
স্বপ্নের বহুমুখী পদ্মা সেতু ব্যবহারে শতভাগ সুবিধা পেতে যশোর ঝিনাইদহ ও মাগুরার যাত্রীদের আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কেননা, নড়াইলের কালনা ব্রিজ এখনো নির্মাণাধীন। পদ্মা সেতুর সাথে সরাসরি বাস যোগাযোগ আপাতত নড়াইল দিয়ে হচ্ছে না।
২৫ জুন মাহেন্দ্রক্ষণের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা সুদুরপ্রসারী চিন্তার ফসল পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ক্ষণ গুণছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। পরিবহন, কৃষি, মৎস্য, শিল্প, সবজি, চিকিৎসা, বৈদেশিক বাণিজ্যসহ সব ধরনের ব্যবসায় সুবিধা বাড়ার ব্যাপারে ইতিমধ্যে বিশেষজ্ঞরা মতামত ব্যক্ত করেছেন। সে অনুযায়ী বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে ওইসব সেক্টরে। এর মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীসেবা ও পরিবহন সেক্টরে মোটা দাগে সুবিধা আসছে। স্বপ্নের বহুমুখী পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে উন্নয়ন ও সুখবরের কথা নানা মহল থেকে শোনা গেলেও যশোরের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা শোনালেন অনেকটা হতাশার কথা। তাদের দাবি, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রী সুবিধা ও পরিবহন সেক্টরে শতভাগ ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে নড়াইলের কালনা ব্রিজ দ্রুত নির্মাণ সম্পন্ন করতে হবে। একইসাথে নড়াইল রোডকে করতে হবে প্রশস্ত ।
এ ব্যাপারে যশোর ইন্টারডিস্ট্রিক বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পবিত্র কাপুড়িয়া জানিয়েছেন, নিঃসন্দেহে পদ্মা সেতু যশোর খুলনা সাতক্ষীরা অঞ্চলের পরিবহন সেক্টরকে গতিশীল ও লাভজনক করবে। সর্বোচ্চ যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে পারবে। তবে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গার যাত্রী সাধারণ শতভাগ সুবিধা এখনই পাবেনা। খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাটের যাত্রীরা সুবিধার আওতায় আসছে। যশোর পরিবহন সেক্টর হতাশায় রয়েছে বলা চলে। কেননা নড়াইল রোডের অবস্থা ভালো না। আবার কালনা ব্রিজের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যেতে হলে খুলনা হয়ে যেতে হবে যশোর এবং উপরে উল্লেখিত চার জেলার যাত্রীদের। যশোর নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতুতে সরাসরি বাস যোগাযোগ করতে হলে দ্রুতই কালনা ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু একই কথা জানিয়েছেন। তার দাবি, নড়াইল রোড দ্রুত চার লেন করতে হবে। আবার কালনা ব্রিজ সম্পন্ন না হলে কার্যত পদ্মা সেতু যশোরের মানুষের বেশি উপকারে আসবে না। সাতক্ষীরা খুলনার যাত্রীরা এখন শতভাগ সুবিধা পাবেন। আবার ঝিনাইদহ মাগুরাসহ কয়েকটি জেলার যাত্রীরা আছেন দোটানায়। প্রথম প্রথম শখের বসে কেউ কেউ খুলনা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে যাবেন। পরে তারা সেই মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে দৌলতদিয়া ঘাট ধরবেন। কাজেই কালনা ব্রিজটি অতি জরুরি।
এদিকে, ঈগল পরিবহনের যশোর গাড়িখানা কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা আলিমুজ্জামান কামাল ও মানিক সাহা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু যশোর মাগুরা ঝিনাইদহের যাত্রীদের জন্য এখন কোনো সুখবর না। নড়াইল হয়ে সরাসরি বাস গেলে যাত্রীসেবার মান বাড়বে। পদ্মা সেতুর জন্য খুলনা হয়েই যেতে হবে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরের যাত্রীদের। এ কারণে এ অঞ্চলের যাত্রীরা এখনো দোটানায় রয়েছেন, তারা দৌলতদিয়া হয়ে যাবেন, নাকি খুলনা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাবেন।
এদিকে, কালনা ব্রিজ নির্মাণের বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী জানিয়েছেন, নড়াইলের কালনায় মধুমতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু। এই সেতু চালুর সম্ভাবনা রয়েছে আগামী সেপ্টেম্বরে। এ পর্যন্ত সেতুর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।