Published : Tuesday, 19 January, 2021 at 9:38 PM, Count : 526

মেয়ে পক্ষের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েও খায়েস মেটেনি যশোরের বেজপাড়া নিউ গয়ারাম রোডের যৌতুক লোভী পরিবারের। ওই পরিবারের সদস্য ব্যাংকার ননদের অমানুসিক নির্যাতনে গৃহবধূ মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে হাসপাতালে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
যশোর সদর ফাঁড়ি পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করছেন। এই নির্যাতন ও অব্যাহত যৌতুক দাবির ন্যায় বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগীর মুুক্তিযোদ্ধা বাবা ও ভাইয়েরা।
থানায় দেয়া অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগে তথ্য মিলেছে, বেজপাড়া নিউ গয়ারাম রোডের মৃত রবি সূত্রধরের ছেলে পলাশ সূত্রধরের সাথে বিয়ে হয় বেজাপাড়ার বিকে রোডের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা বুদ্ধিশ^র দাসের মেয়ে বিভা রানী দাসের। বিয়ের পর থেকে পলাশ ও তার পরিবারের সদস্যরা বিভা রানী দাস ও তার পরিবারের কাছে ৭ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। বিশেষ করে কৃষি ব্যাংকে চাকরি করা পলাশের বোন যুথিকা সিংহের উসকানিতে যৌতুক দাবিতে নির্যাতন শুরু হয়। বোনের সংসারে শান্তির জন্য বিভা রানীর ভাই সুবীর দাস ও সুব্রত দাস ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন ওই পরিবারকে। ওই টাকা দিয়ে পলাশ বাড়ি তৈরি করেন। এরপরও যৌতুক দাবি অব্যাহত রেখেছে পরিবারটি। আরো এক লাখ টাকার দাবিতে নির্যাতন চালাতে থাকে। বিভা রানীর উপর ভরণ-পোষণ না দিয়ে উল্টো নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একপর্যায়ে গত ৯ জানুয়ারি দুপুর দুটোর দিকে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন ননদ যুথিকা সিংহ ও স্বামী পলাশ। কৃষি ব্যংকে কর্মরত যুথিকা সিংহ গৃহবধূ বিভা রানীর বুকে ও মাথায় আঘাত করেন এবং পলাশ শ^াসরোধ করে হত্যা চেষ্টা করে। তার উপর ইটের আঘাত করেও নির্যাতন করা হয। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে প্রাণে রক্ষা করেন তাকে। এলাকার লোকজন পিত্রালয়ে খবর দিলে তারা বিভাকে উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিভা রানী দাস জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই তার উপর এই নির্যাতন চলে আসছে। তিনি একজন গ্রাজুয়েট। এছাড়া তিনি আইন বিষয়ে পড়াশুনা করছেন। সংসারে নিয়মিত সব কাজ করাসহ বাবার বাড়ি থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা নিয়ে দিয়েছেন। এরপরও তিনি ওই বাড়িতে দু’মুঠো ভাত সময় মত খেতে পারেননি। যুথিকা সিংহের কারণে তিনি এখন হাসপাতালে।
ভুক্তভোগীর ভাই সুব্রত ও সুবীর দাস জানিয়েছেন, একটি জঘন্য পরিবার ওটি। পলাশ বিয়ের সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিয়ে পাশ দাবি করে। আসলে সে আন্ডার এসএসসি। একটি দোকানে কাজ করে আর বোন এলএলবি পাশের পথে। একজন আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করে ওই সংসারে মাসে ৬ হাজার টাকাও আয় করে দেন। এরপরও পলাশের ব্যাংকার বোন যুথিকা সিংহ প্রায়ই তার বোনের উপর নির্যাতন চালায়। একজন শিক্ষিত মানুষ হয়েও তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা, বোনসহ তাদের পরিবারের সদস্য নিয়ে অশালীন গালিগালাজ করে। এ ব্যাপারে তারা যুথিকার কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
এ অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। গৃহবধূর উপর নির্যাতন চলেছে সত্য। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার অমিয় কুমার পাল জখমী সনদপত্র দিয়েছেন। তাতে জানিয়েছেন, গৃহবধূর উপর নির্যাতন চলেছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন্ ও ক্ষত আছে।