gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
যশোরাঞ্চলের তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪২ ডিগ্রি
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:৩৩:০০ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-04-16_661e9abf014c4.webp

কয়েকদিনের টানা তাপদাহের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে প্রাণিকূল। তার উপর আরও খারাপ খবর দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ২০ এপ্রিলের পরে তাপদাহ আরও বাড়তে পারে। এমনকি ২৩ এপ্রিল থেকে যশোর-কুষ্টিয়া এবং পাবনা-ঈশ্বরদী এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। আপাতত আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা বলছেন।
মঙ্গলবার যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৪০.৬ ডিগ্রি।
একাধিক আবহাওয়াবিদ বলেন, এপ্রিল এমনিতেই উষ্ণতম মাস, এ মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে, নদী অববাহিকা থেকে জলীয়বাষ্প এসে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টির কারণে কোথাও তাপমাত্রা কমতে পারে, আবার কোথাও বাড়তে পারে। তবে, খুব একটা পরিবর্তন হবে না বলে মনে করছেন তারা। আগামী তিনদিন আবহাওয়া প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
ইতিমধ্যে তাপদাহের কারণে দেশের ৫৪ জেলায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে তাপমাত্রা। বর্তমানে চরম গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া বিরাজ করছে। এ অবস্থা দেশের প্রায় সব এলাকায়। ৫৪ জেলায় বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার খেপুপাড়ায় ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। এতকিছুর পরও জীবিকার জন্য বের হচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ।
গত চারদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে মানুষ বাইরে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। সকাল ১০টার পর থেকে রোদে তেতে উঠছে চারপাশ। চুয়াডাঙ্গায় অধিকাংশ দিনেই তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির ওপর থাকছে।
ঈদের পরদিন থেকে তীব্র তাপদাহের কারণে চরম বিপাকে পড়েছে যশোরসহ বিভিন্ন জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা বলছেন, প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে রাস্তায় বের হওয়া যাচ্ছে না। কাজ করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। আবার পেটের দায়ে কাজ না করেও উপায় নেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অবস্থা আরও ভয়াবহ। দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের এই তিন জেলার অধিকাংশ জায়গায় তাপমাত্রা থাকছে ৩৮ ডিগ্রির ওপর।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে শিশুরা বেশি অসুস্থ হচ্ছে। এ অবস্থায় শিশুদের নিয়ে বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। তাপপ্রবাহে বেশি আক্রান্ত হয় শিশু ও বৃদ্ধরা। আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগের দু’ এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে, দেশজুড়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় আজ, কাল ও পরশু বৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টিও হতে পারে কোথাও কোথাও। মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
এদিকে, তীব্র তাপদাহের মধ্যে যশোরাঞ্চলের অনেক জায়গায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। পানি নিয়ে এক প্রকার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। যা মরার ওপর খাড়ার ঘা। তার উপর বিদ্যুতের লোডশেডিং অবস্থাকে ভয়াবহ করে তুলেছে। সংকটে থাকা মানুষ যে যার মতো করে পানি সংগ্রহ করছেন। সেক্ষেত্রে তাদের প্রতিবেশীর সাবমারসিবল কিংবা মাঠের স্যালোমেশিনের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যদিও স্যালোমেশিনে কাক্সিক্ষত পরিমাণ পানি উঠছে না। বিএডিসির সেচ বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, যশোরাঞ্চলে পানির স্তর নেমেছে ২০ থেকে ৩০ ফুট। যে কারণে অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি মিলছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত টিউবওয়েলগুলোতে পানি পাওয়া যাবে না। এই অবস্থায় সবচেয়ে কষ্টে আছে গ্রামের মানুষ। শহরের মানুষ সাপ্লাইয়ের পানি দিয়ে বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে পারলেও গ্রামের মানুষের সেই সুযোগ নেই।

আরও খবর

🔝