gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ৯ মে ২০২৪ ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
রংপুরের ৫ জেলার তিস্তাপাড়ে ভয়াবহ বন্যার সতর্কতা জারি
প্রকাশ : বুধবার, ৪ অক্টোবর , ২০২৩, ০৯:৫০:০০ পিএম , আপডেট : বুধবার, ৮ মে , ২০২৪, ০৪:২২:৪৫ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
GK_2023-10-05_651db1ec35f46.jpg

❒ নিজস্ব প্রতিবেদক ছবি: রংপুর

ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিস্তা নদীরপানি হু হু করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুরের ৫ জেলায় ভয়াবহ বন্যার সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বুধবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।

এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। অসময়ে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় নদী পাড়ের মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়ে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানিয়েছেন গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশের উজানে ভারতের গজলডোবা পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২৮৫ সেন্টিমিটার এবং দোমুহুনী পয়েন্টে বুধবার সকাল থেকে ৮২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে বাড়ছে অন্য নদীর পানিও।

 

পাউবো’র তথ্য অনুযায়ী, তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিকেল ৩টায় বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করে ৫২ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া পয়েন্টে ২৮ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া দুপুর ১২টায় ব্রহ্মপুত্র নদী চিলমারী পয়েন্টে ২ দশমিক ৩৪ মিটার, ধরলা নদী কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ১ দশমিক ৮২ মিটার এবং দুধকুমার নদী পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ দশমিক ৩২ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে মধ্যরাত পর্যন্ত এবং কাউনিয়া পয়েন্টে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিপৎসীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস রয়েছে। এতে করে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ভারতে ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ড্যামে প্রচুর পানি থাকে। ওই পানি প্রবেশ করলে এই অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারতের সিকিম অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। এতে করে তিস্তা নদীতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে। বিপৎসীমা অতিক্রমের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৫২ দশমিক ৮৪ মিটারে কাছাকাছি ডালিয়া পয়েন্টে পানি তিস্তা নদীর পানি পৌঁছাতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব তথ্য প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করেছে।

এদিকে, ভয়াবহ বন্যার খবরে প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তিস্তার বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং শুরু হয়েছে। বন্যাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো।

গঙ্গাচড়া উপজেলার লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি হলে আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেহেতু ভয়াবহ বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া গেছে, তাই আমার ইউনিয়নের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং শুরু হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, আমরা ইতিমধ্যে চরে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে অনুরোধ করছি। আমি নিজে একটি চরে রয়েছি। বন্যায় যেন মানুষের জানমালের রক্ষা হয়, সেই লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করছে। বন্যা স্থায়ী হলে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা প্রদান এবং বন্যায় শেষে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে। অবস্থার অবনতি হলে সেনাবাহিনী যাতে সহযোগিতা করে এজন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।

আরও খবর

🔝