gramerkagoj
সোমবার ● ৭ জুলাই ২০২৫ ২২ আষাঢ় ১৪৩২
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম জ্বালানী তেল পরিবেশক সমিতি যশোরের সাধারণ সভা ও কমিটি গঠন যশোরে পবিত্র আশুরা স্মরণে শহরে শোক র‌্যালী ও আলোচনা অনুষ্টিত মহেশপুরে ব্যবসায়ীকে মারধর করে মোটরসাইকেল ছিনতাই, আটক ৪ শার্শায় পুলিশের অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামী আটক যশোরে কৃষকদল নেতা তরিকুল হত্যায় আরও দুইজন আটক বাঘারপাড়ার বর্ষিয়ান আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা জুলফিকার আলীর মৃত্যু অর্ধকোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্রবিন্দু পাইকগাছার ভরত চন্দ্র হাসপাতাল রক্ষায় মানববন্ধন মোরেলগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর সোনা ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার যশোরে বড় ভাইকে হত্যার ঘটনায় ছোট ভাই আটক মব সহিংসতায় জড়িতদের ছাড় নয়
প্রাইমারি শিক্ষকদের স্বস্তি ও আমার সাংবাদিকতা
প্রকাশ : রবিবার, ২৮ জানুয়ারি , ২০২৪, ১০:২৯:০০ পিএম , আপডেট : রবিবার, ২৮ জানুয়ারি , ২০২৪, ০১:০২:৩৬ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-01-28_65b681839f3e4.png

আমি আমার ২৮ বছরের সাংবাদিকতার প্রাপ্য পেয়েছি। যশোরের আট উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অগণিত শিক্ষক যখন নিজ গরজে আমার মোবাইল ফোন নম্বর জোগাড় করে আমাকে ফোন করে আশীর্বাদ করেন, ধন্যবাদ জানান তখন আমি আপ্লুত হয়েছি। যখন আমার কর্মস্থল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বাধিক পাঠকপ্রিয় দৈনিক গ্রামের কাগজকে ধন্যবাদ জানান ফোন করে তখন সেটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। যখন নির্যাতিত অনেক শিক্ষক সরাসরি আমার সাথে দেখা করে চা খাইয়ে মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করেন এর চেয়ে আমার আর কী পাওয়ার থাকতে পারে। আমি অচেনা এসব শিক্ষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শ্রদ্ধাবনত চিত্তে শুকরিয়া আদায় করছি মহান রবের দরবারে; যিনি আমাকে ও আমার প্রতিষ্ঠান দৈনিক গ্রামের কাগজকে সম্মানিত করেছেন। করেছেন কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ।
যশোরের বর্তমান ডিপিইও মোফাজ্জেল হোসেন খান যোগদান করেই কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষকদের উপর নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড শুরু করেন। তার অত্যচার স্মরণকালের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। সম্মান নিয়ে চাকরি করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। এই অবস্থা থেকে নিষ্কৃতির পথ খুঁজতে থাকেন হাজার হাজার শিক্ষক।
নির্যাতিত শিক্ষকরা তাদের আস্থার পত্রিকা দৈনিক গ্রামের কাগজ, বিশেষ করে আমার কাছে তাদের অসহায়ত্বের কথা জানান নিষ্কৃতি পাওয়ার আশা করে। তাদের আশা ছিল, গ্রামের কাগজকে জানানোর পর যদি সংবাদ প্রকাশিত হয়, তাহলে তারা কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। শিক্ষকরা আমার কাছে ডিপিইও’র নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের সুনির্দিষ্ট তথ্য তুলে ধরেন। আমি যাচাই বাছাই করে শিক্ষকদের অভিযোগের সত্যতা পাই এবং সংবাদ প্রকাশ করি। তিন দফায় সংবাদ প্রকাশ করা হয় গ্রামের কাগজে। প্রথম দফায় ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘যশোরে শিক্ষাবিভাগজুড়ে ক্ষোভের আগুন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই সংবাদে গোটা জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে। শিক্ষকরা মাঝ দরিয়ায় বাঁচার ঠিকানা পান। ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন ডিপিইও মোফাজ্জেল হোসেন খান। গ্রামের কাগজের ভূমিকায় তিনি তার কর্মকান্ডে বিরত দেন। আর হাঁফ ছাড়েন শিক্ষকরা।
দ্বিতীয় দফায় এ বছরের ১১ জানুয়ারি ‘যশোরের ডিপিইওকে সংবর্ধনার নামে কেশবপুরে ৫৮ স্কুল থেকে অর্থ আদায়, ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা’ শিরোনামে আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। তখনো অনেকেই আমাকে ফোন করে ধন্যবাদ জানান। সর্বশেষ,২২ জানুয়ারি ’২৪ তারিখে তৃতীয় দফায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার শিরোনাম ছিল,‘যশোরের ডিপিইও’র বিরুদ্ধে হতে যাচ্ছে ত্রিমুখি তদন্ত, হতে পারেন প্রত্যাহারও, সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি’। এই সংবাদটি প্রকাশের পর হাজার হাজার শিক্ষকের মধ্যে ফের আলোড়ন তৈরি হয়। তারা সকাল থেকে মোবাইল ফোনে গ্রামের কাগজকে কৃতজ্ঞতা জানাতে থাকেন। গ্রামের কাগজের প্রতিনিধি হিসেবে অভিনন্দন জানান আমাকে, সাথে সম্পাদক মহোদয়কেও। এরমধ্যে মণিরামপুর ও সদর উপজেলার কয়েকজন শিক্ষক আমার সাথে দেখা করতে আসেন। শহরে এসে আমাকে চায়ের বিনম্র আমন্ত্রণ জানান তারা। এমনভাবে চায়ের দাওয়াত দেন যে, আমি তা অগ্রাহ্য করতে পারিনি। জানিনা, শিক্ষকদের চায়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করা আমার জন্য অনৈতিক হয়েছে কিনা। গ্রামের কাগজে সংবাদ প্রকাশের পর ৮০ ভাগ নির্যাতন বন্ধ হয়েছে বলে শিক্ষকরা দেখা করে জানিয়েছেন। আমার এবং আমাদের পত্রিকার জন্য এটিইবা কম কিসে!
আমি কেমন সেটি আমাকে যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি এবং আমিই দুনিয়ার সব মানুষের চেয়ে ভালো বলতে পারি। আমার অনেক ত্রুটি বিচ্যূতি থাকতে পারে। কিন্তু শিক্ষকদের উপর ডিপিইও’র অত্যাচারের সংবাদ প্রকাশ করার উদ্দেশ্য ছিল স্রেফ শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ানো। প্রথম দফায় সংবাদ প্রকাশের পর যখন জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয় তখন সম্পাদক মহোদয় এ ধরনের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আরও বেশি বেশি সংবাদ প্রকাশে উৎসাহিত করেন। সবসময় নির্যাতিতদের পক্ষে কলম ধরার পরামর্শ দেন। তার কথায় আমিও উৎসাহিত হই।
অসংখ্য শিক্ষক যখন ফোন করে ধন্যবাদ জানান, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করেন; তখন ছোট্ট এই জীবনে, সাংবাদিকতার স্বল্প এই সময়ে আমার পাওয়ার আর কিছু বাকি থাকে বলে মনে করি না। এভাবে লাখো পাঠকের আস্থা থাকুক গ্রামের কাগজের উপর এই প্রত্যাশা যেমন রাখি; ঠিক তেমনি সব ধরনের অন্যায় অনিয়ম আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে গ্রামের কাগজ সেটিও বলতে পারি দৃঢ়কণ্ঠে।

 

 

আরও খবর

🔝