
যশোর-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, বিএনপির লবিংয়ের কারণে সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে কল্পকাহিনী আমরা দেখতে পাচ্ছি। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত করার জন্য তারা সারা বিশ্বে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে বিএনপির লবিংয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্ব সাড়া দেয়নি।
এমপি নাবিল বলেন, তাদের এই অপতৎপরতার পরেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখছে সব দেশ। বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এমপি রুমিন ফারহানার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে এমপি কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, একজন সদস্য কল্পনাপ্রসূত সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে বিভিন্ন রূপকল্প তুলে ধরেছেন এই সংসদে। আমরা সবাই জানি কোন দলের জন্ম হয়েছে সেনা ছাউনিতে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পরে ১৯৭৮ সালে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। তাদের নেতা জিয়াউর রহমান তখন সব যুদ্ধাপরাধীকে বাংলাদেশের মাটিতে পুনর্বাসন করেছেন। শাহ আজিজুর রহমানের মতো কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীকে তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য নাবিল আরও বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত একাধিক সেনা অভ্যুত্থানের নামে একের পর এক মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। শুনেছি জিয়াউর রহমান ব্রেকফাস্টের টেবিলে বসে একসঙ্গে ২০ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ আবারও সুসংগঠিত হয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সুসংহত করে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। ২০০১ সালে বিভিন্ন লবিংয়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে সরিয়ে চারদলীয় সরকারকে আনার পর আমরা নিজামী-মুজাহিদের মতো যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়তে দেখেছি। দেখেছি একের পর এক বাংলাভাই, ইংরেজি ভাইয়ের উত্থান। একই দিনে ৬০টি জেলার ৫০০ স্থানে বোমা হামলা দেখেছি। দেখেছি জঙ্গি হামলা। তখন বাংলাদেশ হতে যাচ্ছিল জঙ্গিভূমি। তখন স্লোগান উঠেছিল- ‘বাংলা হবে আফগান’।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবারও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের একটি উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশ্বের কাছে তিনি সমাদৃত হয়েছেন। অর্থনৈতিকভাবে একটি শক্তিশালী দেশ হিসেবে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে ২০৪১ সালে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য।
জাতীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্ব করোনা মহামারি মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে আমরা জীবন ও জীবিকা উভয়ের ভারসাম্য রাখতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থাশীল বলেই জনগণ আওয়ামী লীগকে বারবার নির্বাচিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের অধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অধিকার আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগের নেতারা সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সামনের দিনেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।