
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করতে রাত ৮টার পর থেকে দোকানপাট এবং বিপণিবিতান বন্ধের নির্দেশনা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না যশোরে। যতদিন যাচ্ছে নিয়ম ভাঙার প্রবণতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় পার হলেও নানা অজুহাতে বন্ধ করা হচ্ছেনা অনেক দোকানপাট।
বৃহস্পতিবার রাত আটটার পর যশোর শহরের মুজিব সড়ক, এইচএমএম রোড, এমকে রোড, কাপুড়িয়াপট্টি, গোহাটা রোড, আরএন রোড, মাইকপট্টিসহ বিভিন্ন পাড়ামহল্লা ঘুরে দেখা গেছে কিছু কিছু দোকান ও মার্কেট বন্ধ হলেও, বন্ধ না করা দোকানের সংখ্যা একেবারে কম না। রাত আটটার পর কালেক্টরেট মার্কেটের দোকানপাট বন্ধ হলেও খোলা থাকছে টাউনহল মাঠের উত্তর দিকের দোকানপাট। এদিকে, এইচএমএম রোডের কিছু জুতা ও ছিট কাপড়ের দোকান খোলা পাওয়া যায়। ব্র্যান্ডেড বড় জুতার শোরুমও বন্ধ হচ্ছে না নির্দিষ্ট সময়ে। হাটচান্নির বিভিন্ন কাপড়ের দোকান খোলা ছিল রাত আটটা ৪৫ মিনিটের পরও।
এ বিষয়ে হাটচান্নির দোকানিরা জানান, অন্যদিন নির্দিষ্ট সময়ে দোকান বন্ধ করেন তারা। বৃহস্পতিবার হিসাব সংক্রান্ত বিষয়ের কারণে একটু দেরি হয়। তবে, আটটার পর তারা আর কেনাবেচা করেন না বলে দাবি করেন।
কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেট কমপ্লেক্সের এক দোকানি জানান, রাত আটটা বাজলেই তাদের মার্কেটের আলো নিভে যায়। ৮টা ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে মার্কেট জনমানবহীন হয়ে যায়। নিজেরা নিয়ম মেনে অন্যদের মানতে তারা উৎসাহিত করছেন বলে জানান।
এদিকে মাইকপট্টির বিভিন্ন দোকানপাট রাত নয়টার পরও বাইরের একপাশে তালা লাগিয়ে কেনাবেচা চলছে। রাত সাড়ে আটটার পরও খোলা থাকছে সিভিল কোর্ট মোড়ের বিভিন্ন ফটোকপির দোকান।
গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের সই করা এক চিঠিতে ২০ জুন রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান ও কাঁচাবাজার খোলা না রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১১৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালন করে সারাদেশে রাত ৮টার পর দোকান শপিংমল মার্কেট বিপণিবিতান ইত্যাদি খোলা না রাখার বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
শ্রম আইন অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠান রাত ৮টার পর খোলা রাখা যাবে সেগুলো হচ্ছে, ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমানবন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস; তরি-তরকারি, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান; ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান; দাফন ও অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান; তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান; পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটরগাড়ির সার্ভিস স্টেশন; নাপিত এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান; যেকোনো ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা; যেকোনো শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি আলো অথবা পানি সরবরাহ করে এবং ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার।