মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৪ চৈত্র ১৪২৯
                
                
☗ হোম ➤ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল
ক্ষমতার অপব্যহার ও চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ
সাবেক মেয়র, সচিব ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার নামে মামলা
দেওয়ান মোর্শেদ আলম :
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:৩৫ এএম |
নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও পৌরসভার অর্থ আত্মসাৎ ঘটনায় বরখাস্ত যশোরের আলোচিত সাবেক পৌর সচিব আজমল হোসেন, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ও একই পৌরসভার বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহের সহকারী পরিচালক বজলুর রহমান মামলাটি করেছেন। এসব ব্যক্তি ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের উপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে জানানো হয়েছে। এর আগে দুদকের অপর একটি তদন্তে সাবেক পৌর সচিব আজমল হোসেনের বিরুদ্ধে ৩৮টি চেকের মাধ্যমে ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করার প্রমাণ পায়।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহে দায়ের হওয়া  মামলায় বলা হয়েছে, সাবেক পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, বরখাস্ত যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন এবং ঝিনাইদহ পৌরসভার বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন ও বরখাস্ত হিসাব রক্ষক মকলেচুর রহমান যোগসাজসে বিল ভাউচারের বিপরীতে চেকে অতিরিক্ত অংক বসিয়ে অতিরিক্ত টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। ঝিনাইদহ পৌরসভার  নামে পরিচালিত সোনালী ব্যাংক হিসাব থেকে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৯ টাকার বিপরীতে ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৯ টাকা লিখে উত্তোলন করে নেন। এই দুনীতি প্রমাণিত হওয়ায় দুদক প্রধান কার্যালয় ঢাকা এবং বিভাগীয় কার্যালয় খুলনা থেকে তাদের রিুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে, ঝিনাইদহের স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে মামলার প্রধান আসামি সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আরাফপুরে ইন্দিরা সড়কের বাসিন্দ, আজমল হোসেন যশোর উপশহরের সেক্টরের বাসিন্দা, আসাদুজ্জামান চাঁন ঝিনাইদহ বেড়বাড়ির গোলাম হোসেনের ছেলে, মোকলেচুর রহমান শৈলকুপার বড়দাহ গ্রামের অধিবাসী। তাদের বিরুদ্ধে ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/ ও ১০৯ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করেছেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনইদহের উপ-পরিচালক জাহিদ কামাল।
উল্লেখ্য, এর আগে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও পৌরসভার ৭৪ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় বরখাস্ত হন যশোর পৌরসভার সচিব (পরবর্তীতে নিবাহী কর্মকর্তা) আজমল হোসেন। এর আগে তাকে নড়াইলে বদলি করা হলেও তিনি যশোরে বহাল থাকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করেন। কিন্তু, তার সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। দুনীতি মামলায় দুদকের তদন্ত, স্থানীয় সরকার বিভাগের তদন্তসহ অন্যান্য কয়েকটি কমিটির তদন্তে ৩৮টি চেক তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তা করে।
২০১৮ সালের মার্চ মাসে ঝিনাইদহ পৌরসভা থেকে যশোর পৌরসভায় বদলি হয়ে আসেন আজমল হোসেন। যোগদানের পর থেকে তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে কাউন্সিলররা দাবি করেন। তাদের অভিযোগ ভুয়া বিল ভাউচার বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানাবিধ আর্থিক দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে অরাজক পরিবেশ তৈরি করেন যশোর পৌরসভায়। এ ঘটনায় পৌর কাউন্সিলররাা একাট্ট্রা হয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণলায়ে আজমলের হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পৌরসভার স্বার্থে তাকে দ্রুত প্রত্যাহারের ব্যাপারে তারা আবেদনও করেন। এছাড়া বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর কাছেও কয়েক দফা অভিযোগ আকারে জানান তারা। এক পর্যায়ে গত ৮ আগস্ট মন্ত্রণালয় থেকে বদলি আদেশ আসে আজমল হোসেনের।  আর ওই আদেশের পর ১০ আগস্ট যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণী খান পলাশ তাকে ছাড়পত্র দেন। কিন্তু, তিনি নড়াইল পৌরসভায় যোগদান না করে যশোরে বহাল থাকার জন্য নানামুখী তদবির চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এদিকে, একই সময়ে সামনে আসে চার বছর আগে যশোরে যোগদানের আগে আজমল হোসেন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা থাকার সময় বিভিন্ন সময়ের দুর্নীতি। তার বিরুদ্ধে ৩৮টি চেকের মাধ্যমে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয়। যা দুদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তদন্তে প্রমাণিত হয়। ওই অর্থ আত্মসাৎ কার্যকলাপ পৌরসভা কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ১৯৯২ এর বিধি ৪০ (খ) ও (চ) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ উল্লেখ করে প্রজ্ঞান জারি করে মন্ত্রণালয়।
এর আগে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আব্দুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পৌরসভা কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ১৯৯২ এর বিধি ৪৬ (১) অনুযায়ী বিধি ৪০ বা ৪১ এর অধিনে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের দায়ে গুরুদণ্ড প্রদানের সম্ভাবনা থাকলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় বা সমীচীন মনে করলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে। আজমলে হোসেনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত অভিযোগের দায়ে গুরুদণ্ড প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সরকার মনে করে। এ কারণে পৌরসভা কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ১৯৯২ এর বিধি ৪৬ (১) অনুযায়ী আজমল হোসেনকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।



গ্রামের কাগজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


সর্বশেষ সংবাদ
পাঠান এবং বাঙালিদের প্রশংসা করলেন শোয়েব
আবাহনীর সামনে দাঁড়াতেই পারলো না লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জ
পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ৪ এপ্রিল
এবার পেলে-ম্যারাডোনার পাশে মেসি
চুয়াডাঙ্গায় এক দিনের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মিলবে ড্রাইভিং লাইসেন্স
বাগেরহাটে ইটের বিকল্প হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব কংক্রিট ব্লক
মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠছে ইসির আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
আদালত চত্বরে তুলকালাম, ব্যারিস্টারকে নিয়ে গেল পুলিশ
ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কিশোরীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করাতেন আরাভ
৩০ মার্চ পরীক্ষামূলক রেল চলবে পদ্মা সেতুতে
সংশোধন হচ্ছে মোটরসাইকেল নীতি
চাঁদা না পেয়ে সিকিউরিটি গার্ডকে ছুরিকাঘাত
দুই ঘণ্টার বৈঠকে ইসি আহসান হাবিব ও মেয়র জাহাঙ্গীর
রনির প্রথম ফিফটি, রানপাহাড়ের পথে বাংলাদেশ
আমাদের পথচলা | কাগজ পরিবার | প্রতিনিধিদের তথ্য | অন-লাইন প্রতিনিধিদের তথ্য | স্মৃতির এ্যালবাম
সম্পাদক ও প্রকাশক : মবিনুল ইসলাম মবিন | সহযোগী সম্পাদক : আঞ্জুমানারা
পোস্ট অফিসপাড়া, যশোর, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ০২৪৭৭৭৬২১৮২, ০২৪৭৭৭৬২১৮০, ০২৪৭৭৭৬২১৮১, ০২৪৭৭৭৬২১৮৩ বিজ্ঞাপন : ০২৪৭৭৭৬২১৮৪, ই-মেইল : [email protected], [email protected]
কপিরাইট © গ্রামের কাগজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft