শিরোনাম |
স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন অবতার শ্রী রামকৃষ্ণের প্রধান শিষ্য। শ্রী রামকৃষ্ণ ভারতবর্ষের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অধঃপতনের এক ক্রান্তিলগ্নে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্ররোচনায় যখন সনাতনধর্মী যুবসমাজ ধর্মান্তরিত এবং ভারতীয় অতীত ঐতিহ্য পরিত্যাগ করে পাশ্চাত্য প্রভাবে প্রভাবান্বিত হচ্ছিল তখনই তিনি তাঁর গুরু রামকৃষ্ণদেবের সার্বজনীন অসাম্প্রদায়িক দার্শনিক মতবাদ 'যত মত তত পথ' প্রচার করলেন।
স্বামী বিবেকানন্দ শ্রী রামকৃষ্ণের সেই আদর্শকে ভিত্তি করে বিশ্বময় সনাতন ধর্মের অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গী প্রচার করলেন এবং একই সাথে যুব সমাজকে আত্ম প্রতিষ্ঠার জন্য নির্দেশনা দিলেন। স্বামীজি উপনিষদের বাণী 'উত্তিষ্টিত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্ নিবোধত'। 'ওঠো জাগো এবং সদগুরুর সান্নিধ্যে গিয়ে জ্ঞানপ্রাপ্ত হও'।এই আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা ও শক্তি অর্জন করে মানবকল্যাণে কাজ করার উপদেশ দিয়েছেন। বিবেকানন্দ যুব সমাজকে স্বাস্থ্য রক্ষার উপদেশ দিয়ে ব্যায়াম ক্রীড়া ও ধ্যানের মাধ্যমে অটুট শরীরের অধিকারী হতে বলেছেন। তিনি যুব সমাজকে গীতা পাঠের পাশাপাশি ফুটবল খেলার উপদেশ দিয়েছেন। একইসাথে যুব সমাজকে প্রতিবাদী হতেও উদ্বুদ্ধ করেছেন।স্বামীজি 'যত্র জীব তত্র শিব' অর্থাৎ জীবের মধ্যে ঈশ্বর বিরাজমান এই শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা প্রদান করে জীব সেবার মাধ্যমে যে ঈশ্বরের সেবা হয় সে কথা বারবার উচ্চারণ করেছেন। সমাজে শোষক এবং শোষিত দুই প্রকার মানুষ বিদ্যমান। শোষিত সমাজ ধনাঢ্য ব্যক্তিদের শোষণের শিকার হয়ে শিক্ষা, চিকিৎসা এবং বাসস্থানের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে স্বামীজী জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে দরিদ্র মানুষের সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন 'বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছো ঈশ্বর। জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।'
স্বামী বিবেকানন্দের কতিপয় বাণী
১। ঘৃণার শক্তির চেয়ে প্রেমের শক্তি অনন্ত গুণে বেশি শক্তিমান।
২।ধর্ম এমন একটি ভাব যা মনের পশুত্বকে মনুষ্যত্বে এবং মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে।
৩। মানুষের মধ্যে যে দেবত্ব প্রথম থেকেই আছে তার বিকাশই ধর্ম
৪। পরোপকারই ধর্ম। পরপীড়নই পাপ। শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম। দুর্বলতা ও কাপুরুষতাই পাপ।
৫। দরিদ্র মূর্খ অজ্ঞান কাতর এরাই তোমার দেবতা হোক। এদের সেবায় পরম ধর্ম।