Published : Tuesday, 21 June, 2022 at 9:32 PM, Count : 255

শেষ রক্ষা হলো না যশোর সদর উপজেলার রুদ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি সরকারের। এবার তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। উপপরিচালকের স্বাক্ষর জাল করে দু’ শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান, দুদকের জাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে উচ্চ আদালতে রিট ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করা মামলা এবং ওই মামলায় পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৬ জুন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যশোর শিক্ষাবোর্ড। ২১ জুন বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং একজন শিক্ষক প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে দু’জন শিক্ষককে নিয়োগ দেন। ওই দু’ শিক্ষককে এমপিভুক্তির সময় দুর্নীতির বিষয়টি গ্রামের কাগজের দৃষ্টিতে আসে। এ বিষয়ে দৈনিক গ্রামের কাগজে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে শিক্ষা বিভাগসহ স্কুল পরিচালনা কমিটি। ওইসময় তার সহযোগী হিসেবে স্কুলের তৎকালীন সভাপতি ইব্রাহিমের নামও উঠে আসে। বেরিয়ে আসে দুর্নীতির নানা কাহিনী। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে মৃণাল কান্তির নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ ঘটনায় স্কুলের সামনে মানববন্ধন হয়। স্কুল কমিটি তাকে শোকজ করে। মৃণাল কান্তি ওই সময় শোকজের মনগড়া জবাব দেন। একপর্যায়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই বছরের ১০ জানুয়ারি স্কুল কমিটির দাতা সদস্য রুদ্রপুর গ্রামের লুৎফর রহমান বিশ্বাস বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালতের আদেশে পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর ফসিয়ার রহমান মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা উঠে আসে। এক বছর এক মাস পর রোববার আদালতে হাজির হলে মৃণাল কান্তি সরকারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তির বিরুদ্ধে স্কুলের চার লাখ ৯৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরও একটি মামলা করা হয়। পিবিআই তদন্ত করে ওই মামলারও সত্যতা পায়। এরমধ্যে মৃণাল কান্তি দুদকের দু’টি ভুয়া চিঠি দিয়ে উচ্চ আদালতে রিট মামলা করে সাময়িক বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশনা আনেন। পরে সেই চিঠিও জাল বলে প্রমাণিত হয়। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষাবোর্ডের ৭৯ তম আপিল এন্ড আর্বিট্রেশন কমিটির সভায় তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় স্থায়ীভাবে বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গ্রামের কাগজে মৃণাল কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়।