শিরোনাম |
না ফেরার দেশে চলে গেলেন ষাটের দশকের অন্যতম কবি ও গীতিকার জাহিদুল হক। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন কবি গাজী রফিক।
এ প্রসঙ্গে কবি গাজী রফিক বলেন, গত মাসের ২০ তারিখ তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভার্তি হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
জাহিদুল হক গল্পকার, ঔপন্যাসিক ও গীতিকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার জন্ম ১৯৪৯ সালের ১১ আগস্ট ভারতের আসামের বদরপুর রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসক বাবার কর্মস্থলে। পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া গ্রামের ভূঞা বাড়ি।
জাহিদুল হক বাংলা একাডেমির একজন ফেলো। তিনি রেডিও ডয়েচে ভেলের সিনিয়র এডিটর ও ব্রডকাস্টার হিসেবে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন। দৈনিক সংবাদের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবেও চাকরি করেছেন। বাংলাদেশ বেতারের উপ-মহাপরিচালকও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এ কবি ও গীতিকার।
কবিতার পাশাপাশি তিনি অসংখ্য গান রচনা করেছেন। ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’ শিরোনামে প্রয়াত কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর গাওয়া জনপ্রিয় গানটি তিনিই লিখেছেন। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘স্বাধীনতা তুমি আমার বাড়িতে এসো’(শিল্পী- শাম্মী আখতার), ‘স্বপ্ন আমার কাজল পুকুর তুমি’ (শিল্পী- এন্ড্রু কিশোর), ‘যে দেশে বাতাস স্মৃতির স্পর্শে ভারী’ (শিল্পী- সুবীর নন্দী ও সামিনা চৌধুরী), ‘তোমার প্রিয়তমার কাছে তুমি ছিলে মনোহর’ (শিল্পী- সামিনা চৌধুরী), ‘কতোদিন পরে দেখা, ভালো আছো তো’ (শিল্পী- হাসিনা মমতাজ ও মোহাম্মদ হান্নান), ‘আমি তোমার ভালোবাসার খাঁচায় ধরা দেবো (শিল্পী- রুনা লায়লা) প্রভৃতি।
জাহিদুল হকের কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প ও গান মিলিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৮টিরও বেশি। তার প্রথম কবিতার বই প্রকাশ হয় ১৯৮২ সালে ‘পকেট ভর্তি মেঘ’ শিরোনামে। তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘তোমার হোমার’, ‘নীল দূতাবাস’, ‘সেই নিঃশ্বাসগুচ্ছ’, ‘পারীগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা’, ‘এই ট্রেনটির নাম গার্সিয়া লোরকা’, ‘এ উৎসবে আমি একা’ ইত্যাদি।
খ্যাতিমান এ কবি ও গীতিকারের মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।