gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
শার্শার নিজামপুর ইউনিয়নে চলছে জমজমাট জুয়া ও মাদকের আসর
প্রকাশ : সোমবার, ৫ জুলাই , ২০২১, ০৯:৩৩:৩৭ পিএম
কাগজ সংবাদ: :
1625499297.jpg
যশোরের শার্শা উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের গোড়পাড়া বনমান্দার মোড় ও আমতলা গাতিপাড়ার কয়েকটি স্পটে চলছে অবাধে জমজমাট তিন কার্ড জুয়ার আসর। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা একটি মহল ও এক জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে তিন কার্ডের জুয়া বোর্ড পরিচালনা করছে এলাকার দুটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এখানে শার্শা উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার জুয়াড়ীরা খেলায় দিনরাত বুদ হওয়ায় প্রতিদিন হাত বদল হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। জুয়ার আসরে খেলার পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন স্পটে চলছে নেশার রমরমা কারবার। গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্প থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দিন-রাত রমরমা জুয়া ও মাদকের আসর চললেও এটা বন্ধে কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায় না। তবে অভিযোগ রয়েছে উপরি মহলকে ম্যানেজ করেই চালাচ্ছে এ অনৈতিক কর্মকান্ড। স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত কয়েকবছর থেকে গোড়পাড়ার উত্তরপাড়া বনমান্দার মোড়ের মাদ্রাসা শিক্ষক কাদের হুজুরের পরিত্যক্ত বাড়ি, মোস্তফার বাঁশবাগান, বেতনা নদীর পূর্বপাড়-পশ্চিমপাড়, শুড়ার মাঠ, মৃত সিরাজুলের ছেলে জামালের বাড়ির ছাদ, পোতাপাড়ার মুক্তারের বাড়ি, ঢিবির মাঠ, বনমান্দার গ্রামের পশ্চিমপাড়া, আরমানের জামাইয়ের পরিত্যক্ত বাড়ি, বনমান্দার মোড়ে জুলুর চায়ের দোকানের পেছনে ও নেদার মেহগনি বাগানে তিন তাস নামে চলে আসছে জুয়া আসর। এলাকার উঠতি যুবক, আলোচিত জুয়াড়িরা এখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা জুয়াড়ীরা এখানে লক্ষ লক্ষ টাকার হাত বদল করছে এবং প্রতিদিন এ চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেকেই টাকা খুইয়ে হচ্ছেন নিঃস্ব। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা একটি সংঘবদ্ধ চক্র ও হলুদ সাংবাদিক মিলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালাচ্ছে নিষিদ্ধ জুয়ার আসর। এ জুয়াকে কেন্দ্র করে স্পটে নেশা গ্রহণ সমান তালে চলায় জুয়া ও মাদকের মোহে পড়ে অনেকে বসছেন পথে। চলমান জুয়া ও মাদকের আসর নিয়ে এ অঞ্চলের অভিভাবক ও তাদের পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। গোড়পড়া উত্তরপাড়া বনমান্দার মোড়ের মৃত সিরাজুলের ছেলে ও জুয়া বোর্ড পরিচালনাকারী প্রধান জুয়া সম্রাট খ্যাত শরিফুল, সহযোগী মৃত ওয়াজেদের ছেলে মিজানুর ও হবির ছেলে আলমগীর এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সূত্রটি আরো জানায়, জুয়ার আসরে ও এলাকার উঠতি যুবকদের মাঝে মদ, গাঁজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল বিক্রি করছে জুয়া সিন্ডিকেটের প্রধান শরিফুলের নিযুক্ত দু’জন স্থানীয় বাবুর স্ত্রী ফুলসিরাত ও শরিফুলের ভাগ্নে চা দোকানী জুলুর ছেলে জহিরুল, তে-বাড়িয়ার চাঁনখার ছেলে হাসান, ফকিরতলার বজলের স্ত্রী মাইমা। এদের মধ্যে ফুলসিরাত বাদে বাকি তিন জন পুলিশের হাতে মাদকসহ ধরা পড়ে কোর্ট থেকে জামিনে এসে পুনরায় মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২ জুলাই ফকির তলার বজলের স্ত্রী মাইমা নিকট থেকে এক যুবক ইয়াবা কিনে ফেরার পথে ফাঁড়ি পুলিশের হাতে আটক হয়। অপরদিকে গোড়পাড়া আমতলা গাতিপাড়ায় গত কয়েকমাস আগে থেকে পূর্বপাড়া ঘোজের মাঠ, মেহগনি বাগান, বর্তমানে গাতিপাড়া গ্রামের খালেকের ছেলে রুহিন এর বাড়িতে প্রতিনিয়ত চলছে রমরমা জুয়া ও মাদকের আসর। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভিআইপি জুয়াড়ীরা তিন তাস জুয়ার বোর্ডে মোটা অংকের টাকা হাত বদল করছে। সেই সাথে মাদক সেবন করে নেশায় বুদ হচ্ছে। এখানেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা সংঘবদ্ধ চক্র দিনরাত সমান তালে নিষিদ্ধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছে গাতিপাড়া হকের বিশ্বাসের ছেলে জুয়া সম্রাট খ্যাত তরিকুল, সহযোগী মৃত মোসলেমের ছেলে মগরব, মনছেরের ছেলে পিন্টু ও মিজান ডাকাতের ছেলে নজরুল। জুয়া আসরে ভিআইপি জুয়াড়ীদের জন্য মাদক সরবরাহ করছে জুয়া সম্রাট তরিকুল নিজেই। তরিকুল, নজরুল ও নাজিম প্রাইভেট কারসহ  গত ৩০ জুন রাত ৯টার দিকে জুয়াড়ীদের মাদক সরবরাহ কালে গোড়পাড়া পুলিশের হাতে ভারতীয় বাংলা মদসহ আটক হয়। পুলিশের দাবি, পুলিশের উর্ধ্ব:তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরীক্ষণ সাপেক্ষে জিডির মাধ্যমে আটককৃতদের ক্যাম্প থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।  ওই দুটি জুয়াড়ী চক্র স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা ও এক জনপ্রতিনিধি পুলিশ প্রশাসনের সাথে সক্ষতা রেখে চলেছেন বলে অভিযোগ আছে। যার কারণে ওই চক্র অনেকটা বেপরোয়া হয়েই এ অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গোড়পড়া উত্তরপাড়া বনমান্দার মোড়ের জুয়া বোর্ড পরিচালনাকারী প্রধান জুয়া সম্রাট খ্যাত শরিফুল ইসলাম বলেন, আপনারা যা শুনেছেন তা মিথ্যা। আমি কোন জুয়ার বোর্ড চালাই না। আপনাকে এই নাম্বার কে দিয়েছে এবং আর কোন দিন এই নাম্বারে ফোন দেবেন না বলে লাইনটি কেটে দেন। তরিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা স্পটে এসে যাচাই করে দেখে যান। নাভারণ সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, পুলিশ প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ বেশি সোচ্চার এবং আমরা জুয়াড়ীদের ধরে মামলা দিয়ে থাকি।

আরও খবর

🔝