gramerkagoj
রবিবার ● ১৯ মে ২০২৪ ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজকে বন্দরে জায়গা দিল না স্পেন যশোর পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নে সভাপতি বাচ্চু, সম্পাদক মোর্ত্তজা যুবমহিলালীগ থেকে ফাতেমা আনোয়ার বহিস্কৃত মাগুরা রেলপথ যাবে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ -রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম এমপি মণিরামপুরে এমপি ইয়াকুব আলীর সংবর্ধনা শান্তির জনপদে অশান্তির অপচেষ্টা চালালে প্রতিহত করতে হবে বিপুল ফারাজীকে বিজয়ী করতে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সভা কেশবপুরে নবনির্বাজিচত চেয়ারম্যান-ওসির বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন চেয়ারম্যান পদে মোস্তানিছুর-হাবিব সমানে সমান ঝিনাইদহে এসএসসি পরীক্ষার আগেই ২১৩ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার ঝিনাইদহে আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২০, আটক ৫
বিলুপ্তির পথে মণিরামপুরের তাঁত শিল্প

❒ পৃষ্ঠপোষকতার অভাব

প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২০ মে , ২০২১, ০১:৫৯:৪৪ পিএম
তাজাম্মূল হুসাইন, মণিরামপুর (যশোর)::
1621497635.jpg
মণিরামপুরে ঐতিহ্যবাহি তাঁত শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। এক সময় এই অঞ্চলের মানুষের ঘুম ভাঙতো তাঁতের খটর-খটর শব্দে। সারাদিন বাহারী রঙের গামছা, লুঙ্গি, শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন গ্রামের গৃহবধূরা। দিনের শেষে তাঁতের তৈরি গামছা, লুঙ্গি, শাড়ি বিক্রি করতে পশরা সাজিয়ে বিভিন্ন গ্রামের হাটে-হাটে যেতেন গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ। এখানকার তৈরি কাপড় কিনতে বাইরের ব্যবসায়ীরাও আসতেন।  উপজেলার ২’শ ৪৯টি গ্রামের মধ্যে ৭৮টি গ্রামে প্রায় ৮০ হাজার এ সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস। এর মধ্যে ভরতপুর, পাড়ালা ও মুজগুন্নীতে উল্লেখযোগ্য বসবাস তাঁতী সম্প্রদায়ের। এক সময় পাড়ালা গ্রামের মানুষের ঘুম ভাঙতো তাঁতবুননের প্রাচীন যন্ত্র পিতলুম এবং খটর-খটর শব্দে। বর্তমানে সেই পাড়ালায় এখন তাঁতী সম্প্রদায়ের বাড়িতে পিতলুম ঠক-ঠকি গুলো গুটিয়ে রেখেছেন। এ গ্রামের আব্দুর রউফ একজন বড় তাঁত শিল্প পরিচালনা করতেন। সে সময় তার বাড়িতে ৬০/৬৫টি পিতলুম এবং ঠক-ঠকি যন্ত্র ছিলো। বর্তমানে তার বাড়িতে ২০/২২টি পিতলুমের কাজ চালানো হচ্ছে কোন রকম খুড়িয়ে খুড়িয়ে। পাশের বাড়ি আব্দুল্লাহ। তিনিও নির্ভরশীল ছিলেন এ পেশা থেকে উপার্জনে উপর। বর্তমানে তিনিও প্রায় ছেড়ে দিতে বসেছেন। সরেজমিনে পাড়ালা গ্রামে গেলে আব্দুর রউফ ও আব্দুল্লাহ বলেন, এ পেশায় এখন আর তাঁতীদের পেঠে ভাত যায় না। তিনি বলেন, সেই পুরনো আমলে কাপড় বুননের যন্ত্র দিয়ে কাপড় তৈরি কাজে শ্রমিকের অভাব চরমে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, শ্রমিক দুইগজ গামছা বুনলে মজুরি পাবেন ৪০ টাকা। এ মূল্য সারাদিন কাজ করলে শ্রমিকের মূল্য হয় দেড় থেকে ২’শ টাকা। তা দিয়ে বর্তমানে কোন পরিবারের সংসার চলতে পারে না। যে কারণে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে পেটের দায়ে ভিন্ন পেশায় যাচ্ছেন তারা। তা ছাড়া একখানা গামছা বুনন ও তা বিক্রিতে মালিক পান মাত্র দুই টাকা। যে কারণে এ পেশা থেকে সরে যাচ্ছেন তারা। তাঁতীরা দাবি করেন, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ ও পাবনার তাঁতীদের সাথে টিকে থাকা আদৌ সম্ভব না। তারা বর্তমান প্রযুক্তিতে পেশাকে এগিয়ে নিয়েছেন। এ কারণে মণিরামপুর নয়, বৃহৎ যশোর জেলা তাঁতীদের অবস্থা এখন নাজুক। এ পেশাকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজনীয় কাঁচা মাল, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা। তা ছাড়াও পেশার লোকদের প্রয়োজন সহজ শর্তে স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান। বর্তমান সরকার এ অঞ্চলের তাঁতী সম্প্রদায়ের প্রতি সুদৃষ্টি দিলে পূর্ব পুরুষের এ পেশা টিকিয়ে রাখা সম্ভব। একই কথা বলেছেন মুজগুন্নী গ্রামের তাঁতী নজরুল ইসলাম, শ্যামনগর গ্রামের মোস্তাজসহ অনেকেই। উপজেলা তাঁতীলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন, তাঁতী সম্প্রদায়কে অতীত পেশায় টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকারের সহযোগিত। তা না হলে অচিরেই মণিরামপুর থেকে বিলুপ্ত হবে তাঁত শিল্প। তাঁতীলীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক বাবুল আকতার বলেন, তাঁতী সম্প্রদায় এবং তাঁত শিল্পকে মণিরামপুরে টিকিয়ে রাখতে হলে এ মহুর্তে প্রয়োজন এ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের আধুনিক প্রশিক্ষণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং তাঁতী সম্প্রদায়কে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতা করা। এক্ষেত্রে সরকার আন্তরিক হলে তাঁতী সম্প্রদায়ের লোকেরা অতীত পেশা নিয়ে টিকিয়ে থাকতে পারবেন।

আরও খবর

🔝