প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩, ১০:৪৩ পিএম |

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকার ৫০টি পরিবার পূর্বপুরুষের পেশা মৃৎশিল্পকে আকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে। টিকে থাকতে তারা সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন।
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চিত্রা নদীর তীরবর্তী দোঁ-আশা মাটির সহজলভ্যতা এবং পরিবহনের সুবিধার্থে এ অঞ্চলে মৃৎশিল্প গড়ে ওঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এই পেশায় নিয়োজিত পাল সম্প্রদায়ের ৪০ থেকে ৫০টি পরিবার তাদের পূর্বপুরুষের এই পেশাকে আকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে। শিবনগরে দিপালি পাল, নিশ্চন্তপুরের জীবন পাল, অনুপম পুরের সৌরভরা এখনো কোনো মতে এই পেশা চালিয়ে যাচ্ছে।
এবিষয়ে কথা হয় মৃৎ শিল্পী দিপালী পালের সাথে। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার চিত্রা নদীর কুলবর্তী গ্রাম শিবনগরের বাসিন্দা। দিপালী পাল বলেন, মায়ের পাশে বসে শখের বসে মাটি দিয়ে বানানো পাখি, ফল, খেলনা হাড়ি পাতিল দিয়েই আমার হাতে খড়ি হয়। বাবার এ ব্যবসা মন্দ ছিল না। মা-বাবাকে দেখেছি এক সাথেই মাটির তৈরি তৈজসপত্র বানাতেন। তিনি বলেন, কালীগঞ্জের শিবনগর, নিশ্চন্তপুর, অনুপমপুর এলাকায় পাল বংশের লোকের বসবাস ছিল বেশি। পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হয় সুদীপ পালের সাথে। শ্বশুরালয়ে এসেও আমি একই কাজ করছি। আমরা এখন ফুলের টব, ফুলদানি, মাটির কলস, হাড়ি-পাতিলসহ নানান রকমের খেলনা বানাচ্ছি।

মৃৎশিল্পের তৈজসপত্র বিক্রেতা হাসিবুল হাসান পিকলু জানান, মৃৎশিল্পের তৈরি ব্যবহার্য পণ্যের এখন আর তেমন চাহিদা বাজারে নেই। সৌখিনতার বসে কেউ যদি কিছু ক্রয় করলে সেটাই তার বিক্রি। তার সংগ্রহে দেখা যায়, দোকানে ৫০টিরও বেশি মাটির পণ্য দৃশ্যমান। এগুলো সংগ্রহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে।
মৃৎশিল্পে কাজ করা ব্যক্তিরা জানান, তাদের সন্তানাদি কেউ আর এই পেশায় কাজ
করতে আগ্রহী নন। লোকজ এই মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রখার জন্য সরকারি সহায়তায় বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। তাছাড়া লোকজ এই মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রখতে হলে পূর্বপুরুষের জ্ঞানের সাথে নতুন জ্ঞানের সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। বাজারজাতকরণের নতুন আইডিয়াতে নজর দিতে হবে।