শিরোনাম |
যশোরের বাঘারপাড়ার ‘ভাঙ্গুড়া পশু হাটের’ ইজারা সংক্রান্ত জটিলতা অবশেষে কেটেছে। উচ্চ আদালতের স্থিতিবস্থা আদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় এখন থেকে হাটটি ইজারার আওতায় আনতে আর কোনো সমস্যা থাকলো না। দীর্ঘদিন ধরে একটি মহল তাদের নিজ জমিতে পশুহাট বসিয়ে অবৈধভাবে টাকা আদায় করে আসছিল। সোমবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ পশুহাটটির দখল বুঝে নিয়ে খাস আদায়ের তালিকাভূক্ত করে। দীর্ঘদিন হাটটি বেদখল থাকায় প্রায় ৬০ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় সরকার।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২১ আগস্ট স্থিতিবস্থা স্থগিত করেন আদালত। অদৃশ্য কারণে উচ্চ আদালতের রায়ের ফাইলটি আড়ালে চলে গেলে যশোর জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। গত ১২ নভেম্বর যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক পত্রে ভাঙ্গুড়া হাট সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতে কোন মামলা চলমান না থাকায় ইজারা কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেছে। নির্দেশনা মোতাবেক জমির মালিক ও পূর্বের ইজারা গ্রহীতাকে হাটের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে অবহিত করা হয়। একইসাথে নিম্ন আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্যও আদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
এ সংক্রান্ত আদেশ বাস্তবায়নে সোমবার উপজেলা হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি এক সভায় মিলিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী বাংলা বছরে হাটটি ইজারার আওতায় আনা হবে এবং তার আগ পর্যন্ত পশু হাটের খাস আদায় করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা প্রশাসন সোমবার হাটটি পরিদর্শন করে ও দখল বুঝে নেয়।
জানা গেছে, এদিন সরকারে রাজস্ব হিসাবে খাস আদায় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। ভাঙ্গুড়া হাট সরকারের তালিকাভূক্ত ছিলো দীর্ঘদিন। সপ্তাহের প্রতি সোম ও শুক্রবার হাটটি ভাঙ্গুড়া আদর্শ মহাবিদ্যালয় মাঠে চালু থাকে এবং শুধুমাত্র সোমবারই এখানে পশু বেচাকেনা হতো। প্রতি বছর এখান থেকে ৩ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করতো সরকার। এরপর ১৪২৮ বাংলা (ইংরেজি ২০২১) সালে স্থানীয় বুলবুল নামে এক ব্যক্তি ভাঙ্গুড়া পশু হাটের বৈধতা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেন। ওই বছরই ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫’শ টাকায় হাটটির ইজারা পায় স্থানীয় টিপু সুলতান। এরই সূত্র ধরে একই বছর টিপু সুলতান উচ্চ আদালতে রিট পিটিশান দায়ের করেন। একই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চত্বরে অবস্থিত পশু হাটকে অবৈধ ঘোষণা এবং হাটের স্থিতিবস্থা বহাল রেখে আদেশ দেন উচ্চ আদালত। তখন থেকে হাটের ইজারা কার্যক্রম বন্ধ হয় এবং নিজ জমিতে টিপু সুলতান হাট বসিয়ে জমা দেওয়া ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫’শ টাকা তোলার চেষ্টা করেন। তিন বছর অবৈধ পশু হাট চললেও আদালতে মামলা থাকায় প্রশাসনও এখানে ব্যবস্থা নিতে পারছিলেন না। ২০২১ সালের উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসন উদ্যোগী ভূমিকা নেওয়ার ফলে টিপু সুলতানের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে এ পশু হাট।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) হোসনে আরা তান্নি সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর উপজেলা হাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায় ভাঙ্গুড়া হাট সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পত্র জারি করা হয়েছে। এখন থেকে হাটটি সরকারি ইজারার আওতায় থাকবে। তিনি আরও জানান, বর্তমান পশুহাট থেকে পশ্চিম পাশে যশোর-নড়াইল সড়কের দক্ষিণে এ হাটটি বসবে।