বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬ আশ্বিন ১৪৩০
                
                
☗ হোম ➤ বিনোদন
আজম খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বিনোদন প্রতিবেদক :
প্রকাশ: সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩, ৩:০৫ পিএম |
‘রেল লাইনের ওই বস্তিতে’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’ অথবা ‘আলাল ও দুলাল’ গানগুলোর কথা মনে হলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বাংলাদেশের পপ ও ব্যান্ড সংগীতের ‘গুরু’ আজম খানের কথা। এমন অসংখ্য গানের স্রষ্টা বাংলা সঙ্গীতের ‘পপগুরু’ খ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খানের মৃত্যুবাষিকী আজ।
আজম খান ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৫ জুন, ২০১১ সালে মারা যান। তিনি ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৫০ সালে রাজধানী ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম ছিল মাহবুবুল হক খান। তার বাবা মোহাম্মদ আফতাবউদ্দিন খান ও মায়ের নাম জোবেদা খাতুন।
১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন তিনি। প্রগতিশীল চেতনার ধারক আজম খান ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের সময়েই সোচ্চার হয়ে ওঠেন। সে সময়ের ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণসংগীত প্রচারে অংশ নেন তিনি। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত প্রচার করেন।
১৯৭১ সালে আজম খানের বাবা আফতাব উদ্দিন খান সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর ছিলেন। বাবার অনুপ্রেরণায় যুদ্ধে যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে, তিনি পায়ে হেঁটে আগরতলা চলে যান। আগরতলার পথে সঙ্গী হন তার দুই বন্ধু। তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ভারতের মেলাঘরের শিবিরে। সেখানে তিনি শহিদ জননী জাহানারা ইমামের জ্যেষ্ঠ পুত্র শাফী ইমাম রুমীর কাছে এলএমজি, রাইফেল চালানোসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এ সময়ে তার লক্ষ্য ছিল সেক্টর ২ এ খালেদ মোশাররফের অধীনে যুদ্ধে যোগদান করা। আজম খান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ২১ বছর বয়সে। তার গাওয়া গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা যোগাতো। যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে তিনি কুমিল্লায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেয়া শুরু করেন। কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধ করেন। এর কিছুদিন পর তিনি পুনরায় আগরতলায় ফিরে আসেন। এরপর তাঁকে পাঠানো হয় ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য। আজম খান ছিলেন দুই নম্বর সেক্টরের একটা সেকশনের ইন-চার্জ। আর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল খালেদ মোশাররফ। ঢাকায় তিনি সেকশান কমান্ডার হিসেবে ঢাকা ও এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন। আজম খান মূলত যাত্রাবাড়ি-গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশনগুলো পরিচালনার দায়িত্ব পান। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল তার নেতৃত্বে সংঘটিত "অপারেশন তিতাস"। তাদের দায়িত্ব ছিল ঢাকার কিছু গ্যাস পাইপলাইন ধ্বংস করার মাধ্যমে বিশেষ করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, হোটেল পূর্বাণী'র গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটানো। তাদের লক্ষ্য, ঐ সকল হোটেলে অবস্থানরত বিদেশিরা যাতে বুঝতে পারে যে দেশে একটা যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে তিনি তার বাম কানে আঘাতপ্রাপ্ত হন। যা পরবর্তীকালে তার শ্রবণক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটায়। আজম খান তার সঙ্গীদের নিয়ে পুরোপুরি ঢাকায় প্রবেশ করেন ১৯৭১-এর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। এর আগে তারা মাদারটেকের কাছে ত্রিমোহনীতে সংগঠিত যুদ্ধে পাক সেনাদের পরাজিত করেন। তার অংশগ্রহণ করা এই গেরিলা দলের নাম ছিল ক্র্যাক প্লাটুন।
আজম খান ১৯৭২ সালে তার বন্ধুদের নিয়ে উচ্চারণ ব্যান্ড গঠন করেন। তার ব্যান্ড উচ্চারণ এবং আখন্দ (লাকী আখন্দ ও হ্যাপী আখন্দ) ভ্রাতৃদ্বয় দেশব্যাপী সংগীতের জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটারে, সাদেক ড্রামে আর নিজেকে প্রধান ভোকালিস্ট করে অনুষ্ঠান করেছেন। ১৯৭২ সালে বিটিভিতে সেই অনুষ্ঠানের এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে ও চার কালেমা সাক্ষী দেবে গান দুটি সরাসরি প্রচারিত হলে ব্যাপক প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তা পান এই গানের দল।
তিনি ভালো সাঁতারু ছিলেন এবং নতুন সাঁতারুদেরকে মোশারফ হোসেন জাতীয় সুইমিং পুলে সপ্তাহে ৬ দিন সাঁতার শিখাতেন। ২০০৩ সালে তিনি গডফাদার নামক একটি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেন। এছাড়াও তিনি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে কাজ করেন।
আজম খান দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধির সাথে লড়াই করে ৫ই জুন, ২০১১ সালে ঢাকাস্থ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


গ্রামের কাগজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


সর্বশেষ সংবাদ
বঙ্গমাতায় বসতপুর বঙ্গবন্ধুতে ধোপাদী স্কুল চ্যাম্পিয়ন
শেখ হাসিনা সেদিন সীমান্ত খুলে না দিলে কী হতো!
প্রধানমন্ত্রীর অনন্য উদ্যোগ, একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল বদলে দিচ্ছে দেশের অর্থনীতি
অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত বরিশাল বিএনপি, দলীয় রোড মার্চ কর্মসূচিতে সংঘর্ষের শঙ্কা
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ক্যামেরা
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে তারসহ ৩ চোর আটক
২৭ নভেম্বর থেকে ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
যশোরেই চালু হলো পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র
বেশি শসা খাওয়া বিপজ্জনক!
দুদকের মামলায় খোলাডাঙ্গার লুৎফর কারাগারে
অবৈধ দখলদারের কারণে শুরু করা যাচ্ছে না নতুন ভবন নির্মাণের কাজ
রাজকে ৪ কারণে ডির্ভোস দিলেন পরীমণি
যশোরে একটি রাস্তার অপমৃত্যু
দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত হতে পারে তিন দিন
আমাদের পথচলা | কাগজ পরিবার | প্রতিনিধিদের তথ্য | অন-লাইন প্রতিনিধিদের তথ্য | স্মৃতির এ্যালবাম
সম্পাদক ও প্রকাশক : মবিনুল ইসলাম মবিন | সহযোগী সম্পাদক : আঞ্জুমানারা
পোস্ট অফিসপাড়া, যশোর, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ০২৪৭৭৭৬২১৮০, ০২৪৭৭৭৬২১৮১, ০২৪৭৭৭৬২১৮৩ বিজ্ঞাপন : ০২৪৭৭৭৬২১৮৪, ই-মেইল : [email protected], [email protected]
কপিরাইট © গ্রামের কাগজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft