
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বক্তব্যে তিনি পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানানোর পর বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে সে কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষকে স্যালুট জানাই।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার পরিবারের নিহত সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় তিনি দেশবাসীর প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানান।
সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে আবেগাপ্লুত দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, ‘জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।
‘আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াব না। জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শিখান নাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের শক্তিই বড় শক্তি। সে শক্তিতে বলীয়ান হয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেকের মতামত ছিল, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু কীভাবে নির্মাণ করা যাবে, কিন্তু জাতির পিতা বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে শিখিয়েছেন। সে জায়গা থেকে বাংলাদেশ নির্মাণকাজ শুরু করে সেতু করে দেখিয়েছে।
এর আগে শনিবার সকালে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উদ্দেশ্যে মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশ স্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশ্যে হেলিকপ্টার যোগে রওয়ানা দেন তিনি।
সুধী সমাবেশে উপস্থিত রয়েছেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা
দেশের বৃহত্তম স্ব-অর্থায়নকৃত মেগা প্রকল্পের জমকালো উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির সময়সূচি অনুযায়ী, বেলা ১১টায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধন-খাম ও সিলমোহর প্রকাশ করবেন। ১১টা ১০ মিনিটে টোলপ্লাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে টোল দিয়ে ১১টা ১৫ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন এবং মোনাজাতে অংশ নেবেন।
১১টা ২৩ মিনিটে সড়ক পথে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ম্যুরাল চত্বর হতে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু পার হয়ে তিনি ১১টা ৪৫ মিনিটে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন এবং মোনাজাতে অংশ নেবেন।
সেখান থেকে ১১টা ৫০ মিনিটে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ির উদ্দেশ্যে সড়ক পথে যাত্রা করবেন। বেলা ১২টায় কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নেবেন।
দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে জনসভা শেষ করে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের সার্ভিস এরিয়া-২ এর উদ্দেশ্যে সড়কপথে যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে কিছু সময় অবস্থান করবেন। এরপর জাজিরা প্রান্ত হতে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।