এম. আইউব
Published : Wednesday, 19 January, 2022 at 12:45 AM, Count : 272

যশোরে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে চাচ্ছেন না কৃষক। নির্ধারিত সময়ের আর মাত্র এক মাস ১১ দিন বাকি থাকলেও এ পর্যন্ত জেলার ১০ টি খাদ্যগুদামে মাত্র ১৩ শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে। তবে, চাল সংগ্রহে রেকর্ড সৃষ্টি করতে যাচ্ছে যশোর। এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৮শ’ ৪৫ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে জেলায়। যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৬ শতাংশ। বাকি সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
চলতি আমন মৌসুমে যশোর জেলায় ১৫ হাজার ৪শ’ ৬৫ মেট্রিকটন চাল ও ৮ হাজার ১শ’ ৫৫ মেট্রিকটন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খাদ্য অধিদপ্তর। ইতিমধ্যে ১১ হাজার ৮শ’ ৪৫ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করেছে স্থানীয় খাদ্যবিভাগ। এরমধ্যে সদর খাদ্যগুদামে ৫ হাজার ৫শ’ ৫৮.৬৩০, রূপদিয়ায় ৪শ’৭৪.৫৫০, মণিরামপুরে ৫শ’ ২২.৬৬০, কেশবপুরে ৩শ’ ৪২.৬, নওয়াপাড়ায় ১ হাজার ৩শ’ ২৫.৭, ঝিকরগাছায় ৬শ’ ৮০.৬৮, নাভারণে ১ হাজার ৩শ’ ৯২.৮১, বাগআঁচড়ায় ৮শ’১৪.১৭, খাজুরায় ১শ’ ১৯.৯ ও চৌগাছায় ৬শ’ ১৩.৫৪ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। বাকি রয়েছে ৩ হাজার ৬শ’ ২০ মেট্রিকটন চাল। আগামী এক মাস ১১ দিনে বাকি চালও সংগ্রহ হবে বলে আশা করছেন যশোর খাদ্যবিভাগের কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হয়। আর ধান সংগ্রহ শুরু করে নভেম্বরে। শেষ হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। মিল মালিকরা খাদ্যবিভাগে চাল দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এ কারণে তারা চাল দিতে বাধ্য থাকেন। অপরদিকে, ধান দেয়ার জন্য কৃষক চুক্তিবদ্ধ হন না। ফলে, ধান দিতে তারা বাধ্য না।
ধান সংগ্রহ না হওয়ার ব্যাপারে কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছর বাজারে ধানের দামের সাথে খাদ্যগুদামের দামের তেমন কোনো পার্থক্য নেই। খাদ্যগুদামে সরকার নির্ধারিত এক হাজার ৮০ টাকা মণ দরে ধান কেনা হচ্ছে। এরপর ধানের ময়েশ্চার নির্ধারণের ব্যাপার রয়েছে। আছে আনার খরচও। বাজারে এক হাজার ৫০ থেকে শুরু করে সাড়ে ১১শ’ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ময়েশ্চারের কোনো বিষয় নেই। ধান বাজারে নিলেই নগদ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন কৃষক। অপরদিকে, খাদ্যগুদামে ধান দেয়ার পর টাকা নিতে কৃষককে একাধিক দিন আসা লাগে। সেখান থেকে ছুটতে হয় ব্যাংকে। সবমিলিয়ে নানা হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের। এসব কারণে কৃষক ধান নিয়ে খাদ্যগুদামমুখী হতে চাচ্ছেন না। এ কারণে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। যশোরে ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছেও যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন,‘আশা করছি চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। কারণ মিলাররা চুক্তিবদ্ধ থাকেন। এই কারণে তারা চাল দিতে বাধ্য। সেই ক্ষেত্রে কৃষকরা ধান দিতে বাধ্য না। কারণ তারা চুক্তিবদ্ধ থাকেন না। বাজার আর গুদামের দাম কাছাকাছি হওয়ায় কৃষক যেটি সহজ মনে করছে সেটি করছে। সেই হিসেবে তারা বাজারে ধান বিক্রি করে দিচ্ছে। তারপরও কৃষক যাতে ধান দেয় সেই জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’