Published : Tuesday, 26 January, 2021 at 11:35 PM, Count : 420

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রদান (টিকা) কর্মসূচি শুরু করা হবে। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক মঙ্গলবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রদানের স্থান পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন ভ্যাকসিন এখনো পৌঁছায়নি। ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যাপারে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ উল্লেখ করে সরকারি কোনো নির্দেশনাও পাওয়া যায়নি। তবে যশোরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন (টিকা) প্রদান কার্যক্রম শুরুর যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন বরাদ্দ হয়েছে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ তা যশোরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ভ্যাকসিন প্রদানের কাজে ৩৩টি টিমে ১৯৮জন কর্মী নিয়োজিত থাকবেন। মহামারি মোকাবিলায় সরাসরি সম্পৃক্তদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। ভ্যাকসিন গ্রহণের পর যেকোনো ধরণের অনভিপ্রেত ঘটনা মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সমন্বয়ে টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দেশব্যাপি বিলি-বন্টন করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড। গত ২৪ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এম এন সি এন্ড এ এইচ’র লাইন ডাইরেক্টর ও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাক্সফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডাক্তার শামসুল হক বেক্সিমকোকে পত্র দিয়েছেন ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বিতরণের জন্যে। যশোরসহ খুলনা বিভাগের ১০টি, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ৮টি করে ও সিলেট বিভাগের ৪টি জেলায় ভ্যাকসিনগুলো বিতরণ করতে বলা হয়েছে। যশোরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮ কার্টন ভ্যাকসিন। প্রতিটি কার্টনে থাকবে এক হাজার দু’শ ভায়াল। এক ভায়াল থেকে ১০জনকে ভ্যাকসিন প্রদান করা যাবে। সে হিসেবে প্রথম দফায় যশোর জেলায় ৯৬ হাজার মানুষ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন পাবেন।
যশোরে সফলভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রয়োগসহ যাবতীয় ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীনসহ ৪জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অন্য ৩জন হলেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার প্রতিভা ঘরাই, মেডিকেল অফিসার রেহনেওয়াজ রনি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্ভেলেন্স মেডিকেল অফিসার তাসনিম মির্জা। প্রশিক্ষিতরা ভ্যাকসিনেশনের কাজে নিয়োজিত অন্যদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ সকল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রতিরক্ষা বাহিনী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যম কর্মীসহ ১৫টি ক্যাটাগরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম দফায় ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। গত ১৯ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এমন একটি নির্দেশনাপত্র এসেছে। তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। একই সাথে অনলাইন রেজিস্ট্রেশনেরও প্রস্তুতি চলছে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ব্যতিত কেউই ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না। এটি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। “সুরক্ষা” ওয়েবসাইট অথবা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নকারীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ, সময় ও স্থান এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
সিভিল সার্জন আরও জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন যশোরে পৌঁছানোর পর সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) এর নির্ধারিত স্টোরে সংরক্ষণ করা হবে। সরকারি নির্দেশনা মেনে আগে থেকে প্রস্তুতকৃত টিমের মাধ্যমে নির্ধারিত স্থান থেকে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করা হবে। যশোরে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্যে প্রতিটি টিমে থাকবেন ৬জন সদস্য। এর মধ্যে দু’জন সরকারি ভ্যাক্সিনেটর ও ৪জন স্বেচ্ছাসেবী। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্যে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮টি, পুলিশ হাসপাতালে একটি, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৪টি এবং সদর উপজেলা ব্যতিত জেলার ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দু’টি করে মোট ১৪টি টিম কাজ করবে। এছাড়াও যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪টি ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ২টি টিম রিজার্ভ থাকবে। সব মিলিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রদানের জন্যে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।