বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান (দাদা ভাই)  মারা গেছেন। সিরাজুল আলম খানের ব্যক্তিগত সহকারী মো. রাসেল এ কথা জানিয়েছেন।

শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিরাজুল আলম খান। গতকাল রাত থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুপুরে আড়াই দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গত ৭ মে রাত সাড়ে ১০টায় শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা নিয়ে ঢাকার পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি হন সিরাজুল আলম। পরে তাকে চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ২০ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে, অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১ জুন) বেলা ৩টার দিকে সিরাজুল আলম খানকে ঢামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।

৮২ বছর বয়সী সিরাজুল আলম খান উচ্চ রক্তচাপসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। এর আগে ২০২১ সালেও অসুস্থ হয়ে কিছুদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সিরাজুল আলম খান। দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়ে আসা চিরকুমার সিরাজুল আলম খান ঢাকার কলাবাগানে ভাইদের সঙ্গেই থাকতেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। পরবর্তীতে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়।

তিনি কখনো নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। ‘দাদা ভাই’ হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে।

জাসদের আ স ম আব্দুর রব অংশের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের সকলের দাদাভাই আর নেই। দুপুরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় ভুগছিলেন।