gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ৯ মে ২০২৪ ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
স্বরূপে ‘স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ’

❒ ৫১ বছর পর সংবর্ধিত হলেন আলোকচিত্রী হামিদ রায়হান

প্রকাশ : সোমবার, ১২ ডিসেম্বর , ২০২২, ১২:১০:১৪ এ এম
স্বপ্না দেবনাথ : :
GK_1670782263.jpg
মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার অনেকগুলো আবেদনের একটি পূরণ হলো যশোরবাসীর। দেশের প্রথম স্বাধীন জেলা যশোরে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রবাসী সরকারের প্রথম জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। টাউনহল মাঠের সেই জনসভাস্থলটি ‘স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ’ নামে পরিচিত। শুধু যশোর না, দেশবাসীর জন্য ১১ ডিসেম্বর গৌরবের দিন। কারণ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে এইদিনে যশোরে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় সমাবেশ। ইতিহাসকে সমুন্নত রাখতে জনদাবির মুখে ৫১ বছর পর রোববার জনসভার সেই ইতিহাস সমৃদ্ধ ‘স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ’ পুনর্নির্মাণ করে উদ্বোধন করা হয়েছে। সম্মাননা জানানো হয়েছে জনসভার ছবি তোলা দেশের একমাত্র আলোকচিত্রী কুষ্টিয়ার সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ রায়হানকে।
যশোর ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে রোববার বিকেলে পুনর্নির্মিত স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ উদ্বোধন এবং সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় সংগীতের পর প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ এবং টাউনহল মাঠের উন্নয়ন কাজের ফলক উন্মোচন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি।
পরে স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চে যশোরের জেলা প্রশাসক ও ইনস্টিটিউটের সভাপতি তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন যেখানে যা আছে তা সংরক্ষণ করতে হবে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এবং মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও যশোরবাসীর চাওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেন। মঞ্চ এবং টাউনহল মাঠের উন্নয়ন কাজে দেড়কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলন, মঞ্চ পুনর্নির্মাণের জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল এরমধ্যে ৪৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ৮৮ লাখ টাকার টেন্ডার রয়েছে। এই টাকা টাউনহল মাঠের সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজে ব্যবহার হবে। প্রধান অতিথি আরও বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভার নেওয়ার পর দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।   
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর যশোরের মুজিব বাহিনী-বিএলএফের অধিনায়ক আলী হোসেন মনি, সহঅধিনায়ক অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও পৌরমেয়র হায়দার গণি খান পলাশ। আবেগ আপ্লুত হয়ে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন সংবর্ধিত অতিথি আলোকচিত্রী আব্দুল হামিদ রায়হান। ইনস্টিটিউটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রাসু ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটু।
দেশপ্রেম আর আপন জেলার গৌরবময় ইতিহাসের গর্বে গর্বিত হয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হন যশোরের বীরমুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, জনপ্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
আলোচনা ও সম্মাননা পর্ব শেষে যশোরের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল আব্দুল হামিদ রায়হানের ‘সেই’ ইয়াসিকা ৬৩৫ মডেলের ক্যামেরা। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সেই জনসভায় তোলা ছবিগুলোর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয় অনুষ্ঠানস্থলে।

আরও খবর

🔝