
বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ আধুনিক বাংলা কাব্যের রূপকার অমিত্রাক্ষর ছন্দের জনক ও সনেট প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার বিকেলে কবির জন্মভূমি কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে কবির আবক্ষের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা অনুষ্ঠিত না হলেও জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মধুপল্লী, বিদায় ঘাট, বুড়ো কাঠবাদাম গাছতলাসহ আলোচনা অনুষ্ঠানে মধুভক্তদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাধর একজন ব্যক্তি। বাংলা সাহিত্যের অনেক কিছুই শুরু হয়েছে মহাকবির হাত ধরে। তিনি দেশ ও ধর্ম ত্যাগ করার পাশাপাশি নিজ ভাষা বাদ দিয়ে অন্য ভাষায় সাহিত্য চর্চা করেছেন। পরে তিনি মাতৃভাষার টানে বাংলা ভাষায় কবিতা ও সাহিত্য লিখে সমৃদ্ধ করে গেছেন। মধুকবির কারণে গোটা যশোরবাসীসহ আমরা এখানে যারা কর্মক্ষেত্রে এসেছি তারা গর্ববোধ করি।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, স্মৃতিবিজড়িত মধুকবির জন্মভূমি সাগরদাঁড়িতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণাগার তৈরি করার বিষয়ে যশোরবাসীসহ কেশবপুরের আপামর জনসাধারণ দীর্ঘদিন দাবি করে আসছেন। এই এলাকার যিনি সংসদ সদস্য আছেন তিনিসহ আমরা যারা প্রশাসনে আছি তারাও আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম, মধুসূদন একাডেমির পরিচালক কবি ও মধু গবেষক খসরু পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন, কেশবপুর থানার ওসি জসীম উদ্দীন, আবু শারাফ সাদেক কারিগরি কলেজের প্রভাষক কানাইলাল ভট্টাচার্য, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত।
স্বাগত বক্তৃতা করেন মহাকবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হুসাইন শওকত। আলোচনা শেষে মধুমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মধুমঞ্চে অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মহাকবির আবক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হুসাইন শওকত মহাকবির আবক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। পরে একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, কেশবপুর প্রেসক্লাব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, লোকজ একাডেমি, চারুপীঠ আর্ট স্কুলসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।