Published : Friday, 5 March, 2021 at 10:45 PM, Update: 05.03.2021 10:49:04 PM, Count : 124
মঞ্চে কখনো ভরত নাট্যম, কখনো কত্থক। আবার কখনো মন ছুঁয়ে যাওয়া আদিবাসী জীবন শৈলী কিংবা ছোট্ট বেলার স্মৃতি। এসবই চলছে নাচের ছন্দে। সুর লয় তালের সাথে নৃত্য শৈলীর বুননে মুগ্ধ দর্শকেরা বুঁদ হয়ে থাকলেন কয়েক ঘন্টার জন্য। শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এমনই মুগ্ধতা জাগানো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নৃত্যবিতান। নাচের সংগঠনটির ২৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়। শিল্পীদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়া নূপুরের ছন্দে মঞ্চ হয়ে ওঠে কাব্যময়।শুরুতে নৃত্য বিতানের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহরিয়ার বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এ পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক হুসাইন শওকত ও যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটু। নৃত্য বিতানের ছাত্র এবং জেলা কালচারাল অফিসার হায়দার আলীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তৃতা করেন নৃত্য বিতানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সঞ্জীব চক্রবর্তী। অতিথিবৃন্দ বলেন, নৃত্য প্রাচীনতম ও সবচেয়ে সৃজনশীল অভিব্যক্তি। নৃত্য বিতান সেই আবহমান ধারাকে চর্চা করছে। গতানুগতিক ধারার বাইরে এসে নতুন ও সৃষ্টিশীল কাজ উপহার দিয়ে সংগঠনটি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আরও ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
আলোচনা শেষে মঞ্চ মাতায় নৃত্য। প্রথমেই সমবেত গুরু বন্দনা সকলের হৃদয় জয় করে। প্রতিষ্ঠার তিন দশকে এসে আরও বৃহৎ ভাবনায় নিজেদের অনুষ্ঠানের ডালি সাজাতে কোন কার্পণ্য করেনি জেলার একমাত্র এ নৃত্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে তার প্রমাণ মেলে। সন্ধ্যা যতই গড়াতে থাকে শিল্পীদের তাল, লয়, সুর আর নূপুরের ঝংকারের সংমিশ্রণে আরো নতুন কিছু দেখার আকাঙ্খা বাড়তে থাকে নৃত্যপিয়াসী হৃদয়ে। মঞ্চে শিল্পীদের নিমগ্নতা গভীর থেকে গভীরতর হয়। সেই সাথে মঞ্চের সামনে উপস্থিত সকলের অপলক দৃষ্টির মন্ত্রমুগ্ধতার সাথে বয়ে যায় পীন পতন নীরবতা। ছোট বড় মিলিয়ে নৃত্য বিতানের শতাধিক শিক্ষার্থীবন্ধুর লোক, ভরত নাট্যম, কত্থক, আধুনিক নৃত্যের চমকে বুঁদ হয়ে যান নৃত্যপ্রেমীরা। তাদের সুন্দর ও শিল্প নৈপুণ্যের ঝঙ্কার শুধু চোখ দিয়ে নয় সম্পূর্ণ হƒদয় দিয়ে গ্রহণ করেন সকলে।
২৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নৃত্য বিতানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সঞ্জীব চক্রবর্তী গ্রামের কাগজকে বলেন, এত বছর পর এসেও তিনি নৃত্য বিতানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। তার স্বপ্ন ছিলো নাচের এ স্কুল এক সময় কলেজে রূপান্তরিত হবে। নানা টানা পোড়েনে সে স্বপ্ন এখনো অধরা। সংস্কৃতির শহর যশোরের সকলের সহযোগীতায় সে স্বপ্ন পূরণ হতে পারে উল্লেখ করে সঞ্জীব আরও বলেন তার ইচ্ছা তার মৃত্যুর পরও নৃত্য বিতান যুগের পর যুগ দেশ তথা বিশ্বের বুকে নৃত্যাঙ্গণে বিশেষ অবদান রাখুক।