gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
বকচরে আলিফ তুহিন সাদ্দাম মাদক সিন্ডিকেট অপ্রতিরোধ্য
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৮:৫৯:০০ পিএম , আপডেট : সোমবার, ২৯ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:০৪:৩৭ পিএম
বিশেষ প্রতিনিধি:
GK_2024-04-16_661e9296336fc.jpg

যশোরের কবচর এলাকায় কয়েকটি মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সক্রিয়ভাবে মাদক বিকিকিনি করে চলেছে। ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ নানা ভার্সনের মাদক বিক্রি করছে চক্রটি। আলিফ, তুহিন, সাদ্দাম সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের অব্যাহত এই অনৈতিক কারবারের কারণে স্থানীয় যুবসমাজ মাদকে বুদ হচ্ছে। আর এই অপ্রতিরোধ্য মাদক কারবারে বাধ সাধলে তাকে শিকার হতে হচ্ছে মারপিট ও হত্যার হুমকির।
সম্প্রতি এক মোটর শ্রমিককে হত্যার চেষ্টা করেছে চক্রটি। এই কারবার ও সেবনের কারণে এলাকার আইনশৃংখলার অবনতির পাশাপাশি শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবক মহল। তারা দ্রুত ওই এলাকায় পুলিশি টহল বাড়িয়ে চিহ্নিত ওই মাদক কারবারীদের আটক ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূূত্র জানিয়েছে, সমানে মাদক বিকিকিনি ও সেবন চলছে যশোরের বকচরের কয়েকটি স্পটে। করিম পাম্প এলাকা, কবরস্থান ও টিবি হাসপাতাল এলাকায় রয়েছে সিন্ডিকেটের অনেকগুলো ডেরা। ওই এলাকায় পুলিশের নজরদারি না থাকায় মাদকসেবীরা সেবনের নিরাপদ জায়গা হিসেবে চলে যাচ্ছে। ডজনখানেকের একটি চক্রের অপ্রতিরোধ্য বিচরণ ওইসব স্পটে। সিন্ডিকেট ভোলপাল্টে অনেকগুলো স্পটে বিকিকিনি ও সেবন করাচ্ছে। আবার নেশাখোরেরা মোবাইল ফোনে যে কোনো ধরনের মাদকের অর্ডার করলেই ডেলিভারি ম্যানের মাধ্যমে মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেলযোগে দ্রুত পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তাদের ঠিকানায়।
বকচর কবরস্থান রোডের তরিকুল হত্যা মামলার আসামি আলিফ, একই এলাকার তুহিন, বিহারী কলোনির আশিক, স্কুল পাড়ার আফজাল হত্যা মামলার আসামি জাহিদ, এলাকার রাজা, সম্রাট, চোর নয়ন, চোর শাওন, চৌধুরী পাড়ার দুলারা রানা, রাব্বি, কুতুব উদ্দিন, ইমদাদুল, হুঁশতলার নয়ন, নীলগঞ্জের টাক ইব্রাহিমসহ এক ডজন মাদক ব্যবসায়ী চক্র এখন অপ্রতিরোধ্য।
এই চক্রের অধিকাংশের নামে মামলাও আছে। তবে তাদের টনক নড়েনি। শহরতলীতে পুলিশি অভিযান কম হওয়ার সুযোগ নিয়ে এ চক্রটি এখনও মাঠে রয়েছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বকচরের কয়েকটি ব্যস্ত মোড়ে চক্রের সদস্যরা মাদক হাতবদল করছে। চক্রের দু’জন মোবাইলে নিয়ে দুরে থাকছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন দেখলেই আগে খবর দেয়া ওই মোবাইলধারীর কাজ। চক্রের সরবরাহ করা ইয়াবায় বুদ হচ্ছে এলাকার অনেক পরিবারের উঠতি যুবকেরা। ওই মাদক সিন্ডিকেটের কারণে এলাকার যুব শ্রেণি নষ্ট হচ্ছে। চিহ্নিত কিছু নেশাখোর নিয়মিত হুমড়ি খেয়ে পড়ছে শক্তিশালী ওই চক্রের ডেরায়, আর বুদ হচ্ছে, হচ্ছে বেসামাল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে মাদক ব্যবসা নিয়ে যুবকদের রয়েছে আরও দুটি সিন্ডিকেট। প্রায় সময় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হাতাহাতি সংঘর্ষ হলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার ভয়ে পুলিশের কাছে মুখ খোলেনা। সম্প্রতি ওই আলিফ তুহিন সাদ্দাম চক্রের মাদক কারবারে বাধা দেয়ায় এক মোটর শ্রমিককে মারপিট করে তারা। তার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ। চক্রটির ভয়ে স্থানীয় দোকানীরা থাকেন তটস্থ।
তথ্য মিলেছে, খরিদ্দাররা মোবাইল ফোনে যে কোনো ধরনের মাদকের অর্ডার করলেই দ্রুত পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তাদের ঠিকানায়। বিকাশের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ এমনই কায়দায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। যশোরের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মাদকের চালান নিয়ে আসছে এই আলিফ গং। শার্শার রুদ্রপুর-কাশীপুর, গোগা, শিকারপুর, হরিশচন্দ্রপুর, বেনাপোলের পুটখালী, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, সাদিপুর, বড়আঁচড়া, রঘুনাথপুর ও চৌগাছা সীমান্ত থেকে বকচরে মাল আনা হচ্ছে।
স্থানীয়দের আরো অভিযোগ, বকচর এলাকায় অবাধ মাদক বিকিকিনির কারণে ছাত্র ও যুবসমাজ চরমভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। ছাত্রদের কেউ কেউ সেবনসহ এই ব্যবসায় জড়িয়ে তাদের পরিবারকেও অতিষ্ট করে তুলছে। এ ব্যাপারে তারা পুলিশের উর্ধŸতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। মাদক সিন্ডিকেটের লোকজন আটক হচ্ছে প্রায়ই। আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহন করা হচ্ছে। খোঁজখবর নিয়ে উল্লেখিত অভিযুক্ত মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।

আরও খবর

🔝