ডেঙ্গু আক্রমণের মূল সময় শুরু হলেও আপাতত শঙ্কামুক্ত যশোরের মানুষ। অন্যান্য বছর এই সময় যশোরে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হলেও এ বছর তা নেমে এসেছে শূন্যের কোটায়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ছয়জন।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, সাধারণত জুন থেকে ডেঙ্গু আক্রমণ শুরু হয়। কারণ বর্ষা মৌসুম শুরু হয় এই সময় থেকে। এই প্রাদুর্ভাব চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এসে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এ বছর এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়নি। গত বছরের এই মৌসুমে জেলায় ৪৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে ৩৩১ জন ছিলেন অভয়নগর উপজেলায়। এছাড়া, মণিরামপুরে আট, কেশবপুরে আট, চৌগাছায় পাঁচ, বাঘারপাড়ায় এক ও সদর উপজেলায় ৭৮ জন আক্রান্ত হন। প্রতি বর্ষায় অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুরে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনো পর্যন্ত যশোরে ডেঙ্গুর আক্রমণ তেমন না হলেও আনন্দিত না হয়ে এখনই সচেতন হতে হবে। কেননা, বর্ষার মৌসুম শুরু হয়েছে। এডিস মশা আবদ্ধ জলাধার, বাসাবাড়ির টব, ফ্রিজের পেছনে জমে থাকা পানি, এসির পানি, কমোডে আটকে থাকা পানিতে বংশবিস্তার করে। খানাখন্দ, পড়ে থাকা পুরানো টায়ার, যেকোনো ধরনের পাত্র, মোটকথা যেখানে পানি জমে থাকে সেখানেই এডিস মসার বসবাস ও প্রজনন। এডিসের হাত থেকে বাঁচতে হলে মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো দরকার। ঘরে মশানিরোধক স্প্রে করতে হবে। শরীরে মশানিরোধক ক্রিম লাগানো যেতে পারে।
বর্ষা মৌসুমে বাড়িতে কারও জ্বর হলে শুরুতেই চিকিৎসক দেখানো দরকার। জ্বরের মাত্রা যাই হোক, ডেঙ্গুর আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাবে না। উচ্চমাত্রার জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ ছাড়াও ডেঙ্গু হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দিতে হবে।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ জানান, এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গুর আক্রমণ শুরু হয়নি এই জেলায়। যেহেতু বর্ষা মৌসুম চলছে এজন্য ডেঙ্গু নিয়ে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ডেডিকেটেড ওয়ার্ড। ওষুধের কোনো সংকট নেই। সে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।