gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ৭ মে ২০২৪ ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
করোনা রোগীদের উপচে পড়া ভিড়, বেসামাল হাসপাতাল
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল , ২০২১, ০৩:৫৪:৫০ পিএম
কাগজ ডেস্ক ::
1617876352.jpg
রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে এখন করোনায় আক্রান্ত রোগীরা উপচে পড়ছে। সব হাসপাতালে ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা। রোগী যারা আসছেন তাদের বেশি ভাগেরই শ্বাসকষ্ট। আর একজন রোগীকে কমপক্ষে আট-দশ দিন হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে। যার ফলে বেড খালি হয় কম। আর প্রতিদিন যেসব বেড খালি হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি রোগী আসে ভর্তির জন্য। তাই বেড না পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরতে হচ্ছে রোগীদের।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রোগী ও স্বজনে ঠাসাঠাসি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করিডর। আউটডোরে যেমন ভিড় তেমনি ভর্তি রোগীদের। আর মেডিসিন বিভাগে ভিড় যেন উপচে পড়ছে। আবার অনেকেই ছুটছে করোনা পরীক্ষার জন্য। কেউবা এসেছেন চিকিৎসককে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে।হাসপাতালের করিডরে সামসুল ইসলাম নামের কেরানীগঞ্জের আটি বাজারের এক রোগীর স্বজন বলেন, বাড়িতে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাবার বয়স ৭২ বছর। তিনি আক্রান্ত হওয়ার দুই দিন কিছুটা ভালো ছিলেন। এরপর থেকেই শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তাররা আইসিইউয়ের কথা বললেও আইসিইউ খালি না থাকায় শুধু অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে।আইসিইউ না হলেও ভাগ্যজোরে সামসুল ইসলামের স্বজনের কপালে একটি সাধারণ বেড ও অক্সিজেন জুটেছে। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পর আসা মমতাজ বেগম নামের ষাটোর্ধ্ব এক রোগীর আর জায়গা হয়নি। তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় স্বজনরা তাকে মোহাম্মদপুর থেকে এখানে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু জরুরি বিভাগ থেকেই তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। কারণ কোনো বেড খালি নেই।এবিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, কী করব? আমাদের তো কিছু করার নেই। কারণ আমাদের করোনা ইউনিটে মোট বেড সংখ্যা ২০০ (জেনারেল ১৯০ ও আইসিইউ ১০টি)। গত মঙ্গলবার কয়েকটি বেড খালি ছিলো। কিন্তু রাতের মধ্যেই তা ভরে গেছে। বুধবার কোনো বেডই খালি নেই। না আইসিইউ, না জেনারেল বেড। যারা এসেছে তাদের রিলিজ দিতে কমপক্ষে আট-দশ দিন লাগছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন হয়তো দু থেকে চারটি বেড খালি হচ্ছে। কিন্তু রোগী আসে কয়েক গুণ বেশি। তাদের ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া তো উপায় নেই।জানতে চাইলে মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, হাসপাতালে ঠাঁই হচ্ছে না। কারণ অবস্থা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আর যাদেরই শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তারাই শুধু হাসপাতালে আসছে। এমন পরিস্থিতির দিকে আমরা যাচ্ছি যেখানে অক্সিজেন সাপোর্ট চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। কারণ অনেকেরই প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ৭০ লিটার করে অক্সিজেন লাগছে।এদিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ভেতরেও রোগীতে ঠাঁসা। এই হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেডের সবগুলোই রোগীতে ভরা। আর প্রতিদিন যে কয়টি বেড খালি হয় মুহূর্তেই তা ভরে যায়। তবে বেশির ভাগই এখানে ঠাঁই না পেয়ে অন্য হাসপাতালে চলে যায় ।এবিষয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহম্মেদ বলেন, রোগী যেভাবে বাড়ছে এটা খুবই উদ্বেগের ব্যাপার। আর যতটুকু সম্ভব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু হাসপাতালে ঠাঁই হচ্ছে না।

আরও খবর

🔝