
আমাদের শরীরের নানা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হয় হরমোনের মাধ্যমে। কোনো কারণে হরমোনের মাত্রায় অভারসাম্য দেখা দিলে শরীরে নানান জটিলতা তৈরি হয়।
হরমোন এক ধরনের জৈব রাসায়নিক তরল। শরীরের কোষ বা গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়ে এটি কাজ করার নির্দেশ দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে থাকে। তাই শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের অসংগতি প্রকাশ পেতে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে শরীরে কিছু উপসর্গ স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যেমন ওজন বৃদ্ধি ওজন হ্রাস হওয়া, ঘুমের সমস্যা, রক্তচাপ এবং হার্ট রেট পরিবর্তন, বিরক্তি, বিষণ্নতা, উদ্বেগ, মুড পরিবর্তন, ক্লান্তি, ক্ষুধা পরিবর্তন, পেশি দুর্বলতা, জয়েন্টে ব্যথা, অতিরিক্ত ঘাম, চুল ঝরেপড়া বৃদ্ধি, মুখে বা শরীরে লোমের পরিমাণ বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এসব উপসর্গের মধ্যে কমপক্ষে ৪টি উপসর্গ যদি আপনার মধ্যে থেকে থাকে তবে হরমোনের ভারসাম্য সামলিয়ে নিতে এখনই খাবার তালিকায় কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হরমোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আপনার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তবে সুস্থ থাকতে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। খাবারের প্রোটিন শরীরে পেপটাইড বা প্রোটিন হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়। এটি পেপটাইড হরমোন বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যেমন শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, এনার্জি, মেটাবলিজম, ক্ষুধা, স্ট্রেস এবং প্রজনন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গবেষকরা বলছেন, নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাসে শরীরে হরমোনের মাত্রা ঠিক থাকে। ওজনের সঙ্গে হরমোনের গভীর যোগসূত্র রয়েছে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখলেও হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এড়িয়ে চলা সম্ভব।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতার অন্যতম বড় কারণ হলো পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকারিতাও ব্যাহত হয়। তাই ঘুমের অভাবে হরমোন নিঃসরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে যা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই এই সমস্যা সমাধানে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।
গবেষণা বলছে, অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া মাধ্যমে অনেক হরমোন উৎপাদিত হয়। তাই অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সুষম খাদ্যসহ প্রচুর পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
এ ছাড়া বি কমপ্লেক্স ভিটামিন শরীরে স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে দূরে থাকতে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ৩ লিটার পানি পান নিশ্চিত করুন। এই অভ্যাসও শরীরে হরমোনের সমতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সূত্র: বোল্ড স্কাই