প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর , ২০২২, ০৮:১৪:১৪ পিএম
যশোরের হাসিমপুরে বছরের পর বছর একটি চিহ্নিত গাঁজা ও ইয়াবা বিকিকিনি সিন্ডিকেট অপ্রতিরোধ্য স্টাইলে কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় মৃত শফি মিয়া নায়েবের বাঁশ বাগান, পুকুর পাড় ও সন্ধ্যায় পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে এই চক্রের আস্তানা। প্রকাশ্যে এই কারবার চললেও স্থানীয় ইছালী ফাঁড়ির কয়েক অফিসারের নিরবতার কারণে চক্রটি এখন আরো বেপরোয়া। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বিকিকিনি। বুদ হচ্ছে ওই এলাকার ছাত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন শেণি-পেশার মানুষ। এ ব্যাপারে জোরালো অভিযান দাবি করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগী অভিভাবকেরা। যশোরের শহরতলী হাসিমপুর এলাকায় কয়েকটি শক্তিশালী অপরাধী চক্রের ঘাঁটি অনেক আগে থেকে। এখানে আছে অস্ত্রবাজ, চাঁদাবাজ, এমনকি খুনের আসামিসহ বিভিন্ন ভার্সনের অপরাধী। চুরি, ছিনতাই, ব্লাকমেইলিং চক্রও আছে এখানে। ওই এলাকায় প্রায় খুনের ঘটনা ঘটে। খুনী চক্র আটকও হয়েছে। অনেক অপরাধী গা ঢাকাও দিয়েছে আটক এড়াতে। তবে ওই এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারীরা রয়েছে বহাল তবিয়তে। এলাকার ইউসুফ ওরফে গাঁজা ইউসুফের পথ ধরে এখন ইয়াবা গাঁজা সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে ইমদাদ হোসেন, ফাফরুল্লাহসহ এক ডজনের একটি চক্র। এদের মধ্যে স্থানীয়দের অব্যাহত অভিযোগের মুখে পুলিশের একটি টিম আটক করেছে হাসিমপুরের মুদি দোকানী নুর ইসলামকে। দোকানীর লেবাসে গাঁজা সিন্ডিকেট চালানো নুর ইসলাম আটক হলেও বহাল তবিয়তে ব্যবসা করছে ইমদাদ ও জাফরুল্লাসহ আরো ১০ জনের সিন্ডিকেট।চক্রটি হাসিমপুরের মৃত নায়েব শফি মিয়ার বাঁশ বাগান ও তার পুকুর পাড়ে অবস্থান নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। তাদের আস্তানায় বুদ হচ্ছে শহর থেকে মোটরসাইকেলযোগে যাওয়া অনেকে। স্থানীয় উঠতি যুবক, এমনকি অনেক ছাত্রও বুদ হচ্ছে ওই ডেরাগুলোতে গিয়ে। অবস্থা এতটাই বেগতিক যে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চক্রটির একটি অংশ হাসিমপুর স্কুলের প্রাচিল টপকে গিয়ে কারবার চালাচ্ছে, নেশায় বুদ হচ্ছে। এছাড়া চক্রটি হাসিমপুরের সেলফি মোড়ে গিয়েও ব্যবসা করছে। ওই চক্রের লোকজন যশোর শহরের কাজীপাড়া, বারান্দীপাড়া ও রেল স্টেশন এলাকার কয়েকজন চিহ্নিত ডিলারের কাছ থেকে মাল নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন বিতর্কিত উঠতি রাজনৈতিক নেতার সেল্টারে ও ইছালী ফাঁড়ি পুলিশকে ম্যানেজ করে ওই মাদক কারবার চালাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এর আগে ইমদাদ ও জাফরুল্লাহকে ফাঁড়ি পুলিশ আটক করলেও তাদের ছেড়ে দেয়। অনৈতিক লেনদেনে সন্তুষ্ট হয়ে ফাঁড়ি পুলিশ নিরবতা পালন করে আসছে। উল্লেখিত মাদক কারবারী ছাড়াও সরসরি রাজনীতির সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসা করছে। আবার তারা ফাঁড়ি পুলিশের সাথে সখ্যতা রেখে চলছে বলেও অভিযোগ। চক্রটি মাদক সিন্ডিকেট পরিচালনার জন্য শফি মিয়ার বাগানকে আস্তানা বা ডেরা বানানোর কারণে হাসিমপুর মধ্যপাড়ার পরিবেশ চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। ওই এলাকার স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্ররা বুদ হচ্ছে। তাদের অনৈতিক কারবারে বাধা দিলে তারা নানা হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ। এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ভূমিকা রেখে চলছে। ওই এলাকা থেকে এর আগেও মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়েছে, মামলা হয়েছে। যশোর সদরের সব এলাকাতেই কোতোয়ালি পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে। কারো ছাড় দেয়া হবে না। ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। আটক করা হবে মাদক সংশ্লিষ্টদের।