gramerkagoj
শুক্রবার ● ৩ মে ২০২৪ ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
যশোরে কালেকশন সেন্টার করার দাবি

❒ খামারির ৩৫ টাকার দুধ ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকায়

প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২ জুন , ২০২২, ১২:১১:৪৮ এ এম
এম. আইউব:
1654107138.jpg
যশোরে পর্যাপ্ত মিল্ক কালেকশন সেন্টার না থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা। তারা দুধের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। খামারি ৩৫ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হলেও ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকায়। এই অবস্থা কাটাতে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত কালেকশন সেন্টার করার দাবি জানিয়েছেন। বুধবার বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের কাছে এই দাবি জানান তারা। রিয়াজ মেহমুদ খান পাভেল ও হুমায়ুন কবির তুহিন নামে দু’জন খামারি জানান, যশোরে সরকারিভাবে দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার কোনো কালেকশন সেন্টার নেই। এই কারণে তাদেরকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে চলতে হচ্ছে। ফলে, ওইসব প্রতিষ্ঠান যেভাবে দাম দিচ্ছে সেইভাবে নিতে হচ্ছে খামারিদের। এ কারণে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি করেন। তার উপর গোখাদ্যের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এই অবস্থায় এক রকম দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দুধ উৎপাদনকারী খামারিরা। যদিও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, যশোরের শার্শায় মিল্কভিটার কালেকশন সেন্টার রয়েছে। এর বাইরে মণিরামপুরে আরও একটি মিল্ক কালেকশন সেন্টার নির্মাণের কাজ চলছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদুল হক জানিয়েছেন, যশোর জেলায় বছরে দুধের চাহিদা রয়েছে ২.৫২ লাখ মেট্রিকটন। এখানে উৎপাদন হয় ২.১৮ লাখ মেট্রিকটন দুধ। ঘাটতি রয়েছে ০.৩৪ মেট্রিকটন। নিয়মিত দুধ পান করার কারণ হিসেবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, এক লিটার দুধে গড়ে ৮১০ ক্যালরি শক্তি, ৩৫ গ্রাম আমিষ, ৪০ গ্রাম চর্বি, ৪০ গ্রাম শর্করা, ১.৫ গ্রাম ভিটামিন-মিনারেল ও ৮৫-৮৭ শতাংশ পানি থাকে। দুধে মানব দেহের জন্য দরকারি সবগুলো অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড রয়েছে। দুধের চর্বি সহজে হজম হয় এবং অন্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণে ভূমিকা রাখে। দুধের চর্বিতে ৪৯ শতাংশ পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড থাকে, যা কোলেস্টেরল ভাঙতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। দুধে কেজিন নামক আমিষের পরিমাণ বেশি, যা দাঁতের এনামেল থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ক্ষয়রোধ করে দাঁতকে শক্তিশালী ও মজবুত রাখে। দুধ উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। দুধে সামান্য গ্লুকোজ থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শ্রেষ্ঠ পানীয় এটি। দুধ দৈহিক ওজন কমাতে সাহায্য করে ও মাংসপেশীর গঠন উন্নত করে। দুধ স্তন ও মলের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। একজন মানুষের দৈনিক ১০০-১৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ৪০০ আইইউ ভিটামিন ডি দরকার, যা এক গ্লাস দুধে রয়েছে। যারা অনিদ্রায় ভোগেন তারা প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান করলে ঘুম ভালো হয়। নিয়মিত দুধ পানে রাতকানা, কর্নিয়াল আলসার ও অন্ধত্ব দূর হয় এবং নিয়মিত গরম দুধ পান করলে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ লাঘব হয়। এসব কারণে দুধ পানের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এদিকে, বুধবার জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে আয়োজিত দুগ্ধ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। তিনি বেলুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন। এরপর র‌্যালিতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন। সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদুল হক। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন যশোর ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিয়াজ মেহমুদ পাভেল ও খামারি নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির তুহিন। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ শামছুল আলম। গীতা পাঠ করেন স্বপন কুমার রায়। সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক এসএম আরিফ।দুগ্ধ দিবসের অনুষ্ঠানে আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের দুধ পান করানো হয়।

আরও খবর

🔝