প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩, ৩:৪৯ পিএম |

যশোরের গাওঘরা মথুরাপুরের সরকারি বড় পুকুরটি নিয়ে তিন পক্ষীয় উত্তেজনা চলছে। একটি পক্ষের অভিযোগ সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেয়া কায়েতখালী মৎস্যজীবী সমিতি প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। মোটা অংকের টাকায় দ্বিতীয় পক্ষটিকে মাছ চাষ করতে দেয়ার চুক্তি করলেও এখন নানা তালবাহানা করছে। সেখানে তৃতীয় একটি পক্ষকে হাজির করিয়ে যথেচ্ছা করাচ্ছে। তৃতীয় পক্ষটি এখানে অনধিকার প্রবেশ করে মাছ লুটপাট করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ব্যবসায়ীক ক্ষতি করা হচ্ছে বলেও দাবি দ্বিতীয় পক্ষের। দ্বিতীয় পক্ষে শেখ হাসানুর রহমান ভুট্টো বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেছেন। স্থানীয়দের দাবি, বিগত এক বছর ধরে পুকুরে মাছ চাষ করেছেন যশোরের চাঁচড়ার শেখ হাসানুর রহমান ভুট্টোসহ দুজন। এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্ত করে সঠিক পক্ষের হাতে বড় পুকুরটি দেয়ার আহবান তাদের।
যদিও কায়েতখালী মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি এ দাবি অস্বীকার বরেছেন।

বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, বাংলা ১৪২৯ থেরেক ১৪৩১ পর্যন্ত (২০২২ থেকে ২০২৫ ) তিন বছরের জন্য গাওঘরা বড় পুকুরটি ইজারা পান কায়েতখালী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। ইজারা পাওয়ার পর পুকুরটি যশোরের চাঁচড়ার শেখ হাসানুর রহমান ভুট্টো ও ঘোপের ইকবাল মোনাফ দিলুকে (দ্বিতীয় পক্ষ) চাষ করতে দেয়া হয় ৩ বছরের জন্য। মোটা অংকের টাকা নিয়ে ৩ বছরের জন্য চুক্তি করলেও এক বছরের মাথায় চুক্তিভঙ্গ করেছে সমিতি। সমিতির সভাপতি আসানুর রহমান এলাকার যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলামের মাধ্যমে ওই চুক্তি করেন। ভুট্টো পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিলেও মেয়াদ শেষের আগেই পুকুরে তৃতীয় একটি পক্ষকে নামিয়ে দিয়েছে বলে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, পুকুরটিতে মাছ চাষের চুক্তি করে নেন ভুট্টো ও দিলু। কিন্তু ইছালী এলাকার মারুফ, দাউদ আলী, মাসুদ, সামসু, মোহন, রাসেলসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৭ জন ওই পুকুরে যথেচ্ছা করছেন। অনধিকার প্রবেশ করে গত ৫ মে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নামিয়ে ৭ লাখ টাকার মাছ লুট করে। ২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পুকুরটি ভুট্টো পক্ষ চাষ করবে মর্মে চুক্তিপত্র রয়েছে বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়াও দিচ্ছে ওই মারুফ চক্র। এ বিষয়ে মৎস্যজীবী সমিতিকে জানালেও তারা নিরবতা পালন করছে। এ ঘটনায় হত্যার হুমকির মুখে রয়েছেন ভুটো ও দিলু পক্ষ। তারা দ্রুত এখানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে কায়েতখালী মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আশানুর রহমান গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন মৌখিকভাবে অনুমতি নিয়ে মাজহারুল ইসলামের মাধ্যমে চাষে নামে ভুট্টো পক্ষ। কিন্তু তারা সরকারি অংশের ইজারার টাকা না দিয়ে তালবাহানা শুরু করে। আর জবর দখল করে এক বছর পুকুর ভোগ করেছে। এখন মৎস্যজীবী সমিতিই মাষ চাষ করছে পুকুরে। সেখানে মারুফ ও রাসেলসহ যাদের নাম আসছে তারা কেউ জেলে নয়। তাদের তারা মারার কোনো প্রশ্নই আসে না।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত ইজারা নিতে হলে মৎস্যজীবী সমিতি লাগে। অর্থ্যাৎ জাল যার জল তার। কিন্তু অনেকে মৎস্যজীবী বা জেলে না হলেও জেলে সেজে সমিতির সদস্য হয়েছেন। আর সেই সমিতির অনেকে মাছ চাষ করেনা। দ্বিতীয় বা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে চাষ করে। গাওঘরা পুকুরের বেলায়ও তাই হয়েছে। এখন দ্বিতীয় পক্ষকেও গায়ের জোরে তাড়িয়ে দিয়ে পুকুর দখল নেয়া হচ্ছে। গাওঘরা পুকুরটি নিয়ে এখন তিনটি পক্ষ সামনে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক পক্ষের কাছে পুকুর বুঝিয়ে দেয়ার দাবি তাদের।