শিরোনাম |
❒ দু"একজন উপদেষ্টা এবং প্রশাসন গোপনে গোপনে একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা করছেঃ মিয়া গোলাম পরওয়ার ছবি: এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ,পাইকগাছা ( খুলনা )
খুলনার পাইকগাছায় ঐতিহাসিক ছাত্র-যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অস্থিরতা বাড়ছে। দুই একজন উপদেষ্টা এবং প্রশাসন গোপনে গোপনে ষড়যন্ত্র করে একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা কেমন যেন একটা চাপের মধ্যে আছে। তবে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের গোপন পথ ছেড়ে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার স্বার্থে তিনি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি আরো বলেন, ২৪ এর গণ আন্দোলনের ছাত্র-জনতার যুদ্ধ ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আর আমাদের দ্বিতীয় যুদ্ধ হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে। সেই দ্বিতীয় যুদ্ধে ছাত্র-জনতাকে জাতীয় সংসদের নির্বাচনের মাধ্যমে ইসলামের পক্ষের শক্তিকে পাঠাতে হবে। সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, "জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতায় গেলে প্রথম কাজ হবে বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে এমন ব্যবস্থা চালু করা, যাতে সবার শিক্ষা নিশ্চিত হয়। দ্বিতীয় কাজ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন।" তিনি আরও বলেন, সুবিচার প্রতিষ্ঠায় কুরআনের আইনকে সংসদে পাঠাতে হবে এবং কুরআনের ভিত্তিতে সমাজ গঠন করতে হবে। এজন্য তিনি দাড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় খুলনা জেলার পাইকগাছা সরকারি কলেজ মাঠে পাইকগাছা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ঐতিহাসিক ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
পাইকগাছা উপজেলা আমীর মাওলানা সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক খুলনা-৬ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।
পাইকগাছা উপজেলা সেক্রেটারি আলতাফ হোসেনের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবু জার আল গিফারী, মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও গাউসুল আযম হাদী, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী, মাওলানা আমিনুল ইসলাম ও অধ্যাপক নূরুজ্জামান মল্লিক, জেলা ইউনিট সদস্য মাওলানা শেখ কামাল হোসেন, কাজী তামজীদ আলম, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ ও অধ্যাপক আব্দুল মোমিন, পাইকগাছা উপজেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি আহম্মদ আলী, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা বুলবুল আহম্মদ, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল খালেক, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ মাওলানা নূরে আলম সিদ্দিকী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আব্দুল হান্নান ও মাওলানা আব্দুস সবুর, পৌরসভা আমীর ডা. আসাদুল হক ও সেক্রেটারি মিজানুর রহমান, পাইকগাছা বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও পাইকগাছা বাজার কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অমরেশ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা দক্ষিণ থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারিক মাহমুদ শিশির ও উত্তর থানা সভাপতি খালিদ মাহমুদ রেজা, হাফেজ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
গোলাম পরওয়ার বলেন, "এর আগে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিপ্লব হয়েছে, এবার সুশাসনের জন্য বিপ্লব করতে হবে। ইসলামী দলগুলোর মধ্যে এখন ঐক্য তৈরি হয়েছে-এই ঐক্য থাকলে বাকিরা বাতিলের খাতায় চলে যাবে।" নির্বাচনে জয়ী হলে জামায়াত নেতারা কোনো সরকারি প্লট, গাড়ি, বাড়ি বা অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করবেন না বলেও ঘোষণা দেন তিনি। একইসঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও এমন ঘোষণা দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
জামায়াতে এই সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, দেশবাসী অনেক শাসন দেখেছে এবার নতুন কিছু দেখতে চায়। এবার চায় লাঙল দিয়ে ধান চাষ করে নৌকায় করে বাড়ি তোলা হয়েছে এবার অন্ততঃ দাড়িপাল্লা দিয়ে তা' মেপে বুঝপর করতে হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি, অনিয়ম, অপশাসন দূর করতে আল কুরআনের শাসনের কোন বিকল্প নেই। তাই দেশের সকল ইসলামী দলের সাথে একটি বোঝাপড়া হয়েছে। সেই জোটের ভিত্তিতেই আগামী ফেব্রুয়ারিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিকের ভোটের মূল্যায়ন করতে হবে। বিগত তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি এবার অন্তত: ভোটদান নিশ্চিত করা হবে সেই প্রত্যাশা জনগণের।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আগামী নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে উল্লেখ করে বলেন, অনেকে পিআর পদ্ধতির সমালোচনা করছেন। কিন্তু যারা পিআর বোঝেন না তাদের রাজনীতি করার কিংবা ক্ষমতায় যাওয়ার দরকার নেই। প্রবাসীদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি এলাকার উন্নয়নে তাদের অবদান রাখার আহবান জানান। এ সময় তিনি কয়রা-পাইকগাছার উন্নয়নে ২০ দফার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে বলেন, জামায়াতের নেতৃত্বে ইসলামী জোট রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দু'টি উপজেলা নিয়ে সুন্দরবন জেলা গঠনসহ অন্যান্য সব সমস্যার পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে ইনশাআল্লাহ।
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর একটি রাজনৈতিক দল মনে করেছিল আগের মতো যেনতেন নির্বাচনের মাধ্যমে তারা যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় চলে যাবে। এ জন্য ফ্যাসিবাদের আমলে যতনা তাদের নেতাকর্মী খুন হয়েছে তার চেয়ে বেশি অন্তর্কলহে ৫ আগস্টের পর দলীয় নেতাকর্মী খুন হয়েছে। সুতরাং এ থেকেই মানুষ বুঝে গেছে তারা ক্ষমতায় গেলে দেশের কি অবস্থা হবে। এ জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার বার তাদের ভোট বিপর্যয় ঘটছে। এতে তারা এখন আর ভোটে আসতেও ভয় পাচ্ছে। ওই দলটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন না দেওয়ার কারণ হচ্ছে আগে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে আগের ন্যায় যেনতেনভাবে নির্বাচন দিয়ে ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করবে। কিন্তু তারা বড় দল হতে পাওে কিন্তু মানুষ এখন আর তাদের বিশ্বাস করে না। মানুষ এখন পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে। সেই জোয়ারে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।