বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬ আশ্বিন ১৪৩০
                
                
☗ হোম ➤ এক্সক্লুসিভ
আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস
দূষণের বড় কারণ পলিমার
কাগজ সংবাদ:
প্রকাশ: সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩, ১১:৫৫ এএম |
খাবার থেকে শুরু করে ওষুধ, প্রসাধনী, প্রযুক্তি, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, সবক্ষেত্রেই প্লাস্টিকের ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। মানুষের জীবনের সঙ্গে যেমন মিশে আছে প্লাস্টিক। তেমনি এর অপব্যবহারে সমুদ্র, নদী নালা, খাল বিল, পুকুর, প্রকৃতি দূষণের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পলিমার। এই পরিস্থিতিতে আজ ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত হচ্ছে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতার বার্তায়। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে, সামিল হই সকলে’।  
দিবসটি উপলক্ষে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দেশে বছরে এখন ৮ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। তার ৩০ শতাংশের বেশি হয় রাজধানী ঢাকায়। দেশের প্রধান শহরটিতে বছরে প্রায় আড়াই লাখ টন অর্থাৎ দিনে ৬৮১ টনের মত বর্জ্য উৎপন্ন হয়। সারা দেশে এর পরিমাণ ২ হাজার ২৫০ টন। এর ৪০ শতাংশ, অর্থাৎ ২ লাখ ২৮ হাজার টনের মত রিসাইকেল বা পুনঃব্যবহার হয়। বাকি বর্জ্য পরিবেশে পড়ে থাকে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সারা দেশের মানুষ বছরে মাথাপিছু ৯ কেজি বর্জ্য উৎপন্ন করলেও রাজধানীতে এটি দ্বিগুণ ।
প্লাস্টিক কি 
প্লাস্টিক হচ্ছে কৃত্রিমভাবে তৈরি পলিমার, যা মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে রাসায়নিক উপায়ে তৈরি করা হয়। প্লাস্টিক সাধারণভাবে নমনীয়, ক্ষয়রোধী, দীর্ঘস্থায়ী ও সস্তা। প্রাত্যহিক জীবনে আমরা যা ব্যবহার করি, তার অধিকাংশই প্লাস্টিকের তৈরি।
প্লাাস্টিক দূষণ কি 
পরিবেশে পচনরোধী প্লাস্টিকজাতীয় দ্রব্য, উপজাত, কণিকা বা প্লাস্টিকের দ্রব্য নিঃসরিত অণুর সংযোজন; যা মাটি, পানি, বায়ুমন্ডল, বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও মানবস্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তাকে সাধারণভাবে প্লাস্টিক দূষণ বলা হয়।
প্লাস্টিক কি ক্ষতি করে 
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইক্রো ও ন্যানো প্লাস্টিকের কণা এবং নানারকম ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ  পরিবেশে নির্গত হয়। এসব কণা ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মানুষ ও অন্যান্য জীবের হরমোনাল সিস্টেম নষ্ট করতে পারে। ফলে প্লাস্টিক দূষণ মানুষ ও অন্যান্য জীবের প্রজননক্ষমতা নষ্ট করে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করে নানারকম দুরারোগ্য ব্যাধি সৃষ্টি করে। এছাড়া এসব প্লাস্টিক ন্যানো কণা এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মানুষ ও অন্যান্য জীবের কোষাভ্যন্তরে অবস্থিত ডিএনএ ও আরএনএ অণুর মধ্যে পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্যানসার বা স্নায়ুতন্ত্র বিকল করতে পারে। এ ছাড়াও অদৃশ্য প্লাস্টিকের কণা ও হরমোনাল সিস্টেমের প্রভাবকারী প্লাস্টিক নিঃসৃত বিষাক্ত দ্রব্যাদি খাদ্যচক্রের মাধ্যমে মানবস্বাস্থ্যকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
কারা বেশি প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যবহার করে 
বাংলাদেশে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিয়ে বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের  ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের একটি গবেষণা অনুসারে তরুণ এবং যুবকরাই পরিবেশে প্লাস্টিক দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। যেসব খাবারের সঙ্গে প্লাস্টিকের প্যাকেট রয়েছে, সেগুলোই সবচেয়ে বেশি ভোগ করছে তরুণ এবং যুবকেরা যাদের বয়স ১৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। একবার ব্যবহারের পর অরে কোন কাজে লাগে না এমন  সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ৩৫ শতাংশ ব্যবহার করে ১৫-২৫ বছর বয়সী জনগোষ্ঠী। এবং ৩৩ শতাংশ ব্যবহার করে ২৬-৩৫ বছর বয়সীরা। অর্থাৎ মোট সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ৬৮ শতাংশ ব্যবহার করছে তরুণ জনগোষ্ঠী।
যশোরের অবস্থা 
যশোর পৌরসভার তথ্য অনুসারে  প্রতিদিন ২০ টন পচনশীল বর্জ্য হলেও অপচনশীল বা প্লাস্টিক বর্জ্যরে নির্দিষ্ট পরিমাণ জানা যায়নি। তাছাড়া জেলায় বছরে কি পরিমান প্লাস্টিক ব্যবহারের হয় বা এ বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে তার নির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান সংশ্লিষ্ট সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই। 
প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে চলমান আইন 
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের বিধান করেছিল। হাইকোর্ট একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন এবং প্লাস্টিকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সর্বশেষ চলতি বছরের ১ মার্চ দেশের পরিবেশ দূষণ রোধে জেলা প্রশাসক কার্যালয়সহ জেলার সব সরকারি অফিস ও উপকূলীয় এলাকায় ‘সিঙ্গেল ইউজ’ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে  দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেশের সব জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
উত্তরণের উপায় 
প্লাস্টিক দূষণে জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। এ থেকে উত্তরণের বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এক সুপারিশে উল্লেখ করেছে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক থেকে সরে আসার লক্ষ্যে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। যেসব পণ্যের জন্য প্লাস্টিকের ব্যবহার একেবারেই আবশ্যক নয়, সেগুলো এখনই বন্ধ করতে হবে।



গ্রামের কাগজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


সর্বশেষ সংবাদ
এক বালি খেইকোর প্যাটেই ৬৬৮ কোটি সেপটি!
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ওআইসিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান
কবরস্থান থেকে ৪ কঙ্কাল চুরি
রাজধানীতে ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনতাই ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৫
শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে এবার দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ
চালপড়া খাওয়ানোর কথা বলে পরিবহন চালককে হত্যার চেষ্টা
যুবককে পিলারে বেঁধে মারপিট বাবা-ছেলে আটক
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
যশোরেই চালু হলো পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র
বেশি শসা খাওয়া বিপজ্জনক!
দুদকের মামলায় খোলাডাঙ্গার লুৎফর কারাগারে
রাজকে ৪ কারণে ডির্ভোস দিলেন পরীমণি
অবৈধ দখলদারের কারণে শুরু করা যাচ্ছে না নতুন ভবন নির্মাণের কাজ
যশোরে একটি রাস্তার অপমৃত্যু
দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত হতে পারে তিন দিন
আমাদের পথচলা | কাগজ পরিবার | প্রতিনিধিদের তথ্য | অন-লাইন প্রতিনিধিদের তথ্য | স্মৃতির এ্যালবাম
সম্পাদক ও প্রকাশক : মবিনুল ইসলাম মবিন | সহযোগী সম্পাদক : আঞ্জুমানারা
পোস্ট অফিসপাড়া, যশোর, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ০২৪৭৭৭৬২১৮০, ০২৪৭৭৭৬২১৮১, ০২৪৭৭৭৬২১৮৩ বিজ্ঞাপন : ০২৪৭৭৭৬২১৮৪, ই-মেইল : [email protected], [email protected]
কপিরাইট © গ্রামের কাগজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft