
ওষুধের বাজার খ্যাত যশোরের ঐতিহ্যবাহী বঙ্গ বাজার যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে। ঘটাতে পারে জান-মালের ক্ষতি। ভবনটির বয়স অর্ধ শতক হলেও ইতোমধ্যে দোতলার ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রড বেড়িয়ে পড়েছে। নিচতলার অবস্থাও একই। তৃতীয় তলা হয়ে পড়েছে বসবাস অযোগ্য।
ভবনের এই ভঙ্গুর অবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে একটি বেসরকারি ব্যাংক গত চার বছর আগেই ভবন ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেছে। আর যারা রয়েছেন, তারা নানা কারণে যেতে পারছেন না।
ভবনটি সংস্কার নয়, পুরোপুরি ভেঙে ফেলে পূণনির্মাণ না করলে যে কোনো সময় বড় ধরণের অঘটন ঘটাতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিশিষ্ট রাজনীতিক ও বঙ্গবন্ধুর ঘণিষ্ট সহচর হাজী গোলাম মোরশেদ যশোর শহরের এম কে রোডে তাঁর একক মালিকানায় ১৯৬৪ সালে একটি মার্কেট নির্মাণে উদ্যোগী হন। সে কাজ পরিপূর্ণতা পায় ১৯৭৪ সালে। যা সে সময়ের একটি আধুনিক মার্কেট ‘বঙ্গ বাজার’ নামে পরিচিতি পায়। তিন তলা বিশিষ্ট মার্কেটটি বঙ্গ বাজার নামেই এখনো দাঁড়িয়ে আছে। মার্কেটটির নিচ তলায় ২৭টি দোকান ঘর রয়েছে। যা সকলের কাছে প্রাচীন ওষুধের মার্কেট নামে পরিচিত। দ্বিতীয় তলায় বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক ইয়াকুব আলী মোল্লা ও

ডাক্তার আব্দুর রবের চেম্বার ছাড়াও রয়েছে সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের অফিস। তৃতীয় তলা বর্তমানে বসবাস অযোগ্য হওয়ায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। এ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ছিলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। প্রায় চার বছর আগে জান-মালের নিরাপত্তা বিবেচনায় এনে ব্যাংকটি অন্যত্র চলে যায় বলে মার্কেট ঘণিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হাজী গোলাম মোরশেদের শারিরীক অবস্থা এমন পর্যায়ে যে, তিনি মার্কেটটি দেখভাল করতে পারেন না। তাঁর চার মেয়ে ও জামাই এবং অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এটি দেখাশুনা করেন। তাদের কেউ কেউ মার্কেটের এ অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা মার্কেটটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের পক্ষে মত দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে হাজী গোলাম মোরশেদ প্রতিবেদককে বলেন, আমি নিজে যেতে না পারলেও বঙ্গ বাজারের খোঁজ-খবর রাখি। মার্কেটের যে অবস্থা হয়েছে তাতে কোনো দোকানীকে নতুন করে ভাড়া দেয়া অমানবিক। কাজেই এটি অচিরেই ভেঙে আধুনিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নিচ্ছি। তবে নতুন ভবন হলেও এতে ভাড়াটিয়ারা বা দোকানীরা যারা যে অবস্থানে আছেন, তিনি সেখানেই থাকবেন। তাদের শংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।