প্রকাশ: বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩, ৯:৫৬ পিএম |

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দু’যুগ ধরে ভাড়া ভবনে চলছে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম। নিজস্ব জমির মালিক থেকেও সিদ্ধান্তহীনতা এবং টানাপোড়েনে সরকারিভাবে বরাদ্দ পেয়েও হচ্ছে না ভবন। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি অফিসে তাদের নিজস্ব জমিতে নতুন ভবন নির্মাণের। এ বিষয়ে জেলা রেজিস্টার বরাবর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সর্বসাধারণের পক্ষে নূরুল ইসলাম খান একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার প্রায় ৪ লাখ মানুষের জমিজমা ক্রয় বিক্রয়ের সাব রেজিস্ট্রি অফিস পৌর শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় নিজ ভবনে চলমান ছিল দীর্ঘদিন ধরে। ১৯৫৬ সাল থেকে ১১৬ নং মোরেলগঞ্জ মৌজায় ২ নং খতিয়ানে এ স রেকর্ড অনুযায়ী সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নামে রেকর্ডভূক্ত হয়। যা বর্তমানে ১০০ শতকের বেশি জমি বিদ্যমান আছে।
পূর্বের অফিস ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ভবনটি নিলাম হয়। পরে ১৯৯৫ সালে অফিসটি স্থানান্তর করে একটি ভাড়া ভবনে স্বল্প জায়গায় চলে আসছে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম।

সপ্তাহে দু’দিন জমি রেজিস্টি হয়ে থাকে ভূমি মালিকদের। ভাড়া ভবনের ছোট রুমে দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে অনেক কষ্টে জমি রেজিস্ট্রি করতে হয় সাধারণ মানুষের। অথচ তাদের নিজ নামীয় জমি রয়েছে পড়ে। জমির একটি অংশে দলিল লেখকদের ছোট বড় ৪০টি ঘর রয়েছে ‘উপজেলা সাব-রেজিস্টার মসজিদ’। এক সময়ে নতুন ভবন নির্মাণের বরাদ্দ যে কারণে থমকে গিয়েছিলো। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। নদীতে পড়েছে চর। সরকারিভাবে স্থায়ী ভেড়িবাঁধের টেন্ডার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। রেজিস্টি অফিসের ওই জমির সংলগ্নসই সরকারি অর্থ বরাদ্দে একাধিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ হয়েছে। মোরেলগঞ্জ লতিফিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার নির্মাণাধীন ৪র্থ তলা ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। বারইখালী পুরাতন থানা সংলগ্ন নদী থেকে ১০ ফুট দূরত্বে নির্মিত হয়েছে ৩য় তলা বিশিষ্ট সার্কেল অফিস ভবন, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ সরকারি অর্থ বরাদ্দে একাধিক প্রতিষ্ঠান। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি সাব-রেজিস্টি অফিসরে নিজস্ব জমিতে নতুন ভবন নির্মাণের।

এ সর্ম্পকে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম খান বলেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নিজ জমিতে নতুন ভবন নির্মাণ হলে বেহাত হবে না কোটি কোটি টাকার পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সম্পত্তি। অন্যদিকে সরকারের টাকাও অপচয় হবে না। সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কাজের স্বার্থে সোনালী ব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে সুবিধা বহন করে। অন্যত্র অফিস হলে ব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। কতিপয় ব্যক্তি লাভবান হওয়ার জন্য নিজস্ব জমি রেখে অন্যত্র অফিস ভবনের চেষ্টা করছে। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের জোর দাবি নিজস্ব জমিতে নতুন ভবন নির্মাণের।
এ বিষয়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার তন্ময় কুমার মন্ডল বলেন, স্থানীয় দলিল লেখক সমিতি ও সর্বসাধারণের দাবির বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিওলেটারসহ আবেদনের কপি জেলা রেজিস্টার বরাবর পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শন করে ওই স্থানে নতুন ভবন নির্মাণের উপযোগী পরিবেশ রয়েছে বলে একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন।