Published : Saturday, 23 January, 2021 at 8:49 PM, Count : 356

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকাঙ্খার উপর গুরুত্ব দিয়ে কলোস্ট্রল ফ্রি মাংস উৎপাদন ও নতুন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ৫০ কোটি টাকার ভেড়া প্রকল্প চেয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। যশোর সদর উপজেলা সমবায় অফিস থেকে গাড়ল প্রজাতির ভেড়া চাষ করার জন্য ওই প্রকল্পের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
ছাগল এবং গরুর মাংসে কলোস্ট্রলের আধিক্যের বিপরীতে সমবায় ভিত্তিক ভেড়া চাষে কলোস্ট্রল ফ্র্রি মাংস উৎপাদন নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাবে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি।
সমবায় অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের জনগণ প্রচুর পরিমানে চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করে, বিশেষ করে ছাগল এবং গরুর মাংস গ্রহণ করে, অকাল মৃত্যু এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে বলে বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী ভেড়া চাষের উপর গুরুত্বও আরোপ করেন। সেই আলোকে ভেড়ার মাংসে চর্বি কম এবং কলোস্ট্রল ফ্রি বলে দাবি করে এবং কর্মসংস্থানের উপর জোর দিয়ে একটি প্রকল্পের ব্যাপারে কাজ শুরু করেন সাবেক ঝিকরগাছা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রনজিত কুমার দাশ। প্রথম দফায় ঝিকরগাছায় থেকে তিনি গাড়ল প্রজাতির ভেড়া চাষ সমবায় সমিতির মাধ্যমে করার জন্য সমবায়ীদের উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর তিনি যশোরে বদলি হয়ে এসেই প্রকল্পটি বাস্তবে রুপ দিতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রীর সাথে মত বিনিময় করেন। এরপর যশোরের বেকার সমস্যার কথা মাথায় রেখে প্রকল্পে সমবায় ভিত্তিক ঋণ কার্যক্রম মাথায় রেখে ৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নকশা দাঁড় করান। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের স্থায়ী কমিটির মিটিংয়ে কয়েক দফা উপস্থাপন করেন। ভেড়া চাষের উপকারিতা নিয়ে বিভিন্ন সমবায় সমিতির মধ্যে প্রচারণা চালিয়ে এবং দেশের মডেল কয়েকটি ভেড়া খামারের বিষয়টিও সামনে আনা হয়। এক পর্যায়ে সমবায় প্রতিমন্ত্রীকে অবগত করে ভেড়া চাষ প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় ও সমবায় অধিদপ্তরে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। দ্রুতই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে হলেও আশাবাদী সমবায় কর্মকর্তারা।
সমবায় সমিতির সদস্যদের নিয়ে গাড়ল প্রজাতির ভেড়া চাষ এই প্রকল্পের লক্ষ্য। ওই প্রকল্প থেকে সরকারিভাবে ঋণ সহায়তার মাধ্যমে এলাকার বেকারত্ব দূরীকরনের বিষয়টিও সমান গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সমবায় সমিতির সদস্যদের ট্রেড ভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভেড়া চাষ উপযোগী দক্ষ করে দেয়া হবে। এতে করে আর্থ সামাজিক উন্নয়নসহ অনেক বেকারের কমসংস্থান হবে। সর্বোপরি চর্বি কম কলোস্ট্রল ফ্রি মাংস উৎপাদন হবে। আর তা মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাবে।
এ ব্যাপারে যশোর সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রনজিত কুমার দাশ গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, প্রকল্পটির প্রস্তাবনা অবশ্যই সময় উপযোগী ও বাস্তব ভিত্তিক। দেশের বেশিরভাগ মানুষ গরু ও ছাগলের মাংস গ্রহণ করে চর্বি আধিক্য ও কলোস্ট্রলে ভূগছেন। আর ভেড়ার মাংসে ওই ঝুঁকি নেই বললেই চলে। যে কারণে তিনি ঝিকরগাছা এলাকায় এর আগে ছোট পরিসরে কাজ করেছিলেন। এখন বড় পরিসরে যশোরে সমবায় ভিত্তিক এগুতে চান। যে কারণে তিনি ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন।
তিনি আশা করছেন, বর্তমান জনবান্ধব সরকার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করবে। প্রকল্প পাশ হলে তিনি একটি সময় উপযোগী কার্যক্রম চালাবেন। যশোর সদরসহ আরো কয়েকটি উপজেলাকে যোগ করে তিনি এই ভেড়া চাষ প্রকল্প এগিয়ে নিতে চান। দেশে কয়েকটি জেলায় প্রকল্প আকারে না হলেও ভেড়ার খামার করে লাভবান হয়েছে। কিছুটা হলেও কলোস্ট্রল মুক্ত মাংস উৎপাদনে ভূমিকা রেখেছে। আর সরকারি সহায়তা পেলে এটি আরো বড় পরিসরে এগুবে।