
সম্প্রতি পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটিরও বেশি অর্থ ও সোনার গয়না উদ্ধার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
সর্বশেষ বুধবার (২৭ জুলাই) যখন বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটের অভিযান চলছিলো তখন ইডি-এর দপ্তরে বসে টেলিভিশনে ‘লাইভ’, স্ক্রিন জুড়ে টাকার পাহাড়ের ছবি দেখে ভেঙে পড়েন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানিয়েছে আনন্দবাজার। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে দপ্তরের কনফারেন্স হলে একসঙ্গে বসিয়েই জেরা করা হচ্ছিল পার্থ ও অর্পিতাকে। ওই ঘরেই চলছিল টিভি, বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে যখন ইডির অফিসারেরা ভিতরে ঢুকে পড়েন, তখন উত্তেজিত হয়ে পড়েন অর্পিতা।
ইডি সূত্রের দাবি, টিভিতে ওই ছবি দেখে উত্তেজিত অর্পিতা পার্থের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠেন, ‘স্যর! এত টাকা আমার বাড়িতে রাখা হয়েছিল?’ এর পরে ইডি-র অফিসারদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘বিশ্বাস করুন, এত টাকার কথা আমি জানতাম না।’ টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে টাকা নিয়ে যেতেন পার্থের প্রতিনিধি। সেই টাকা রেখে তারা চলে আসতেন।
ইডি সূত্র জানায়, বুধবার টিভিতে টাকার পরিমাণ দেখার পরে অর্পিতা দাবি করেন, ‘এর মধ্যে (বাজেয়াপ্ত হওয়া টাকা) এক টাকাতেও হাত দেয়ার অধিকার ছিল না আমার। গয়না আলমারির লকারে রাখা থাকত। কয়েকটা হয়তো আমি পরেছি। কিন্তু এই গয়নাতেও আমার কোনও অধিকার ছিল না।’
অর্পিতা আরও বলেন, ‘স্যার। আমার নামে সম্পত্তি-কোম্পানি সবই রয়েছে। প্র্যাকটিক্যালি আই অ্যাম নট অ্যান ওনার অব দিজ প্রপারটিজ। আই অ্যাম পেড স্টাফ, অ্যান্ড অলসো আ কেয়ারটেকার।’ ইডি সূত্রের দাবি, এই সময়ে পার্থ নাকি চুপ করে বসেছিলেন।
তদন্তকারী সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অর্পিতা সব দোষ এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপরেই চাপাচ্ছেন। তার সমস্ত দাবি যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে। অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার জন্যও তিনি এমনটা বলে থাকতে পারেন। অর্পিতার বয়ানের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পার্থকে লাগাতার জেরা করা হয়েছে।’
ইডি জেরায় অর্পিতা জানান, কয়েক বছর আগে টলিগঞ্জের কয়েক জন অভিনেতা বন্ধুর মাধ্যমে একটি অনুষ্ঠানে পার্থের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল এরপর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ডায়মন্ড সিটিতে তার থাকার ব্যবস্থা করেন পার্থই। অর্পিতার বক্তব্য অনুযায়ী, সম্পত্তি, ফ্ল্যাট এবং তার নামে তৈরি সংস্থার সবকিছুই পার্থের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এক হিসেবরক্ষক মাধ্যমে করা হয়েছিল। শুধু তার প্যান, ভোটার আইডি, আধার কার্ড ও আরও কিছু নথি নাকি অর্পিতার কাছ থেকে নেয়া হয়েছিল। তার গাড়ির চালকের কাছ থেকেও একই নথি নেয়া হয়েছিল।
এর পর তার ও সেই গাড়িচালকের নামে বেশ কয়েকটি সংস্থা খোলা হয়েছে এবং এই সবই নাকি তিনি পরে জানতে পারেন। তদন্তকারীদের দাবি, এ সবই পার্থের সামনে বসেই বলেন অর্পিতা এবং পার্থ পাল্টা কিছুই বলেননি।