায় খোলাডাঙ্গার লুৎফর কারাগারে
অবৈধ দখলদারের কারণে শুরু করা যাচ্ছে না নতুন ভবন নির্মাণের কাজ
রাজকে ৪ কারণে ডির্ভোস দিলেন পরীমণি
যশোরে একটি রাস্তার অপমৃত্যু
দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত হতে পারে তিন দিন
আমাদের পথচলা | কাগজ পরিবার | প্রতিনিধিদের তথ্য | অন-লাইন প্রতিনিধিদের তথ্য | স্মৃতির এ্যালবাম
সম্পাদক ও প্রকাশক : মবিনুল ইসলাম মবিন | সহযোগী সম্পাদক : আঞ্জুমানারা
পোস্ট অফিসপাড়া, যশোর, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ০২৪৭৭৭৬২১৮০, ০২৪৭৭৭৬২১৮১, ০২৪৭৭৭৬২১৮৩ বিজ্ঞাপন : ০২৪৭৭৭৬২১৮৪, ই-মেইল : [email protected], [email protected]
কপিরাইট © গ্রামের কাগজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft