Published : Sunday, 17 January, 2021 at 8:28 PM, Count : 120

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই দেশের বেশির ভাগ ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি। আর ইট পোড়াতে কয়লার পরিবর্তে নির্বিচারে জ্বলছে কাঠ ও যানবাহনের পুরনো টায়ার। ইট ভাটাগুলোর কোনোটিতেই ১২০ ফুট উঁচু নির্দিষ্ট উচ্চতার পাকা চিমনি নেই। ফলে কম উচ্চতার এসব চিমনি দিয়ে বের হয়ে কাঠ ও টায়ারের ধোঁয়া মিশে যাচ্ছে বাতাসে। পরিবেশবাদী ও চিকিৎকসদের মতে, এতে পরিবেশ দূষিত হয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন রকমের রোগ আক্রান্তের হার বাড়ছে।
ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, জনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষি জমিতে কোনো ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। ইটভাটায় থাকতে হবে ন্যূনতম ১২০ ফুট উচ্চতার পাকা চিমনি। এছাড়া, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে কয়লা। কোনোভাবেই কাঠ কিংবা টায়ার পোড়ানো যাবে না। অথচ, দেশের বেশির ভাগ ইটভাটায় পরিবেশবান্ধব চিমনির পরিবর্তে এখনো ‘ড্রাম চিমনি’ ব্যবহার করা হচ্ছে। চারিদিকে স্তূপ করে রাখা হয়েছে কাঠ। এসব কাঠ ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করছেন। আর শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে শিশুরা। ভাটায় ট্রাক্টর (পাওয়ার ট্রলি) দিয়ে জমি থেকে মাটি আনা হচ্ছে। ফলে গ্রামীণ কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে শিশু-বৃদ্ধ, ও স্থানীয়দের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশিরভাগ ইটভাটা কৃষি জমি ও আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে। এছাড়া, কোনো ইটভাটাতেই ১২০ ফুট উচ্চতার পাকা চিমনি দেখা যায় না।
‘ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) চলে যায় ইটভাটায়। সেই মাটি পুড়িয়ে ভাটা মালিকরা তৈরি করছেন ইট। এতে কাক্সিক্ষত ফসলি জমির উৎপাদন কমে যাচ্ছে। কৃষকদেরও কৃষি কাজে অনীহা চলে এসেছে। এজন্য প্রতিবছরই কমছে ফসলি জমির পরিমাণ। তা ছাড়া ‘ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে ফুসফুসের প্রদাহ, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিসহ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষতি হয় বেশি।’
আমরা আশা করবো পরিবেশ অধিদপ্তর দ্রুত অভিযান চালিয়ে সারাদেশের অনুমোদনহীন ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।